স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ দুই দফা বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে কৃষককুল নীলফামারী সহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর কৃষি অঞ্চলে ৫ জেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের চারা রোপণ প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে আমনের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক। এলাকার কৃষকরা বলছে দুই দফা বন্যার পর আমন চারার কিছুটা সংকট দেখা দিলেও তা কেটে গেছে। চারিদিকে এখন আমনের ক্ষেতগুলো সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার রংপুর কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের দপ্তর সুত্রে জানা যায় উত্তরবঙ্গের রংপুর কৃষি অঞ্চলে ৫ জেলায় চলতি মৌসুমে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে । এর মধ্যে গতকাল সোমবার বিকাল পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপন শেষ করেছে কৃষক।
পাশাপাশি কৃষককুল আমনের চারা রোপন অব্যাহত রেখেছে।
সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এখনও এক লাখ ১০ হাজার ২৩৬ হেক্টরে চারা রোপন বাকী রয়েছে। কৃষি বিভাগ আশা করছে আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ওই পরিমান জমিতে চারা রোপন শেষ হয়ে যাবে। ধানের চারার মধ্যে রয়েছে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাত ।
জেলা ভিত্ত্বিক আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা হলো নীলফামারীতে এক লাখ ২৩ হাজার ৩৭ হেক্টর জমির মধ্যে এক লাখ ১২ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে চারা রোপন শেষ হয়েছে। রংপুরে এক লাখ ৭৬ হাজার ৭৪১ হেক্টর জমির মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার ১৫০ হেক্টরে চারা রোপন শেষ হয়। লালমনিরহাটে ৯০ হাজার ৪০০ হেক্টরের মধ্যে ৮৭ হাজার ৩৯২ হেক্টরে চারা রোপন শেষ হয়েছে। গাইবান্ধায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ হেক্টরের মধ্যে ৭৬ হাজার ২৯২ হেক্টরে চারা লাগানো শেষ হয়। কুড়িগ্রামে ১ লাখ ২২হাজার ১৫৯ হেক্টরের মধ্যে ৮৭ হাজার ৩৯২ হাজার হেক্টরে চারা লাগিয়েছে কৃষক ।
নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের উত্তর কানিয়ালখাতা গ্রামের কৃষক নিরানন্দ রায় জানান বোরো ধান আবাদ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার দাম বাড়বে এমন আশায় আমন ধান বুনেছি। এইবার ৩ বিঘা জমিতে গাড়ছি। একই এলাকার আরেক কৃষক রোস্তম আলী। ৫বিঘা জমিতে লাগিয়েছে আমনের চারা। গেল মৌসুমে বোরো ধানের লোকসানের কথা মাথায় রেখে লাভের আশায় এবারও জমিতে স্বপ্ন বুনছেন তিনি। এইবার আমনের দাম পাবো এমন স্বপ্ন দেখি ।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, রংপুর অঞ্চলে এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান আবাদ হবে বলে আশা করছি। এ জন্য আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষে জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: