ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনে ডিএসসিসির টোল হলো দ্বিগুণ

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ৯ জুলাই ২০২০

যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনে ডিএসসিসির টোল হলো দ্বিগুণ

রাজন ভট্টাচার্য ॥ রাজধানীর গুলিস্তান-জয়কালী মন্দির, গোলাপবাগ-মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকা থেকে চলাচলকারী বাস এবং যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনের ইজারা দ্বিগুণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। পরিবহন মালিকরা বলছেন, এসব এলাকা থেকে প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রায় সহ¯্রাধিক যানবাহন ছেড়ে যায়। টার্মিনালের সুবিধা না পেলেও রাস্তা ব্যবহারের কারণে তারা নিয়মিত ইজারা দিয়ে আসছিলেন। গত ৩০ জুন থেকে ইজারা দ্বিগুণ করা হয়েছে। বর্ধিত টোলের বাইরে ইজারাদাররা গাড়ি প্রতি আদায় করছেন বাড়তি ২০ টাকা। করোনাকালে যাত্রী সঙ্কট হওয়ায় ইজারা কমাতে ৪১টি পরিবহন কোম্পানির পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর। দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৮ বছর ধরে ইজারার পরিমাণ ছিল ২০ টাকা। সময়ের কারণে সবকিছু বেড়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ব্যয়ও বেড়েছে তুলনামূলক অনেক বেশি। তাই এ বিষয়ে একটি জরিপ চালানো হয়। জরিপ কমিটির সুপারিশে ইজারার টাকা বাড়ানো হয়েছে। তবে বর্ধিত টোল বন্ধের জন্য মালিক সমিতির আবেদন নিয়ে এখন কোন আলোচনা হয়নি। রাজধানীর গুলিস্তান, জয়কালী মন্দির মতিঝিল, গোলাপবাগ মোড়সহ আশপাশের এলাকায় নির্ধারিত কোন বাস টার্মিনাল নেই। অথচ এসব এলাকা থেকে রাজধানীসহ আন্তঃজেলা রুটের বাস, লেগুনাসহ পণ্যবাহী পরিবহন চলছে অহরহ। ফুলবাড়িয়ায় যে টার্মিনালটি রয়েছে এর একটি বড় অংশ ব্যবহার করে বিআরটিসি। জায়গা কম হওয়ার কারণে এলাকার সব বাসই রাস্তায় রাখা হয়। রাস্তা থেকেই যাত্রী ও মালামাল তুলে বিভিন্ন গন্তব্যের যাতায়াত করছে পরিবহন। অর্থাৎ রাস্তাকেই টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে ভোগান্তিও অভিযোগও রয়েছে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমরা ২০ বছর ধরে একটি নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। এ নিয়ে সিটি কর্তৃপক্ষকে কখনও আনুষ্ঠানিক কখনও অনানুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু জমি সঙ্কটের কারণে মূলত টার্মিনাল নির্মাণ সম্ভব হয় না। অথচ সিটি কর্পোরেশনের কোনরকম সেবা ছাড়াই দিতে হচ্ছে ইজারার টাকা। সিটি কর্তৃপক্ষ বলছে, আইনের বাইরে তারা কিছুই করছেন না। বাস মালিকরা কর্পোরেশনের জায়গা ব্যবহার করছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে টাকা নিচ্ছেন তারা। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, টোল বাড়ানোর জন্য গঠিত সুপারিশ কমিটির রিপোর্ট দেয়ার পর ৩০ জুন থেকে তা কার্যকর করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটির মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুলিস্তান, জয়কালী মন্দির, সায়েদাবাদ স্টপওভার সংশ্লিষ্ট যানবাহন থেকে ৩০ জুন থেকে টোল পুনর্নির্ধারণ করা হলো। বাস ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়। মিনিবাস ২০ থেকে ৪০ টাকা। সিএনজি, অটোরিক্সা, টেম্পো ও নাভানা মেক্সি ৫ থেকে ১০ টাকা, পিক-আপ ও লেগুনা ৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্ধিত টোল আদায় বন্ধে গত ৬ জুলাই দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ৪১টি বাস কোম্পানির মালিক। গাজীপুর পরিবহন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামদানী খন্দকার বলেন, ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে গণপরিবহনের আয় কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি গণপরিবহন ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন করে। ফলে দীর্ঘ সময় গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজনের কোন আয় ছিল না। মালিকরা যেমন ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারছিলেন না তেমনি শ্রমিকরা ছিলেন অর্থকষ্টে।
×