ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে প্রি-পেইড মিটারের তীব্র সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩০ মে ২০১৯

  টাঙ্গাইলে প্রি-পেইড মিটারের তীব্র সঙ্কট

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) প্রি-পেইড মিটারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রি-পেইড মিটার না পেয়ে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক প্রতিমাসে গড় বিলের শিকার হয়ে হয়রানি পোহাচ্ছে। টাঙ্গাইল বিউবো সূত্রে জানা গেছে, জেলায় সাতটি নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে বিদ্যুত বিতরণ ও সরবরাহ করা হয়। সাতটি দপ্তরের মোট গ্রাহক সংখ্যা দুই লাখ ৪২ হাজার ৯৪জন। এরমধ্যে সিঙ্গেল ফেজ গ্রাহক দুই লাখ ৩৩ হাজার ২৫৫ এবং থ্রি-ফেজ গ্রাহক ৮ হাজার ৮৩৯জন। বিগত ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ২৫ হাজার ৯৬০জন গ্রাহকের প্রচলিত ডিজিটাল মিটার পরিবর্তন করে প্রি-পেইড ডিজিটাল মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে এক লাখ ২৪ হাজার ২৫৯টি থ্রি ফেজ ও থ্রি-ফেজ এক হাজার ৭০১টি। সে হিসেবে এখনও এক লাখ ১৬ হাজার ১৩৪টি প্রি-পেইড ডিজিটাল মিটারের চাহিদা রয়েছে। প্রি-পেইড ডিজিটাল মিটার না পাওয়ায় অধিকাংশ গ্রাহক গড় বিলের শিকার হয়ে হয়রানি পোহাচ্ছেন। জানা যায়, প্রচলিত ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুত বিভাগ ৩-৪ মাসের বিল প্রায় সব সময় বকেয়া রেখে হঠাৎ করে নিয়মিত বিলের কয়েকগুন বেশি বিল করছেন। এমনিতেই একত্রে বিল করলে পরিশোধে গ্রাহকরা সমস্যায় পড়েন। তার উপর অতিরিক্ত বিলের বোঝা তাদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। বিল পরিশোধ না করলেই গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ মামলা-মোকদ্দমায় জড়ানো হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই প্রচলিত ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকরা তাদের মিটার প্রি-পেইডে পরিবর্তণের জন্য বিদ্যুত অফিসে ভীর করেও কোন সুফল পাচ্ছেন না। প্রচলিত ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, তারা মিটার পরিবর্তণের জন্য বিদ্যুত অফিসে আবেদন-নিবেদন করেও প্রি-পেইড মিটার পাচ্ছেন না। বিদ্যুত অফিসের পক্ষ থেকে একটি বেসরকারি কোম্পানীকে মিটার দেখে বিল করা ও বিলের কাগজ গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু ওই কোম্পানীর লোকজন মিটারের রিডিং না দেখে ৩-৪ মাস পর পর ইচ্ছে মাফিক গড় বিল এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মোট বিলের ৪-৫ গুন বিল করছে। ফলে প্রচলিত ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকরা বিদ্যুত বিল পরিশোধে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বিলের টাকা গুনতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা আরো জানান, বিদ্যুত বিভাগ তাদের কাছ থেকে এক প্রকার ‘ডাকাতি’ করে টাকা নিচ্ছে। এ বিষয়ে বার বার অভিযোগ করেও বিদ্যুত অফিস থেকে তারা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। টাঙ্গাইল বিদ্যুত বিভাগের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন প্রামানিক জানান, জামালপুরে দুইটি ও টাঙ্গাইলের সাতটি বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ (নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর) নিয়ে বিদ্যুত বিভাগের টাঙ্গাইল সার্কেল। টাঙ্গাইলের সাতটি বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র বিবিবি-২ (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) এর ৪২ হাজার ৪১৬ জন গ্রাহকের কাউকেই প্রি-পেইড মিটার দেয়া সম্ভব হয়নি। মূলত: বর্তমানে প্রি-পেইড ডিজিটাল মিটারের সরবরাহ নেই। সরবরাহ পেলে অবশ্যই এ সঙ্কট থাকবে না। তিনি আরো জানান, বিবিবি-১,৩,৪,৫,৬ ও ৭ এ কিছু সংখ্যক গ্রাহক প্রি-পেইড ডিজিটাল মিটার পাননি। এছাড়া প্রচলিত ডিজিটাল মিটার দেখে সঠিক রিডিং মোতাবেক বিল প্রস্তুত ও বিলপত্র গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা কোন অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
×