ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দপুরে রেলের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে ধূম্রজাল

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সৈয়দপুরে রেলের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে ধূম্রজাল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ রেলের শহর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে দখলদার বসবাসকারীদের উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু কথা আজ (রবিবার) থেকে দুই দিনব্যাপী। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সব ঠিক থাকলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। কিন্তু এলাকায় প্রকাশ পেয়েছে এই উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের এই স্থগিতের কোন ঘোষণাপত্র কেউ দেখাতে পারেনি। এরই মাঝে সৈয়দপুরে পুনরায় শুরু হয়েছে অবৈধভাবে কব্জা করে রাখা রেলের জমিতে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ও ধূ¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, সৈয়দপুর জিআরপি মোড়ে রেলওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের তিন শ’ গজ অদূরে থ্যাংকস ক্লথ স্টোরের পেছনে রেলওয়ের জমিতে জয়নুল হোটেলের আধাপাকা ঘরটি এক কোটি টাকায় হাত বদল হয়েছে। এটি ক্রয় করেছে দুই কাপড় ব্যবসায়ী। তাদের সমর্থন করে ওই জমিতে অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে সৈয়দপুর যুবলীগের আহ্বায়ক দিল নেওয়াজ খান। এলাকাবাসী প্রশ্ন রেখে বলেন, রেলের উচ্ছেদ অভিযানের গণবিজ্ঞপ্তিকে প্রতিহত করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে প্রভাবশালীরা রেলের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা জয়নুল হোটেলটি ভেঙ্গে কিভাবে তিনতলা বিশিষ্ট কমার্শিয়াল মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর দিন শেষে যখন রাত গভীর হয় ঠিক তখনি রাত ১২টা থেকে শুরু হয় তিন তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ। এ বিষয়ে রেলের জায়গায় ওই অবৈধভাবে বিল্ডিং নির্মাণকারী কাপড় ব্যবসায়ী আরমানের মুঠোফোনে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ও থ্যাংকস ক্লথ স্টোরের মালিক একরামুল মিলে এই জমিটি জয়নুলের ছেলের কাছ থেকে এক কোটি টাকায় কিনে নিয়েছি। সৈয়দপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমোদন নিয়ে সব সাইড ম্যানেজ করে এই অবকাঠামো ঢালাই করার কাজ শুরু করা হয়। আরমান ও একরামুল জানান সাংবাদিকদের সংবাদ না করার জন্য ম্যানেজ করতে আমাদের বলা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান যারা রেলের জমিতে অবৈধভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করছে তারা সৈয়দপুর যুবলীগের আহ্বায়ক দিল নেওয়াজ খানের বন্ধু। তার প্রভাবে এই অবকাঠামো নির্মাণ চলছে রেলের জায়গায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ শহরের উপরে রেলের জায়গায় অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণ চলছে অথচ রেল কানুনগো সৈয়দপুর, আই ডাব্লু সৈয়দপুরসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এ বিষয়ে জনকণ্ঠের এই প্রতিনিধি মুঠোফোনে সৈয়দপুর যুবলীগের আহ্বায়ক দিল নেওয়াজের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান আমি বন্ধু বলে তাদের সহয়তা করব এটি ঠিক নয়। ওই অবকাঠামো নির্মাণে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন শুধু এটি নয় সৈয়দপুর রেলওয়ের কোন জায়গায় আমি এক শতক জমি দখল করিনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সৈয়দপুরের রেলের জমি উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধে যে ‘অধিকার’ নামে যে সংগঠন গঠন করে আন্দোলন চলছে ওই কমিটির তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। উল্লেখ্য, যে সৈয়দপুর শহরের সিংহভাগ জমি রেলওয়ের অধীনস্থ। সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ের ৮০০ একর জমি রয়েছে। এতে বৈধ ও অবৈধ বসবাসকারী রয়েছে। রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারী উচ্ছেদে চলতি বছরের গত ১৬ এপ্রিল প্রথম দফায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
×