ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় অবরুদ্ধ

মালয়েশিয়ায় কেমন আছে ৬ লাখ বাংলাদেশী

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২৮ মার্চ ২০২০

 মালয়েশিয়ায় কেমন আছে ৬ লাখ  বাংলাদেশী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়াও করোনাভাইরাসে অবরুদ্ধ। দেশটিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। ১৮ মার্চ থেকে লকডাউনে আছে দেশটি। ফলে দেশটির জনগণের পাশাপাশি বাসায় বসে অবরুদ্ধ দিন কাটাচ্ছেন প্রায় ছয় লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী। এখনও পর্যন্ত সুস্থ আছেন প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকরা। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরাদ দিয়ে মালয়েশিয়ার পত্রিকায় সংবাদে দেখা যায় আজ পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সবাই মালয়েশিয়া নাগরিক। খবর বিডিনিউজের। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সেলর-২ মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম ম-লের কাছে দেশটিতে কোন বাংলাদেশী নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মালয়েশিয়া ওয়েবসাইটের বরাদ দিয়ে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় আক্রান্তদের নাগরিকত্ব হিসেবে মালয়েশিয়া দেখানো হয়েছে সবাইকে। তার মানে এখনও মালয়েশিয়ায় অন্য দেশের কেউ আক্রান্ত হয়নি।’ মালয়েশিয়ায় প্রথম দফায় লকডাউন ঘোষণা করা হয় ১৮ থেকে ৩১ মার্চ। পরে সরকারের এক ঘোষণায় লকডাউনের সময় বাড়ানো হয়েছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। লকডাউন অবস্থায় কেমন আছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানতে চেয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা একাধিক বাংলাদেশীর সঙ্গে। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা কোতারায়ার বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতা রাশেদ বাদল। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের পর থেকে কোতারায়ায় বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। শুধু কয়েকটা শাকসবজি ও মুদির দোকান খোলা আছে। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশীরা ভাল আছেন। লকডাউনের কারণে কারো খাওয়া-দাওয়ার কোন সমস্যা হচ্ছে এমন খবর এখনও আমরা পাইনি। সামনের দিনগুলোতে কী হবে বলা যাচ্ছে না। আমরা ফোনে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়মিত খবরাখবর নিচ্ছি।’ সবজি বাগানের কাজ সীমিত আকারে আর মুদির দোকানের কাজ ছাড়া বাকি সব কাজ এ লকডাউনে বন্ধ আছে বলে জানান রাশেদ বাদল। তিনি বলেন, ‘আমরা ফোনে, ফেসবুক গ্রুপ ও হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে লকডাউনে মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য প্রবাসীদের সচেতন করছি।’ কোতা দামানসারা এলাকায় আসবাবপত্র বিক্রয়কেন্দ্রের সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, ১৮ মার্চ থেকে গৃহবন্দী আছেন তিনিসহ ওই এলাকায় (দামানসারা) কর্মরত কয়েক হাজার বাংলাদেশী। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচাবাজার করতে তারা মাঝে মাঝে নিকটস্থ সুপারমার্কেটে যান দুই-একজন। একসঙ্গে কয়েকজন বের হলে পুলিশ বা সেনা সদস্যদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তবে খাওয়া-দাওয়ায় কোন সমস্যা হচ্ছে না। তার মালিক লকডাউন সময়ের বেতন দিবেন কিনা এখনও জানেন না তিনি। তবে খাওয়া খরচের টাকা দেন বলে জানান সাহাবউদ্দিন। বগুড়ার গোলাম মোরশেদ থাকেন শিল্পকারখানা অধ্যুষিত তামিং জায়া এলাকায়। তিনিও জানালেন ১৮ তারিখ থেকে সেখানে সব বাংলাদেশী কর্মী বাসায় অবস্থান করছেন। সেখানে শাকসবজি, মাছ-মাংস ও মুদির দোকান খোলা আছে। এসব দোকানে কেনাকাটা করার প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হন না। পেরাক প্রদেশের শ্রি রায়া একালায় কাজ করেন জোটন দাস। তিনি জানান, পেরাকের এ এলাকায় শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন কাজ করেন বিশ-পঞ্চাশ হাজার বাংলাদেশী। তাদের সামাজিক সংগঠন ‘প্রবাসী পরিবার ঐক্য পরিষদ’ এর সদস্যরা বাংলাদেশীদের খবরাখবর নিচ্ছেন। সেখানে সবাই এখন যার-যার বাসায় সময় কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা শাকসবজি, মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হোম ডেলিভারি দিচ্ছেন বাংলাদেশী প্রবাসীদের বাসায় বাসায়।
×