ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩-২ গোলে হারাল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে

বসুন্ধরা কিংসের জয়রথ চলছেই

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 বসুন্ধরা কিংসের জয়রথ চলছেই

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী থেকে ॥ শীত কাটিয়ে বেশ গরম পড়তে শুরু করেছে। ফাল্গুনের প্রকৃতির গরম হাওয়ায় প্রিমিয়ার ফুটবল লীগে (বিপিএল) গতকাল রবিবার নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস ও আরামবাগের টান টান উত্তেজনার গরম গরম খেলা হয়ে গেল। বসুন্ধরা ৩-২ গোলে নিজ মাঠে জয় পেয়েছে। এ খেলা নিয়ে আরামবাগের আত্মঘাতী গোল ও দুই দলের খেলোয়াড়দের ধাক্কাধাক্কির মতো অনেক নাটকীয় ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া গোলের জন্য দুই দলের চলে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ। তবে প্রথমে গোল করেও আরামবাগ জয় ধরে রাখতে পারেনি। তবে তারকাসমৃদ্ধ বসুন্ধরার চেয়ে তারুণ্যদীপ্ত আরামবাগের খেলোয়াড়দের খেলা উপভোগ করেছে শেখ কামাল স্টেডিয়ামের দর্শক গ্যালারির ফুটবল প্রেমিকরা। আর নিজ মাঠে বসুন্ধরা তাদের জয়রথ অব্যাহত রেখেছে। শুরুর ২ মিনিটে বসুন্ধরার প্রথম আক্রমণ ছিল। যা আরামবাগের গোলরক্ষক হিমেল প্রতিহত করে। ৪ মিনিটে বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় মার্কোস সুযোগ পেলেও গোল করতে ব্যর্থ হয়। বল চলে যায় গোলবারের বাইরে। এরপরও আক্রমণেই থাকে বসুন্ধরা। ৯ মিনিটে বসুন্ধরার তারকা ফুটবলার ড্যানিয়েল গোল করার সুযোগ হাতছাড়া করেন। পরপর আক্রমণ চালিয়ে বসুন্ধরা একের পর এক গোল করার সুযোগ হাতছাড়া করতে থাকে। এর মাঝে ১১ মিনিটে বসুন্ধরার মতিন মিয়া গোলের সুযোগ পেলেও আরামবাগের হিমেল তা ধরে ফেলেন। এরপর ১৬ মিনিট পর বেশ কয়েকবার পাল্টা আক্রমণ চালায় আরামবাগ। কয়েক দফা আক্রমণ কাজে লেগে যায় আরামবাগের। ২৩ মিনিটে আরামবাগের নাইজিরিয়ান খেলোয়াড় ইডেনি চিনেডুর লং শটের বল পায়ে পেয়ে আরিফুল রহমান আরিফ সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তার শট বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিছুর রহমান জিকোকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় জালে। আরামবাগ এগিয়ে যায় ১-০ গেলে। এরপর বসুন্ধরা গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে। ২৫ মিনিটে আরামবাগের ডি-বক্সে প্রবেশ করে বসুন্ধরার ড্যানিয়েল গোলমুখে শট নিলে ২৫ মিনিটে আরামবাগের ডিফেন্ডার নাইজিরিয়ান কিংসলে বল প্রতিরোধ করতে গিয়ে তার পা লেগে বল জালে প্রবেশ করে। যা আত্মঘাতী গোলে ১-১ খেলা সমতায় ফিরে আসে। ফলে আত্মঘাতী গোল খেয়ে আরামবাগের খেলোয়াড়দের ভঙ্গুর মনোবলের সুযোগ নিয়ে বসুন্ধরা পরপর বেশ কিছু আক্রমণ চালায়। ৩৫ মিনিটে সুযোগ পেয়ে যায় এক সময়ের রং মিস্ত্রি মতিন মিয়া। তার সরাসরি শট চলে যায় আরামবাগের জালে। ২-১ এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। এরপর প্রথম হাফের বাকি সময় উভয় দল গোলের সুযোগ হাতছাড়া করতে থাকে। ৪৩ মিনিটে কর্নার পেয়ে আরেকটি সুযোগ কাজে লাগায় বসুন্ধরা। ড্যানিয়েল কর্নার শর্টের বল আলমগীর কবির রানা পেয়ে পাস দেন ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় মার্কসের কাছে। মার্কস সোজা বল পাঠান আরামবাগের জালে। এগিয়ে যায় বসুন্ধরা ৩-১ গোলে। শেষে দ্বিতীয় হাফে মাঠে নেমে গোল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে আরামবাগ। তার মাঝে বসুন্ধরার খেলোয়াড়রাও গোলের সুযোগ খুঁজতে থাকলেও তারাও বারবার ব্যর্থ হতে থাকে। তবে দ্বিতীয় হাফের ৮ মিনিটে বসুন্ধরার ডি বক্সে ফ্রি কিক পেয়ে যায় আরারবাগ। আরামবাগের নাইজিরিয়ান খেলোয়াড় চিনেদুর সহযোগিতায় আরেক নাইজিরিয়ান কে.সি নকুরুমহ বসুন্ধরার জালে বল পাঠায়। ৩-২ গোলে পিছিয়ে থাকা আরামবাগ দ্বিতীয় গোল পেয়ে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। একের পর এক তারা আক্রমণ চালাতে থাকে। ১৫ মিনিটে বসুন্ধরার ডি বক্সে ফাউল দাবি করে আরামবাগ। রেফারি আনিছুর রহমান তা নাকচ করে দিলে আরামবাগের খেলোয়াড়রা রেফারির ওপর চড়াও হবার চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। মীমাংসা শেষে পুনরায় খেলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে খেলায় চরম উত্তেজনা চলে আসে। ১৮ মিনিটে বসুন্ধরার আক্রমণ ছিল চমৎকার। কিন্তু গোল করতে ব্যর্থ হয়। এর মাঝে বসুন্ধরা ও আরামবাগ দুইজন করে খেলোয়াড় বদলি করে। ৪৫ মিনিটে বসুন্ধরার ডি বক্সের সামনে ফ্রি কিক পেয়ে যায় আরামবাগ। ফ্রি কিক নিয়ে দুই দলের মাঝে চলে ধাক্কাধাক্কি। সেটি সারিয়ে কিক নেয় আরামবাগের চিনেদু। না বল চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাহিরে। রেফারির শেষ বাঁশি বেজে উঠলে ৩-২ গোলের জয় পায় বসুন্ধরা কিংস।
×