ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ বিদেশী সাংবাদিক আটক

ভেনিজুয়েলায় বিরোধী নেতার বাড়িতে পুলিশের হানা

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 ভেনিজুয়েলায় বিরোধী নেতার বাড়িতে পুলিশের হানা

ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়েইদোর বাড়িতে হানা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এমন কথাই জানিয়েছেন গুয়েইদো। এভাবে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে পুলিশ বাড়িতে হাজির হয় বলে জানান গুয়েইদো। তারা তার স্ত্রীর খোঁজ করে। ওই সময় বাড়িতে ২০ মাসের কন্যাসন্তানকে নিয়েছিলেন গুয়েইদোর স্ত্রী। আর গুয়েইদো তখন ছিলেন বাড়ির বাইরে। ইয়াহু নিউজ। গুয়েইদো এক টুইটে এ পুলিশী হানার কথা জানান। তবে বলেন, তাদের উদ্দেশ্য কি তা স্পষ্ট নয়। টুইটে গুয়েইদো লেখেন, এ মুহূর্তে স্পেশাল একশন ফোর্স (এফএএস) আমার স্ত্রী ফাবিয়ানার এ্যাপার্টমেন্টে উপস্থিত হয়েছে। আমার মেয়ের কিছু হলে মাদুরো দায়ী হবেন। বৃহস্পতিবার কারাকাসের সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের গুয়েইদো বলেন, দেশের প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে উৎখাত করতে তিনি আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা নেয়ায় তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পুলিশী হানার ওই ঘটনা এরই লক্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষণে তিনি বলেন, একনায়ক শাসকরা ভাবছে তারা আমাদের ভয় পাইয়ে দেবে। এখানে আসার আগেই আমি ওই ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু শুরুতে সে কথা বলিনি। দেশের ভবিষ্যত পরিকল্পনা দিয়ে ভাষণ শুরু করেছি। সরাসরি নিরাপত্তা বাহিনীর নাম নিয়ে গুয়েইদো বলেন, আমার ২০ মাসের সন্তানকে কোনরকম ভয়ভীতি দেখানো হলে আপনাদেরই আমি দায়ী করব। পরে এক কূটনীতিককে সঙ্গে নিয়ে গুয়েইদো বাড়ির পথে রওনা হন। গুয়েইদোকে সমর্থন দেয়া যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, তার কোন ক্ষতি হলে মাদুরো সরকারকে ‘মারাত্মক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। মাদুরো এবং বিরোধীদলীয় নেতা গুয়েইদোর রাজনৈতিক লড়াইয়ে দুজনের পক্ষেই শামিল রয়েছে বিশ্বের নানা দেশ। ভেনিজুয়েলায় গত ২৩ জানুয়ারি চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মাঝে বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়েইদো নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো গুয়েইদোকে ভেনিজুয়েলার ‘বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মাদুরোকে ‘ক্ষমতা দখলকারী’ আখ্যা দিয়ে তার নিন্দা করেছে। অপরদিকে চীন, রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ খোলাখুলি মাদুরোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এদিকে ভেনিজুয়েলা কর্তৃপক্ষ পাঁচ বিদেশী সাংবাদিককে আটক করেছে। আটক সাংবাদিকরা দেশটির মাদুরোকে উচ্ছেদ করতে চাওয়া বিরোধী দলের আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করছিলেন। তেল সম্পদে সমৃদ্ধ কিন্তু অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়া দেশটিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিলির অপর দুই সাংবাদিককে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আটক সাংবাদিকদের দুজন ফ্রান্সের, দুজন কলম্বিয়ান ও একজন স্পেনের নাগরিক। শেষের তিনজন স্পেনের জাতীয় বার্তা সংস্থা এফে’তে কাজ করেন এবং তারা কলম্বিয়া থেকে ভেনিজুয়েলার রাজনৈতিক অস্থিরতার খবর সংগ্রহ করতে এসেছিলেন। ভেনিজুয়েলায় এফে’র ব্যুরো প্রধান নেলিদা ফার্নান্দেজ তাদের আটকের খবর জানান। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ফরাসী দুই সাংবাদিক কুওতিদিয়েন নামের একটি টেলিভিশন প্রোগ্রামে কাজ করেন। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে ভিডিও করার সময় তাদের আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে কর্মরত স্থানীয় এক প্রযোজককেও আটক করা হয়েছে। চিলির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্টো আম্পুয়েরো বলেন, প্রেসিডেন্ট ভবনের কাছ থেকে মঙ্গলবার রাতে চিলির দুই টিভি সাংবাদিককে গ্রেফতার করে ১৪ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। এরপর তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা জোনে’ কাজ করার জন্য তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। টুইটারে মন্ত্রী বলেন, ওই দেশে যা করা হচ্ছে তা স্বৈরতন্ত্র। মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রেস পাস না থাকার অভিযোগ এনে কয়েক বিদেশী সাংবাদিককে আটক বা ভেনিজুয়েলা থেকে বের করে দেয়া হয়। সর্বশেষ গ্রেফতার সম্পর্কে ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরেয়াজা বুধবার বলেন, ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া এ দেশে প্রবেশের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
×