ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর

আফ্রিকান ইউনিয়ন

প্রকাশিত: ১১:২১, ৮ অক্টোবর ২০১৯

আফ্রিকান ইউনিয়ন

১৯৬৩-এর ২৫ মে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবাতে আফ্রিকার ৩২টি স্বাধীন দেশের প্রধান আফ্রিকান ঐক্য সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংঘ সদস্য দেশসমূহের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতি ও কার্যক্রম সমন্বয় করে তথাকথিত অন্ধকার মহাদেশকে ইউরোপ ও আমেরিকান মহাদেশের ঔপনিবেশিক প্রভাব ও শোষণ থেকে মুক্ত রেখে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে ঘোষণা। তবে প্রায় ৪৭ বছর ধরে এই সংঘ সদস্য দেশসমূহের উন্নয়ন ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংস্কারে আশানুরূপ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান, আইনের শাসন স্থাপন ও প্রসারণ এবং বিনিয়োগ বর্ধনে এই সংঘ সদস্য দেশসমূহের অনুকূলে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বরঞ্চ এই সংঘ অধিকাংশ আফ্রিকান দেশে গণতান্ত্রিক ধারা প্রসার করতে ব্যর্থ হয়ে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রচ্ছায়ে একনায়কদের ক্লাব বলে আখ্যায়িত হয়। এই প্রেক্ষাপটে লিবিয়ার সিরতি নগরে ১৯৯৯-এর সেপ্টেম্বরে লিবিয়ার তখনকার স্বৈরশাসক মুয়াম্মর গাদ্দাফীর আহ্বানে আফ্রিকান ঐক্য সংঘের আপেক্ষিকতায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অধিকতর ঐক্যবদ্ধ কার্যক্রম প্রযুক্ত করার সঙ্কল্পবোধসহ এর উত্তরসূরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়ন গঠন করার ঘোষণা দেয়া হয়। এই ঘোষণা অনুযায়ী ৫৫টি আফ্রিকান দেশ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট ১১টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য ২০০১-এর ২৬ মে আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়ন গঠিত হয়। পরে ২০০২-এর ৯ জুলাই আফ্রিকান ঐক্য সংঘের পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কাজ শুরু করে আফ্রিকান ইউনিয়ন। সনদ অনুযায়ী সদস্য দেশসমূহের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের নিয়ে গঠিত আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মিলনী এই ইউনিয়নের পরিচালনা ও সিদ্ধান্তয়নের সর্বোচ্চ অঙ্গ। একে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সমর্থন দেয়ার জন্য সদস্য দেশসমূহের সংসদসমূহ কর্তৃক নির্বাচিত ২৬৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি সর্ব আফ্রিকান সংসদীয় সম্মিলনী এর নীতিনির্ধারণী পাটাতন। এই দুটি অঙ্গের নির্দেশ ও কার্যাবলী পালন এবং নির্বাহ করার লক্ষ্যে সদস্য দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমন্বিত করে একটি নির্বাহী কাউন্সিল দায়িত্বপ্রাপ্ত। সমকালে আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত ৫৫টি দেশের মোট আয়তন ১১৫৫২৯৭২ বর্গমাইল, লোকসংখ্যা ১২২ কোটিরও বেশি। এই ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ২.৩৩ ট্রিলিয়ন ও গড় মাথাপিছু আয় ১৮৯০ মার্কিন ডলার। আফ্রিকান ইউনিয়নের সচিবালয় বা আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশন বা কর্তৃপক্ষ নামে আদ্দিস আবাবায় সদর দফতর নিয়ে অবস্থিত। আদ্দিস আবাবায় নিযুক্ত সদস্য দেশসমূহের বাষ্ট্রদূতদের নিয়ে ইউনিয়নের সদর দফতরে সার্বক্ষণিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থায়ী প্রতিনিধিদের কমিটি দায়িত্বপ্রাপ্ত। আফ্রিকান ইউনিয়নের মূল ও মেয়াদী লক্ষ্য আফ্রিকার সকল দেশকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করে সারা আফ্রিকার জাতি ও রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি স্থাপন এবং পার্থক্য নিরসনীয় দৃঢ়তা অর্জন করা। এই লক্ষ্যে এই ইউনিয়ন সদস্য দেশসমূহের (১) সার্বভৌমত্ব, এলাকীয় অখন্ডতা ও স্বাধীনতা প্রতিরক্ষিত করে আফ্রিকা মহাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক সংযুক্তি, শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জন, (২) গণতান্ত্রিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান, গণঅংশায়ন ও সুশাসন প্রসারণ, (৩) টেকসই উন্নয়ন বিস্তারণ, (৪) আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠাকরণ এবং (৫) জাতিসংঘের সনদ ও বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণার বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সন্দিপীতকরণে ব্রতী থাকার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এসব লক্ষ্য অর্জনে আফ্রিকান ইউনিয়ন গাম্বিয়ার বানজুলে সদর দফতরসহ মানবিক ও জনগণের অধিকার বিষয়ক কমিশন এবং তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার মিডরান্ডে সদর দফতরসহ উন্নয়নের জন্য নতুন অংশীদারিত্ব অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে পৃথক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে। পরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের আদলে আফ্রিকান ইউনিয়ন ২০০২ সালে একটি শান্তি ও নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করে। আফ্রিকা জুড়ে সংঘাত প্রতিরোধ, শান্তি স্থাপন এবং সম্মিলিত প্রতিরক্ষণ নীতি উদ্ভাবন এই কাউন্সিলের দায়িত্ব। এর বাইরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আদলে আফ্রিকান ইউনিয়ন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কমিটি নামক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে। তেমনি একটি ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার বিষয়ক আদালতকে এই দুই ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রসমূহে উদ্ভূত অপরাধ বিচারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আফ্রিকান ভাষাসমূহের বিকাশ ত্বরান্বিত ও সমন্বিত করার লক্ষ্যে এর আগে ২০০১ সালে আফ্রিকান ভাষা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে নাইজিরিয়ার আবুজাতে আফ্রিকান কেন্দ্রীয় ব্যাংক, লিবিয়ার ত্রিপলীতে আফ্রিকান বিনিয়োগ ব্যাংক এবং ক্যামেরুনের ইয়ন্ডেতে আফ্রিকান মুদ্রা তহবিল স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে এসব দেশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মুদ্রা ইউরোর আদলে আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত সকল দেশের জন্য একক মুদ্রা-আফ্রো প্রচলন করার লক্ষ্যও ঘোষণা করেছে। অবশ্য এসব ক্ষেত্রে এখনও সুনির্দিষ্ট কোন কার্যক্রম গ্রহণ করতে আফ্রিকান ইউনিয়ন সক্ষম হয়নি। বলা হয়েছে যে, ২০২৩ সালের মধ্যে সদস্য দেশসমূহ একক মুদ্রা আফ্রো প্রচলন করে আফ্রিকান অর্থনৈতিক সমাজ গড়ে তুলবে। আফ্রিকান অর্থনৈতিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আফ্রিকান ইউনিয়ন ইতোমধ্যে ৭টি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছে। এগুলো হলো (১) আরব মাগরেব ইউনিয়ন, (২) পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ বাজার, (৩) সাহেল-সাহারীয় রাষ্ট্রসমূহ, (৪) পূর্ব আফ্রিকান সমাজ, (৫) কেন্দ্রীয় আফ্রিকান রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক সমাজ, (৬) পশ্চিম আফ্রিকান রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক সমাজ ও (৭) দক্ষিণ আফ্রিকা উন্নয়ন সমাজ। আশা করা হচ্ছে যে, এসব অর্থনৈতিক সমাজ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য প্রসারিত করে কয়েক যুগের মধ্যে একটি একক আফ্রিকান অর্থনৈতিক সমাজে উন্নীত হবে। এতদিন পর্যন্ত আফ্রিকান ইউনিয়ন কতিপয় সদস্য দেশের মধ্যে ঘটিত গৃহযুদ্ধ ও স্বৈরতন্ত্রের সৃজন প্রতিরোধ করতে সমর্থ হয়েছে। ২০০৫ সালে টোগোতে প্রয়াত প্রেসিডেন্টের পুত্রের সংবিধান লঙ্ঘন করে সরাসরি রাষ্ট্রপতি হওয়াকে এই ইউনিয়ন পরবর্তীকালে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সংশোধন করেছে। একই সূত্র অনুসরণ করে এই ইউনিয়ন ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মৌরিতানিয়ার সামরিক শাসনকে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনীয় সরকার গঠনে বাধ্য করেছে। এই ইউনিয়ন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিতে ১৯৬০ থেকে চলে আসা সামরিক শাসনকে ২০১৩তে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনের মাধ্যমে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। তেমনি ২০০৪ থেকে শুরু করে দারফুর, কমোরস, সোমালিয়া, গণতান্ত্রিক কঙ্গো, বুরন্দি ও কোট দ্য আইভয়ার আন্তঃকলহ নিরসনে এই ইউনিয়ন শান্তিরক্ষামূলক মিশন সফলতার সঙ্গে কার্যকর করেছে। সম্প্রতি এসব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে আফ্রিকান ইউনিয়নের পতাকাতলে এবং নিয়ন্ত্রণে একক আফ্রিকান বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শান্তিরক্ষা করা ও গণতন্ত্র কার্যকর রাখার ক্ষেত্রে আফ্রিকান ইউনিয়নের এসব কার্যক্রম প্রশংসার্হ। এর বাইরে সমষ্টিগতভাবে এই মহাদেশে ম্যালেরিয়া, এইডস ও এবোলা জাতীয় মহামারী রোধক্রমে আফ্রিকান ইউনিয়ন সক্রিয় হয়েছে। অবশ্য এখন পর্যন্ত মরু বিস্তার ও দারিদ্র্য বিমোচন এবং দুর্ভিক্ষ দূরীকরণের ক্ষেত্রে আফ্রিকান ইউনিয়ন তেমন কোন পারঙ্গমতা দেখাতে পারেনি। ইউনিয়নের সদস্য বিষুবরৈখিক গিনির মাথাপিছু গড় বার্ষিক আয় ৩৮২৪৩ মার্কিন ডলারের তুলনায় বুরুন্দি ও কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মাথাপিছু গড় বার্ষিক আয় ৩০০ মার্কিন ডলারের অবস্থান কিংবা জাম্বিয়ার মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৩৬০২ মার্কিন ডলারের আপেক্ষিকতায় ভিন্নতর বর্ণের দেশ মরক্কোর মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৭৩৬৫ মার্কিন ডলারের পার্থক্য বিরাট অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রতিফলক হয়ে এই মহাদেশে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ইউনিয়ন স্থাপনে বড় বাধা বলে অবস্থান করছে। আফ্রিকান ইউনিয়নের সমকালীন প্রেসিডেন্ট হলেন মিসরের আব্দুল ফাতাহ আল সিসি। আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের এখনকার প্রধান হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিজ দিয়ামিনি জুঝা। এর অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের প্রধানরা সদস্য দেশসমূহ কর্তৃক নির্বাচিত। আফ্রিকান ইউনিয়ন জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক। এর বাইরে এই ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বিশেষ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ২০১৬ থেকে আফ্রিকান ইউনিয়ন সদস্য দেশসমূহের সরকারের পাশাপাশি সাধারণ ছাড়পত্র ইস্যু করে আসছে। চীনের সঙ্গে এই ইউনিয়নের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিশেষভাবে জোরদার বলে দৃষ্ট হয়েছে। ২০১৮ সালে এই ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম স্থাপন করে বেজিংয়ে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত করেছে। আদ্দিস আবাবায় ইউনিয়নের সদর দফতর ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে চীন উপহার হিসেবে তৈরি করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আফ্রিকার সকল দেশের সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আফ্রিকায় গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন বিকাশের প্রয়োজনীয়তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আফ্রিকান ইউনিয়নের সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে তিন প্রতিবন্ধক। এক. আফ্রিকায় বর্ণ বিভক্তি ও গোত্রভিত্তিক আনুগত্য এখনও সাধারণভাবে গণতন্ত্র ও সংহতির পথে বিঘ্নস্বরূপ বিদ্যমান। উদাহরণত, উত্তর আফ্রিকার দেশসমূহের শ্বেতবর্ণের জনগণ মধ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের একই সমাজে বাস করতে দিতে আগ্রহী নন। ইউরোপ থেকে আফ্রিকার বসতি স্থাপনকারী সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গদের সমঅধিকার বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করতে সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গরা এখনও অনীহা প্রকাশ করে যাচ্ছে। এই বিভক্তি ও বিঘ্ন সহজে এবং শীঘ্র দূর হবে না বলেই মনে হয়। দুই. এই ইউনিয়নের আন্তঃরাষ্ট্রভিত্তিক অর্থনৈতিক বৈষম্য সহজে দূর হবে না বলে ধারণা করা যায়। অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট থাকলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঐক্য সহজে প্রতিষ্ঠিত হয় না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে রাজ্য ও রাষ্ট্রভিত্তিক বৈষম্য প্রায় ছিল না বলেই তারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংহতিভিত্তিক রাষ্ট্র ও অর্থনৈতিক ইউনিয়ন সহজে সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল এবং তিন. আফ্রিকায় গণতান্ত্রিক চর্চা সকল রাষ্ট্রের বিকশিত করার পরিধি এখনও যথেষ্ট বিস্তৃত। আফ্রিকার অধিকাংশ রাষ্ট্রপ্রধান তাদের স্ব-স্ব দেশে প্রভাব, প্রতিপত্তি ও নায়কত্ব আন্তঃরাষ্ট্র বিস্তৃত গণতন্ত্রের বিকাশের অনুকূলে ত্যাগ করতে দৃশ্যত সহজে রাজি নন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্রকে দূরে সরিয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংহতি স্থাপন করা যায় না। লেখক : সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী
×