ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আত্মবিশ্বাসী টেরেঙ্গানুর সামনে উজ্জীবিত মোহনবাগান

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

আত্মবিশ্বাসী টেরেঙ্গানুর সামনে উজ্জীবিত মোহনবাগান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দাপট দেখিয়ে গ্রুপ পর্বে করেছে সবচেয়ে বেশি ৯ গোল। আসরে এখন পর্যন্ত হওয়া দু’টি হ্যাটট্রিকও তাদের। এত কীর্তির সাথে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে টেরেঙ্গানু এফসি। যে কারণে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর মালয়েশিয়ান ক্লাবটি। অন্যদিকে শুরুটা হার দিয়ে হলেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চের টিকেট কেটেছে মোহানবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব। এই যাত্রায় কলকাতার ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি হারিয়েছে স্বাগতিক ও আসরের অন্যতম হট ফেবারিট চট্টগ্রাম আবাহনীকে। যে কারণেও কলকাতার জায়ান্টরাও এখন উজ্জীবিত। আত্মবিশ্বাসী ও উজ্জীবিত দল দু’টি কাল শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে হাইভোল্টেজ এ দ্বৈরথ শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। ‘এ’ গ্রুপে লাওসের ক্লাব ইয়ং এলিফ্যান্টের কাছে ২-১ গোলে হেরে মিশন শুরু করে মোহনবাগান। এরপর মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ২০১৪-১৫ মৌসুমে ভারতের আই লীগের চ্যাম্পিয়নরা। শেষ গ্রুপ ম্যাচটি ছিল তাদের জন্য বাঁচামরার। এ লড়াইয়ে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারায় ১-০ গোলে। শুরুটা ভাল না হলেও দলের ধারাবাহিক উন্নতিতে খুশি মোহানবাগান কোচ জোশে অ্যান্টোনিও ভিকুনা। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলেও এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আশাবাদী টেরেঙ্গানুর বিরুদ্ধেও, ‘ওরা খুব ভাল দল। ওদের কয়েকজন ফুটবলার খুব ভাল। তবে আমরাও প্রস্তুত ম্যাচটি খেলতে। আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। আশা করছি এই ম্যাচ জিতে ফাইনালে খেলবে আমার দল’। মোহনবাগানের গোলরক্ষক দেবজিত মজুমদার বাঙালি ফুটবলার। সেমির লড়াইয়ের আগে তিনিও টেরেঙ্গানুকে সমীহ করে বলেন, ‘যে কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ কঠিন হয়। আমরা প্রথম ম্যাচ হারের পর কোচ বলেছিলেন, প্রথম ম্যাচ হেরেছি এটা ভুলে যেতে হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ আমাদের হাতে আছে। এগুলো জিততে হবে। আমরা কোচের কথামতো খেলেছি। আশা করছি সেমিফাইনালেও সফল হতে পারবো। ওদের ফরোয়ার্ডরা দ্রুত ফুটবল খেলে। এটা আমাদের মাথায় আছে’। সেমির লড়াইয়ের আগে বেশ ফুরফুরে টেরেঙ্গানু শিবির। দলটির কোচ নাফুজি বিন জারিনও বেশ হাসিখুশি। আত্মবিশ্বাসী এই তরুণ কোচ বলেন, ‘জানি ম্যাচটি কঠিন হবে। তবে আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলবো। আশা করছি ফাইনালে যেতে পারবো।’ সেমির লড়াইয়ে দল চাপে নেই বলেও জানান নাফুজি, ‘আমাদের কোনো চাপ নেই। আমরা ম্যাচটা জিতে সেমিফাইনালে খেলতে চাই। কারণ আমরা এখানে এসেছি ট্রফি জিততে। আমাদের অধিনায়ক (লি টাক) এখানে আগেও খেলেছে। এই দেশের পরিবেশের সাথে সে ভালভাবে মানিয়ে নিয়েছে’। টেরেঙ্গানু অধিনায়ক লি টাক বলেন,‘আগের ম্যাচের পারফরমেন্স আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। কোনো চাপ নিচ্ছিনা। আমরা টুর্নামেন্ট উপভোগ করছি। আশা করছি সেমিফাইনালে যেতে পারবো’। প্রথম ম্যাচে হারের পর মোহনবাগানের দলটিকে নিয়ে গুঞ্জনের শেষ ছিল না। চারিদিকে ফিসফাস, উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্লাবটি নাকি দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে লাল-সবুজের দেশে এসেছে। কিন্তু দলটির স্প্যানিশ কোচ ভিকুনা বিষয়টা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সে প্রমাণ অবশ্য পরের দুই ম্যাচে রেখেছে ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এশিয়ার অন্যতম সেরা ও প্রাচীন ক্লাবটি। মোহনবাগানই প্রথম ভারতীয় দল যারা একটি ইউরোপীয়ান দলকে পরাজিত করেছিল। ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগান ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল। সেই দলটি এবার প্রথমবার খেলছে শেখ কামাল টুর্নামেন্টে। আর অভিষেকেই শিরোপা জিততে চায় দলটি। কাক্সিখত লক্ষ্যে পৌঁছতে আর মাত্র দু’টি জয় প্রয়োজন দেবিজত, মার্টিনেজ, সাইপ্রাসদের।
×