ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণের অর্ধেক তৈরি পোশাক খাতে

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১ মে ২০১৯

বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণের অর্ধেক তৈরি পোশাক খাতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক, সুয়েটার, ডাইং, নিটিং এবং টেক্সটাইল খাতে বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণের অর্ধেকের বেশি। প্রায় ১৬ শতাংশ ঋণ নিয়েছে প্লাস্টিক, সার্ভিস এবং ফার্মাসিউটিক্যাল। তৈরি পোশাক খাত রফতানির সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় বিদেশী ঋণ পরিশোধে ঝুঁকি কম। কিন্তু বিদ্যুত খাতের আয় বৈদেশিক মুদ্রায় হয় না। এ কারণে ঋণ পরিশোধের সময় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণে আরও কিছু ঝুঁকি থাকায় আরও অধিকতর বিবেচনার তাগিদ। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে ‘বিআইবিএম রিসার্চ এ্যালম্যানাক-২০১৯’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত ‘প্রাইভেট কমার্শিয়াল বোরোইং ফর্ম ফরেন সোর্সেস ইন বাংলাদেশ ঃ এ্যান এনাটমি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ব্যাংক ও আর্থিক বিষয়ে আরও ১৮টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ২০১৮ সালে এসব গবেষণাপত্র আলাদাভাবে সেমিনার, রিসার্চ ওয়ার্কশপ এবং রাউন্ডটেবল ডিসকাশনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী, গবেষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে এক অনুষ্ঠানে এসব গবেষণাপত্রের প্রাপ্ত ফলাফল ও সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করা হয়। ‘বিআইবিএম রিসার্চ এ্যালম্যানাক’ -২০১৯ অনুষ্ঠানের কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস. এম. মনিরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি তার বক্তব্যে ‘বিআইবিএম রিসার্চ এ্যালম্যানাক’ -২০১৯ অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের টেকসই উন্নয়নে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থাকায় ঝুঁকি অনেক কম। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থিকখাত অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে। তিনটি টেকনিক্যাল সেশনের মাধ্যমে গবেষণাপত্রগুলো উপস্থাপনসহ প্রত্যেকটির ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেশন-১-এ সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম-এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। তিনি বলেন, ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতের বিভন্ন বিষয়েও বিআইবিএম গবেষণা করছে। যা এ খাতটির লীডারশিপ এবং গবর্নেন্সের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, বিদেশী ঋণ পরিশোধে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য বিদেশী ঋণ গ্রহণে আরও সতর্ক হতে হবে। এমনকি রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। সেশন-১ এর গবেষণাপত্রের মধ্যে রয়েছে- আইটি সিকিউরিটি অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ ঃ থ্রেটস এ্যান্ড প্রিপেয়ার্ডনেস; প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন অব ইসলামিক ব্যাংকস: প্রসপেক্টস এ্যান্ড চ্যালেঞ্জস ইত্যাদি। টেকনিক্যাল সেশন-২-এর সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এ. চৌধূরী। তিনি ব্যাংকারদের ঋণ প্রদানে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকারদের প্রশিক্ষণে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। এটিকে ব্যয় বিবেচনা না করে বিনিয়োগ ভাবতে হবে বলে মত দেন। এ সেশনের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র হচ্ছে- ইন্টারনাল অডিট এ্যান্ড পারফরমেন্স অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ; মানি লন্ডারিং ভালনারেবিলিটিস ইন পেমেন্ট সিস্টেমস: বাংলাদেশ কনটেক্সট ইত্যাদি। সেশন-৩- এ সেশনের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সেশনের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র হচ্ছে-ডেভেলপমেন্ট অব বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ; কস্ট ফর কমপ্লায়েন্স উইথ রেগুলেশনস ইন ব্যাংকস ইত্যাদি।
×