ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মীর অফিসে থাকা মানা

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ২ জুন ২০২০

একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মীর অফিসে থাকা মানা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে লকডাউন তুলে অফিস খুলে দেয়া হলেও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সরকারী দফতরগুলোতে একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে অবস্থান করতে নিষেধ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, কর্মকর্তারা যেন কোনভাবেই সংক্রমিত না হন, সেটি আমাদের প্রথম লক্ষ্য। সেজন্য ন্যূনতম সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় কাজগুলো করব। সেজন্য আমরা চাই একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা কখনোই অফিসে থাকবেন না। ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা ঘরে বসে ভার্চুয়ালি অফিস করতে পারবেন। তার মানে হলো একসঙ্গে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তা সব সময়ই কানেকটেড থাকছেন। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে চলা টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর রবিবার থেকে সীমিত পরিসরে অফিস খোলার পাশাপাশি গণপরিবহনও চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এই সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে অনুসরণের পাশাপাশি সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে অফিসে আসতে বলা হয়েছে। তবে বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা মানা। রবিবার প্রথম দিন অফিসে এসে কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে কিছুটা ভয় নিয়েই তারা অফিস করছেন। তবে সবাইকেই অফিসে আসতে হবে কি না, সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা তখন ছিল না। রবি ও সোমবার দুই দিনের সীমিত পরিসরের অফিস করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফরহাদ বলেন, অনেক কর্মকর্তা ‘অযথাই’ অফিসে চলে আসছেন। সেক্ষেত্রে সবার জন্যই ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা চাই না কোন কর্মকর্তা অপ্রয়োজনে অফিসে আসুক। কর্মকর্তাদের সুরক্ষার জন্য আমরা এই ব্যবস্থা করতে চাচ্ছি। একসঙ্গে আমরা ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ কর্মস্থলে রাখতে চাচ্ছি না। যারা অসুস্থ তারা একেবারেই অফিসে আসবেন না। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকাল ৯টায় অফিসে এসে কেউ যদি দুই ঘণ্টায় কাজ শেষ করতে পারেন, তাহলে কাজ শেষেই তিনি চলে যাবেন। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটির জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে না। কেউ বেলা ১১টায় অফিস থেকে চলে গেলে ওই দফতরে তার জায়গায় অন্য কেউ অফিসে আসতে পাববেন। অফিসে কোন কারণে যদি ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তার উপস্থিতির প্রয়োজন হয়, তাহলে কী করতে হবে সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। যদি আরও বেশি কর্মকর্তার অফিসে উপস্থিতির প্রয়োজন হয়, তাহলে সকাল ৯টায় যারা অফিসে আসবেন তারা কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর অন্যরা অফিসে আসতে পারবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিসে থাকা বাধ্যতামূলক নয় জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা এটাকে আর ম্যান্ডেটরি রাখছি না। কারণ এখন তো অত কাজ নেই। রাষ্ট্র পরিচালনায় জরুরী কাজগুলোই এখন করা হবে। আমরা আস্তে আস্তে ওপেন হচ্ছি। তিনি জানান, বিভিন্ন সরকারী দফতরে কে কোন সময় অফিস করবেন তা ওই দফতর থেকেই ঠিক করে দেয়া হবে, কারণ প্রত্যেক ডেস্কেই ৪-৫ জন করে কর্মকর্তা আছেন। ফরহাদ জানান, রবিবার প্রথম দিন অফিস করার পর কোন মন্ত্রণালয় বা সরকারী দফতর থেকে কোন সমস্যার কথা জানানো হয়নি। তবে কেউ কেউ অপ্রয়োজনে চলে এসেছে। ট্রায়াল এ্যান্ড এরর প্র্যাকটিস হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে আমরা একটি আদর্শ জায়গায় নিয়ে যাব। এটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত আকারে হবে। আমরা চাই কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী যেন আক্রান্ত না হন, তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ফরহাদ বলেন, অসুস্থরা চাইলে এই সময় বাসায় থেকে অফিস করতে পারবেন। এর বাইরে প্রয়োজন হলে ভার্চুয়াল অফিস সবাই করতে পারবেন। এখন সবাইকে ই-ফাইলিংয়ে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে। ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারী চাকরিতে বহাল থাকা যায় বলে এই বয়সীদের খুব বেশি বয়স্ক হিসেবে দেখছেন না জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। ফলে কোন বয়সের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসবেন না সে বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছে না।
×