ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় জীবন রক্ষাকারী প্রথম ওষুধ আবিষ্কার দাবি

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ১৭ জুন ২০২০

করোনায় জীবন রক্ষাকারী প্রথম ওষুধ আবিষ্কার দাবি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনায় জীবন রক্ষাকারী প্রথম একটি সস্তা এবং ব্যাপক সহজলভ্য ওষুধ পাওয়া গেছে। ডেক্সামেথাসোন নামের এই ওষুধটি করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করে। ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা করোনার চিকিৎসায় এই ওষুধটি বড় ধরনের সাফল্য দেখিয়েছে বলে দাবি করেছেন। খবর ওয়েবসাইটের। তারা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন; তাদের মৃত্যুর হার এক পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে। বিশ্বে বিদ্যমান চিকিৎসা ব্যবস্থা করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কাজ করে কিনা, তা জানতে এই ওষুধটি নিয়েও বিশ্বজুড়ে বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা চালানো হয়। গবেষকদের ধারণা, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে দেশটিতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত। কারণ এটা অনেক স্বস্তা। কোভিড-১৯ এর প্রচুর রোগী নিয়ে লড়াইরত বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর জন্যও বিশাল উপকারে আসতে পারত ওষুধটি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এই ওষুধটি সেবন করেছেন এমন প্রত্যেক ২০ জনের মধ্যে ১৯ জনই হাসপাতালে না গিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন- তাদের বেশিরভাগই সুস্থ হয়েছেন। তবে কারও কারও জন্য অক্সিজেন এবং ভেন্টিলেশনের দরকার হয়েছিল। বাংলাদেশেও ব্যবহার হচ্ছে করোনার প্রথম ‘জীবন রক্ষাকারী’ ওষুধ ডেক্সামেথাসোন ॥ করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগে যুগান্তকারী ফলাফল পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। ওষুধটি বাংলাদেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্যাপকভাবে সস্তা ও সহজলভ্য এ ওষুধটি কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জীবন বাঁচাতে পারে। ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগ করলে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা ও অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি কমায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্টিন ল্যানড্রে বলেন, কৃত্রিম অক্সিজেনের সাহায্য লাগছে বা ভেন্টিলেটরে রয়েছে এমন করোনা রোগীদের দেহে এ ওষুধ প্রয়োগ করে দেখা গেছে, তাদের এক তৃতীয়াংশ প্রাণ বেঁচে যাচ্ছে এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এ ওষুধের খরচও খুব বেশি নয়। কোন ধরনের সংক্রমণ কমানোর জন্য এ ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। মার্টিন ল্যানড্রে ও পিটার হরবি এ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করছেন। দ্বিতীয়জন বলেন, এত উল্লেখযোগ্যভাবে মৃত্যুর হার কমাতে এর আগে দেখা যায়নি, যা এ স্টেরয়েডের ওষুধটি করে দেখাল। দুই বিশেষজ্ঞই ডেক্সামেথাসোনকে প্রতিটি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্রণীত জাতীয় নির্দেশিকায় ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগের কথা বলা আছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারী- বেসরকারী করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাসপাতালে এ ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলও ভাল পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান সীতেশ চন্দ্র বাছার গণমাধ্যমকে বলেন, ওষুধটি বাংলাদেশে সুলভ মূল্যে বড় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই তৈরি করছে বহু বছর ধরে।
×