ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না

বরিশালে ত্রাণের চাল নিয়ে চালবাজি

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ এপ্রিল ২০২০

  বরিশালে ত্রাণের চাল নিয়ে চালবাজি

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দী মানুষের জন্য সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। সরকারের ত্রাণ কিংবা যে কোন সহায়তা বাস্তবায়ন করতে হলে তালিকা প্রস্তুত থেকে শুরু করে বিতরণ কার্যক্রমে বড় ভূমিকা পালন করেন সরকারের তৃণমূলের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। করোনার আতঙ্কের প্রেক্ষাপটে সরকার উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে চাল বিতরণে অনিয়ম কিংবা চাল চুরির খবর বেরিয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের এই অনিয়ম মুহুর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে। ত্রাণের চাল নিয়ে চালবাজির এই ধারাবাহিকতায় বরিশালের একজন ইউপি চেয়ারম্যান ও দুইজন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত, একজনের বিরুদ্ধে মামলা ও দুইজন আওয়ামী লীগ নেতাকে কারাদ-ও দেয়া হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম ও ইউপি সদস্যরা হলের বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়াডের্র সদস্য জাকির হোসেন এবং ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য রোকনুজ্জামান রোকন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা জেলেদের চাল আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও গত ১৫ এপ্রিল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার স্টিমারঘাট এলাকার একটি গোডাউন থেকে সরকারী চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ১৮৪ বস্তা চাল উদ্ধারের পর চরম হতাশা বিরাজ করছে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের প্রায় ৭০ জন জেলে পরিবারের মাঝে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে তারা জরুরী ভিত্তিতে তাদের প্রতিজনের জন্য বরাদ্দকৃত ৮০ কেজি করে চাল পেতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তালিকাভুক্ত জেলে কবির হোসেন, নান্নু মিয়া, ইউনুস মোল্লা, জাকির সরদার, হাসেম বেপারি, ইসমাইল সরদারসহ একাধিক জেলেরা সাংবাদিকদের কাছে জানান, ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত তাদের কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন। ফলে সুবিধাভোগীদের সুবিধার্থে জেলেদের জন্য সরকারীভাবে চাল বরাদ্দের পর থেকে অতীতের চেয়ারম্যানরাও স্টীমারঘাট বাজারে গোডাউন ভাড়া করে সেখানে চাল রেখে উল্লেখিত ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী ২৯৯ জন জেলের মধ্যে বিতরণ করে আসছিল। ফলে তাদের (জেলে) কস্ট অনেকটা লাঘব হতো। জেলেরা আরও জানান, অতীতের চেয়ারম্যানদের ধারাবাহিকতায় বর্তমান চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারিও ওই গোডাউনে চাল রেখে তাদের (সুবিধাভোগী) মধ্যে চাল বিতরণ করে আসছিল। ইতোমধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অধিকাংশ সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাকি থাকা ৭০ জেলের মধ্যে বিতরণের জন্য রাখা চাল আইন প্রয়োগকারী সদস্যরা স্টিমারঘাট এলাকায় গোডাউন থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধার করা ১৮৪ বস্তা চাল থানায় নেয়ার পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরে আলম বেপারি সাংবাদিকদের বলেন, সুবিধাভোগী জেলেদের কস্ট লাঘব করতে অতীতের চেয়ারম্যানদের ন্যায় আমিও স্টিমারঘাট বাজারের গোডাউনে চাল রেখে বিতরণ করেছি। এখানে চাল আত্মসাতের কোন বিষয় নেই। যা সঠিকভাবে তদন্ত করলে সুবিধাভোগীদের বক্তব্যেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিপক্ষের লোকজনে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমি এ ঘটনায় প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদন্ত করার জন্য জোর দাবি করছি। জেলার গৌরনদী উপজেলার একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, তাদের কাছ থেকে চাল উত্তোলনের বরাদ্দপত্রে (ডিও) স্বাক্ষর নেয়া হলেও তারা চাল হাতে পাচ্ছেন না। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তাদের কাছে চাল বিতরণের মাস্টাররোল চাইলে তারা কিছুই দেখাতে পারবেন না। জেলার একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে সরকারী কর্মকর্তা ট্যাগ অফিসার হিসেবে নিয়োজিত থাকেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের সচিবও সর্বক্ষণিক পরিষদের কাজগুলো মনিটরিং করেন। সেক্ষেত্রে চাল বিতরণে অনিয়ম কিংবা আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে সচিব ও সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারেরও দায়বদ্ধতা থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় শুধু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের চাল চোর হিসেবে টার্গেট করা হচ্ছে। তারা আরও জানান, অনেক সময় বরাদ্দের চেয়ে সুবিধাভোগী বেশি থাকেন। সেক্ষেত্রে তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে চাল বণ্টন করে থাকেন। যা কখনই ফলাও হয় না। এছাড়া জনগণের সুবিধার্থে ইউনিয়নের যে কোন স্থানে বসে চাল বিতরণ করার নিয়ম রয়েছে। তারা আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি চাল উদ্ধারের ঘটনাগুলোতে ঢালাওভাবে জনপ্রতিনিধিদের যে হারে চাল চোর হিসেবে শনাক্ত করা হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে ত্রাণ বিতরণে নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন জনপ্রতিনিধিরা। সূত্র মতে, বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ইউসুফ আলীর গোডাউন থেকে ২৫৬ বস্তা সরকারী ‘কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচী’ (কাবিখার) চাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটককৃত ইউসুফ আলীকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ জানান, সরকারী বরাদ্দের চাল ক্রয় বিক্রয় আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় ইউসুফ আলীকে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউসুফ আলী ওই চাল ক্রয় করার অপরাধে দন্ডিত হলেও বিক্রেতা রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় যেসব শ্রমিক কাজ করেন তারা কখনই চাল গ্রহণ করেন না। তাই ওই চালের ডিও বিক্রি করার পর শ্রমিকদের মধ্যে টাকা বিতরণ করা হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা জেনেও এখন না জানার ভান করছেন। একইভাবে গত ১৪ এপ্রিল সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ৫৪ বস্তা চাল কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগে জেলার গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই বাজারের ডিলার ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি প্রদীপ দত্ত এবং চাল ক্রেতা মুদি ব্যবসায়ী পঙ্কজ সাহাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয়মাসের কারাদন্ড ও উভয়কে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। সেখানে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না ॥ করোনায় খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশনায় গত ১৫ দিন থেকে নিজ অর্থায়নে বরিশালের কৃতি সন্তান বৃহত্তর মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সস্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার রানা হতদরিদ্র, কর্মহীন ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি প্রতিদিন ২০০ পরিবারের মাঝে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে আসছেন। পবিত্র রমজান উপলক্ষে সোহেল শাহরিয়ার রানার নিজস্ব অর্থায়নে গত ২২ এপ্রিল ঢাকার কলাবাগান, ঝিগাতলা, বাংলামোটর, মগবাজার, বনশ্রী, কমলাপুর, শাহজাহানপুর, সিপাহীবাগ, বাসাবো, মুগদাপাড়া, মানিকনগর, গোড়ানসহ বিভিন্ন এলাকার চারশতাধিক মানুষের বাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়া রমজান মাসে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টের মানুষ যাতে বিনামূল্যে সবজি সংগ্রহ করতে পারেন তিনি সে ব্যবস্থাও করেছেন। রাজধানীর যে কোন প্রান্ত থেকে অসহায় যে কেউ যোগাযোগ করলেই কয়েকটি টিমের মাধ্যমে তাদের বাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন সোহেল শাহরিয়ার। এছাড়া তিনি প্রতিদিন সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। সেহেল শাহরিয়ার রানা বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন মানুষ যেন না খেয়ে থাকে সে জন্যই আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকদের নির্দেশনায় কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোঁটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, মধ্যবিত্ত কিছু পরিবার রয়েছে যারা খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়াতে পারছেন না। তাদের ফোন কল বা মেসেজ পেলেই রাতের আঁধারে আমার টিম তাদের বাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থান ॥ সরকারী বরাদ্দের খাদ্যসামগ্রী ও চাল বিতরণে অনিয়ম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বৃহত্তর বরিশালের কাঁঠালিয়ার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি। অনিয়ম ঠেকাতে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা শতভাগ সফল করার জন্য দিন-রাত সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন, থানার অফিসার ইনচার্জ পুলক চন্দ্র রায়, খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ জব্বার। যেখানেই অনিয়ম সেখানেই কঠোর অবস্থান। এমাদুল হক মনির বলেন, করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। আমরা সবাই যদি সচেতন হই তাহলে আমরা করোনা থেকে রক্ষা পাব। বিভিন্ন কারণে আমরা মাঝে মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়ি। করোনাভাইরাসও একটি দুর্যোগ। এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের ঘরে থাকতে হবে। ঘরে থাকার উপহার হিসেবে বাড়ির দরজায় সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। করোনার বিস্তাররোধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন কাঠালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ পুলক চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত উপজেলার বাজারগুলোর দোকানপাট বন্ধ রাখতে ও সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও কাঠালিয়া থানা পুলিশের উদ্যোগে কর্মহীনদের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। শৌলজালিয়া ইউনিয়নের সাধারণ জনগণকে করোনা থেকে রক্ষা করতে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মাহমুদ হোসেন রিপন শুরু থেকে অদ্যবধি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি কর্মহীনদের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। শৌলজালিয়া ইউনিয়নে ঢাকাসহ এলাকার বাহির থেকে যারা আসছে তিনি তা খুঁজে বের করে প্রতিটি বাড়িতে লাল নিশান দিয়ে লকডাউন ঘোষণা করছেন। আওরাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিটন নকীব ও ইউপি সদস্য ওলিউর রহমান মুন্সি, বিনয় বড়াল করোনা প্রতিরোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চাল বিতরণসহ কর্মহীনদের মাঝে সুষ্ঠভাবে খাদ্যসামগ্রী ও চাল বিতরণ করে আসছেন। প্রতিবন্ধীদের পাশে সরকারী কর্মকর্তা ॥ নগরীর প্রতিবন্ধী শিশু ও অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বরিশাল উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনারের কার্যালয়ের (ডিএলআরসি অফিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। গত ২২ এপ্রিল উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার (ডিএলআরসি) তরফদার মোঃ আক্তার জামীলের নেতৃত্বে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিজস্ব অর্থায়নে নগরীর কাউনিয়া, শিশুপার্ক কলোনী, চরমোনাই খেয়াঘাট কলোনী ও রসুলপুর এলাকার প্রতিবন্ধী শিশু পরিবারের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। একইদিন আসন্ন রমজান উপলক্ষে করোনার প্রভাবে সরকারের নির্দেশে ঘরে থাকা নিম্ন আয়ের দিনমজুর শতাধিক পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল, ছোলা, আলু বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণে বৈষম্য ॥ এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দী নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করছেন সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় গৌরনদী উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলার সাত ইউনিয়নে মাত্র ৯০৫টি পরিবার এবং পৌর এলাকায় ১ হাজার ৪৯৫টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি আলু ও ২ কেজি ডাল বিতরণ করা হয়েছে। অনেক পরিবারকে এক লিটার করে তেলও দেয়া হয়েছে। একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, একটি পৌরসভার চেয়ে সাত ইউনিয়নে জনসংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়াও পৌর এলাকার চেয়ে গ্রামে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেশি বসবাস করে। এমনকি গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোর দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপদের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত পৌর এলাকায় বেশি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সরকারী সহায়তা ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমভাবে বণ্টনের জন্য তারা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×