ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২২ জুন ২০১৯

 সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প

জেলার রানীশংকৈল উপজেলার বণিতা রানী সরকার ইতোমধ্যে এলাকায় একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। রানীশংকৈল পৌরশহরের কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা বণিতা রানী সরকার ‘সফল উদ্যোক্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে রয়েছে তার নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ়-প্রত্যয়। পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে তাকে, হাজারো বাধা বিপত্তি এলেও কখনোই দমে যাননি তিনি। পরিবারের বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও দারিদ্র্যতাকে হার মানিয়ে তিনি এখন স্বাবলম্বী। একদিন তার স্বামী সন্তান নিয়ে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত খাওয়ার দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। এখন তিনি একটি কারখানা চালিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তার এই সফলতা শুধু একটি পরিবারের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, গ্রামের দরিদ্র প্রায় ৮টি পরিবার যারা তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতে পারত না তারা এখন এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নারী উদ্যোক্তা বণিতা বলেন, মাত্র ১৩০ টাকা দিয়ে ২০১৫ সালের শেষের দিকে আমি ছোট্ট পরিসরে চানাচুর ও নিমকি তৈরি করে তার ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ছোটবড় সকলের ভালবাসা ও আশীর্বাদে আমি ধীরে ধীরে অনেকটা এগিয়ে গেছি। প্রথম দিক থেকে আমি নিজেই চানাচুর ও নিমকি তৈরি করে দোকানে দোকানে গিয়ে পাইকারি দরে বিক্রি করতাম। লোকজন আমার উৎপাদিত চানাচুর ও নিমকি খেয়ে প্রশংসা করেন। এখন পুঁজি স্বল্পতার কারণে চাহিদা অনুযায়ী অনেক দোকানে ঠিকমতো পণ্য সরবরাহ দিতে পারি না। একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, যা আমার কাছে অপ্রতুল্য। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সীমিত টাকা দিয়ে আমি এই ব্যবসা চালাচ্ছি। এভাবেই আমি বর্তমানে সকল কর্মীর খরচ মিটিয়ে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করছি। আমি আমার গ্রামের বেকার মানুষগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই এবং তারাও কর্মঠ হয়ে ভালভাবে চলতে পারলে আমার আশা পূরণ হবে। এ ব্যাপারে আমি সরকারের সহযোগিতা চাই। আমার বিশ্বাস সহযোাগিতা পেলে আমি আমার প্রতিষ্ঠানটিকে আরও অনেক উন্নত করতে পারব। এদিকে বণিতা রানীর বিষয়ে জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রোকসানা বানু হাবীব বলেন, বণিতা রাণী সরকার এবার ঠাকুরগাঁও জেলার শ্রেষ্ঠ জয়ীতা নির্বাচিত হয়েছেন। পাঁচ ক্যাটাগরির মধ্যে তিনি অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী। তিনি অনেক কষ্ট ও জীবনযুদ্ধ করে এ পর্যায়ে এসেছেন। তিনি এক কেজি ময়দা দিয়েই প্রথম তার ব্যবসা শুরু করেন সেটা আবার বাজারে দোকানে দিয়ে বিক্রি করে সেখানে থেকে ২০০ টাকা পেতেন। এই ২০০ টাকা থেকেই তার প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল। অথচ এখন আটজন কর্মী তার এই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন। নিমকি, চানাচুর তৈরি করে বণিতা রানী সরকারের আজ যে সাফল্য, এটা দেখে যেন অন্য নারীরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। -এস, এম জসিম উদ্দিন, ঠাকুরগাঁও থেকে
×