ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

নবেম্বর শেষ হয়ে এলো প্রায়। বিকেল না হতেই ঘরের ভেতর আলো কমে আসছে। কৃত্রিম আলো জ্বালতে হচ্ছে বেশ আগেভাগে। ঘরের বাইরে কী বিকেল কী রাত- একই রকম ব্যস্ততা ঢাকা শহরে। তারপরও মনে হচ্ছে ধুলো বেড়ে গেছে এই মহানগরের। যেসব এলাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে সেসব এলাকার পাশ দিয়ে বিস্তর ধুলো উড়িয়ে যানবাহনের চলাচল। ধুলোর দাপটে পথচারী আর বাহনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের বেহাল বিপন্ন দশা। বিয়ের মৌসুমে ভেন্যুর চাহিদা ঢাকায় বিয়ের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বলা যায় এখন হচ্ছে বিয়ের ভরাঋতু। বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য লাগে একটা জায়গা, মানে ভেন্যু। বিয়ের ভেন্যু নিয়ে একটা মজার খবর পড়েছিলাম। আমরা পাঠকরা মজা পেলেও বর-কনে কতটুকু পেয়েছেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। খুলেই বলি। প্রত্যেকেই নিজের বা প্রিয়জনের বিয়ের অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে তুলতে নানা আয়োজন করে। বিয়ের ভেন্যু নির্ধারণ, সাজসজ্জা, বিয়ের খাওয়া-দাওয়া সব কিছুই পরিপাটি করে তুলতে চান। অন্য আট-দশটা বিয়ে থেকে আলাদা করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করেন। এত কিছুর পরও অনেক সময় তা আলোচনায় জায়গা করতে পারে না। অথচ তেমন কোন বাড়াবাড়ি না করেই রীতিমতো আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন এক যুগল। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বিয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির আলাদতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন ঐ যুগল। কিন্তু হঠাৎ করে কনের মা অসুস্থ হয়ে পড়লে সব কিছুই ওলোট-পালট হয়ে যায়। বিচারক বিয়ের জন্য অনুমতি দিলেও কোর্ট রুমে তখন আর বিয়ের পরিস্থিতি নেই। কনের মা-কে নিয়েই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এদিকে এই তারিখে বিয়ে না করলে বিয়ে পিছিয়ে যাবে আরও ৪৫ দিন। নতুন করে তারিখ নিয়ে বিয়ের জন্য দেড় মাস অপেক্ষা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা তাদের পরামর্শ দেন, আপনারা চাইলে ওয়াশরুমে বিয়ের পর্বটা সম্পন্ন করে নিতে পারেন। না হলে ৪৫ দিন অপেক্ষা করুন। সব দিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত বিয়ের ভেন্যু হিসেবে ওয়াশরুমকেই মেনে নেন বর-কনে। যাহোক, ঢাকায় বিয়ের মৌসুমে যাতে ভেন্যু সমস্যায় না পড়েন সে জন্য অভিভাবকরা বেশ আগে থেকেই ভেন্যুর বুকিং দিয়ে রাখেন। শুক্র-শনিবার থাকে চাহিদার শীর্ষে। এসব ভেন্যুতে একই দিন দুপুর এবং রাতে দুটো বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। শীতেই কেন বিয়ে? অনেকেরই ধারণা, বিয়ের জন্য উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। কিন্তু নবেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিয়ের তথাকথিত মৌসুম এড়িয়ে অন্য সময় বিয়ের অনুষ্ঠান করলে সাজ-পোশাক থেকে শুরু করে কমিউনিটি সেন্টার- সবখানেই খরচ অনেকটাই কমে যায়! লাখ কথা না হলে নাকি বিয়ে হয় না! এইসঙ্গে রয়েছে শত ঝামেলা। অনুষ্ঠান কেমন হবে সে অনুযায়ী ভেন্যু ঠিক করা, অতিথি তালিকা আর খাবারের মেনু ফাইনাল করা, বর-কনের পাশাপাশি আত্মীয়দের পোশাক কেনা, যানবাহনের ব্যবস্থা করা, দাওয়াতপত্র ছাপানো আর সেগুলো তালিকা অনুযায়ী সব আত্মীয়ের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত অনেক কাজ। বাজেটে প্রতিটি অনুষ্ঠানের জন্য ভেন্যু ভাড়া থেকে শুরু করে, দাওয়াতপত্র, বর-কনের পোশাক-গয়না, পরিবারের সবার পোশাক এবং অনুষঙ্গ, উপহার, মিষ্টি, খাবার, যাতায়াত, ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফারসহ সব কিছুই তালিকাভুক্ত করতে হবে। বিয়ের ভেন্যু নিয়ে বলছিলাম। ঢাকায় একসঙ্গে তিন থেকে পাঁচ হাজার লোকের এ্যারেঞ্জমেন্ট করতে পারে এমন ভেন্যু হলো চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, সেনাকুঞ্জ, রাওয়া কনভেনশন সেন্টার ও বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার। আবার তিন শ’ থেকে সাত শ’ লোকের অনুষ্ঠান আয়োজন করার মতো রয়েছে শাহীন হল, ফ্যালকন হল, সেফরন, ম্যারিয়ট কনভেনশন সেন্টার, এ্যাবাকাস কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি। চাইলে একটু ভিন্ন পরিবেশে বা ছোট পরিসরে নিজের বাসার ছাদে কিংবা বাগানে অনুষ্ঠান করা যায়। সেক্ষেত্রে ডেকোরেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। শামিয়ানা, চেয়ার, টেবিল, কাটলারি সেট, হটডিশ, লাইটিং, কার্পেটÑ সবই পাওয়া যায় ডেকোরেটর হাউসগুলোতে। বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য কিছু এলাকা বেশ জমজমাট। সেসব এলাকাবাসীর জন্য সোনায় সোহাগা। সেরকম এলাকা হলো ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর। মোটামুটি বাজেটের মধ্যে থাকে এখানকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া। উত্তরার মতো জায়গায় যেখানে বেশ কয়েক লাখ মানুষের বাস, হাতে গোনা ভেন্যু রয়েছে। তবে মধ্যবিত্তদের জন্য ভেন্যু পাওয়া একটু কঠিনই বটে। এখন পার্টি সেন্টার বা চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোও আমন্ত্রিত ব্যক্তির সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়। তিন শ’র নিচে তারা অর্ডার নেয় না। ফলে বর বা কনের অভিভাবক যদি হন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর, তাহলে কমপক্ষে ৩০০ জনের খাওয়ার আয়োজন তাকে করতেই হবে। এজন্য দুই লাখ টাকা বাজেট ধরে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। উত্তরায় টিভি নাটকের শুটিংয়ের জন্য এ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া পাওয়া যায়। হয়তো আগামীতে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্যও এমন কোন বন্দোবস্ত হবে। বৈচিত্র্যপিয়াসী সৌখিন বাঙালি ভবিষ্যতে যদি পিকনিক স্পটের মতো নৈসর্গিক শোভাম-িত সুপরিসর আকর্ষণীয় জায়গাজুড়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কবিতার প্ল্যাটফরম কবিতার প্ল্যাটফরম নামে সংগঠন গড়েছেন তিন কবি, তিন নারী। সংগঠনের চার বছর পূর্তিও হয়ে গেল। এ উপলক্ষে কাঁটাবনের ‘কবিতা ক্যাফেতে কবিতাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবিতার প্ল্যাটফরম। কবি রুবী রহমান, রবিউল হুসাইন থেকে শুরু করে মিনার মনসুর, আসাদ মান্নœান, কামরুল হাসান, জুয়েল মাজহার, নভেরা হোসেনসহ বেশ ক’জন কবি কবিতাপাঠ করেন। কবিতা নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা করেন অধ্যাপক আহমেদ রেজা। সেইসঙ্গে ছিল গান। ঢাকায় কত সাহিত্য সংগঠনেরই না জন্ম হয়, আবার নীরবে তার অবসানও ঘটে যায়। কবিতার প্ল্যাটফরম গড়ে ওঠা এবং পথ চলার গল্পটি সুন্দরভাবে শুনিয়েছেন ওই তিন কন্যার একজন সাবেরা তাবাসসুম। লিখেছেন: ‘আমরা তিন কবিতাবন্ধুজন, শাহনাজ নাসরীন, সাকিরা পারভীন, সাবেরা তাবাসসুম... একটা আন্তরিক কবিতা-আড্ডা চেয়েছিলাম এবং শুরুও করেছিলাম সেভাবে। যাদের কবিতা-কথা-গান কম শুনতে পাই তাদের শোনা, অগ্রজ-অনুজের সমাবেশ... এরকম একটা উদ্দেশ্য মনের ভেতর ছিল। হ্যাঁ, এটাও ছিল যে তারাও আমাদের লেখা শুনবেন। আমরা ঋদ্ধ হব পারস্পরিক সাহচর্যে। একটা সহজ বিনিময়ের চেহারা আমরা ভেবেছিলাম। পয়লা বছরে সেটা রক্ষা করতে পেরেছিলাম আমরা ঠিকঠাক। দ্বিতীয় বছরে এসে ধাক্কা খেতে হলো একটু। কারণ স্থানাভাব। শ্রদ্ধেয় তানভীর মোকাম্মেল স্যার শুরু থেকেই তার প্রতিষ্ঠানের (বাংলাদেশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট) অডিটোরিয়ামটি বিনে পয়সায় আমাদের ব্যবহার করতে দিয়েছেন। কিন্তু বিপদ ঘটল তখনই যখন স্যার তার প্রতিষ্ঠানটি সরিয়ে নিলেন ছোট পরিসরে। সেখানেও আমরা আসর করেছি। এবং এটি অস্বীকার করবার জো নেই, স্যার আজও আমাদের জন্য তার ওই পরিসরটি উন্মুক্ত রেখেছেন। অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই তানভীর মোকাম্মেল স্যারকে। যা বলছিলাম, স্থানাভাবের কারণে নতুন জায়গা খুঁজতে শুরু করলাম আমরা। কিন্তু ঢাকা শহরে বিনে পয়সায় কবিতাগ্রস্ত পাগলদের কে জায়গা দেবে! শ্রদ্ধেয় কবি রুবী রহমান তাঁর বাসায় বসার জায়গা দিলেন। সেখানে বিপত্তিটা এই ঘটে যে আমাদের সাহিত্যের স্নিগ্ধতম কবি মমতাময়ী মাতারূপে অবতীর্ণ হন এবং আমাদের জন্য উপর্যুপরি আপ্যায়নের ব্যবস্থায় কোমর বেঁধে লেগে পড়েন। রুবী আপার বাসায় একদল ক্ষুধার্ত কবি হয়ে নিয়মিত ঝাঁপিয়ে পড়তে আমাদের বাঁধছিল। আপাকে এই যন্ত্রণা দিতে আমরা অবশ্য এখনও ভালবাসি। স্থানাভাব পূরণে এবারে সাকিরার কর্মক্ষেত্র স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর কর্তৃপক্ষ তাদের শ্রেণীকক্ষ ও অডিটোরিয়াম ব্যবহার করতে দিয়ে আমাদের সহায়তা করলেন। এখানে আমরা তিনটি কবিতার আসর সাজালাম। তারপরও জায়গার ঝামেলা আমাদের পিছু ছাড়ে না। এখানে বিপত্তিটা বাঁধল দূরত্ব নিয়ে। কলাবাগান ধানমন্ডি এলাকা ছেড়ে সিদ্ধেশ্বরীতে আমাদের যাওয়া-আসা করাটা খানিকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াল। তাছাড়া এরই মাঝে ঘটে গেছে হলি আর্টিজানের ভয়াবহ বিপর্যয়। সব জায়গায় প্রবেশ-প্রস্থানে কড়া নজরদারি। আবার বাসা কেন্দ্রিক আসর শুরু হলো। রুবী রহমান আপা, শাহনাজ নাসরীন এবং সাকিরা পারভীন... এদের বাসায় আসর বসল। তবে, ওই যে বললাম, সকল বাড়িতেই কবিতা পাঠ ও আলোচনার আসর পূর্ণ হয়ে যায় খাবারের পরিবেশনে। তাছাড়া আলোচনার ধরনটাও একটু বেশি রকমের ঘরোয়া চেহারা পায়। আমাদের দুটো নিয়ত ছিল আসর করবার ব্যাপারে... নিজেদের গাঁটের টাকা খরচ করে আসর করব এবং যথাসম্ভব কম খরচে আসর করব। এটি পুরোপুরি রক্ষা করা দুষ্কর হয়ে গেল।...’ তারা পড়তেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি নবেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর সমাজের জন্য উদ্বেগজনক। ২০০৫ থেকে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। অথচ চলতি বছরের ১১ মাসে আত্মহত্যা করেছেন ৯ শিক্ষার্থী। শুধু গত ১২ থেকে ১৬ নবেম্বরের মধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন ৩ শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন একজন। অনুসন্ধান থেকে জানতে পারছি প্রেমঘটিত কারণ, পারিবারিক অভাব অনটন, বেকারত্ব, একাডেমিক চাপসহ বিভিন্ন বিষণœতার কারণে আত্মহননের মতো চূড়ান্ত পথ বেছে নিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। আত্মহত্যা প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দফতরকে আরও কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও হল ও বিভাগসমূহেও হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের প্রতি বাড়তি নজর দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারও হয়ে গেল সম্প্রতি ঢাবিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দফতর এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শেয়ার করে নিজেদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, হতাশা, বিষণœতার কথা। বিষয়গুলোর সমাধানে নানা দিক-নির্দেশনাও দিয়েছেন আলোচকরা। কিছুকাল আগে ফেসবুকে এসে এক কবি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় আত্মহত্যার কারণ নিয়ে ভেবেছিলাম। কিছু পয়েন্ট ছিল এমন: ১. প্রতিটি আত্মহত্যার পেছনেই থাকে এক বা একাধিক হন্তারক; অর্থাৎ ব্যক্তি ও পরিস্থিতি। তাই শুধু আত্মহত্যাকারী কিংবা আত্মহত্যার চেষ্টাকারীকে দোষারোপ করা অসমীচীন। ২. আত্মহত্যাকারীর ব্যাপারে দু’রকম অভিধা দেয়া হয়: সাহসী ও কাপুরুষ। কাপুরুষ এই অর্থে যে জীবনসংগ্রামে তিনি পরাস্ত, সঙ্কট থেকে পালিয়ে বাঁচলেন। আর সাহস না থাকলে একটা মানুষ (হোক না সে নিজে) মেরে ফেলার মতো কর্ম করা কি সম্ভব! সাহস না বলে বরং বলা যাক দুঃসাহস। ৩. আত্মহত্যাও হত্যাই বটে; এটি কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের বিষয়। নিজেকে মৃত্যুদ- দিয়ে সব জটিলতার অবসান ঘটানোয় ব্যক্তি নিজেই বিচারক। কিন্তু তিনি ভুলে যান যে তার জীবনাবসানের কারণে এক বা একাধিক ব্যক্তিরও জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্যকে কেন তিনি শাস্তি দেবেন? পুরোপুরি সুস্থ থাকলে তাই আত্মহত্যা অসম্ভব। ৪. মনোবিদরা বলেন, আত্মহত্যা প্রবণতা একটি অসুস্থতা। অনেকেরই এটি থাকে। তবে এরা কোন না কোন উপায়ে কাউকে না কাউকে আগেভাগেই তার বাসনার কথা জানিয়ে রাখে। ফলে সচেতন স্বজন উদ্যোগী হলে এই অপমৃত্যু রোধ করা সম্ভব। নানা ধরনের মানসিক চাপ নিতে হয় তরুণ শিক্ষার্থীদের। সেই সঙ্গে থাকে ভবিষ্যতের দুর্ভাবনা। পাশ করে বেরুনো বহু বড় ভাই যখন চাকরির সোনার হরিণ ধরতে ব্যর্থ হন, তখন অনুজপ্রতীম শিক্ষার্থীদের ভেতর কিছুটা হাতাশা কাজ করা অস্বাভাবিক নয়। একটু সাহস যোগানো, একটু মানসিক আশ্রয় ও প্রেরণা হয়ে ওঠা। কঠিন সময়কে মোকাবেলা করার জন্য মানসিক শক্তি অর্জনের জন্য ইতিবাচক কিছু করাÑ এসবের মধ্য দিয়ে একজন তরুণকে আবারও দুর্ভাবনার গোলকধাঁধা থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়। এই কাজ কারা করবেন? সহপাঠী বন্ধু ও সিনিয়র ভাই-বোনরাই করবেন। শিক্ষদেরও দায়িত্ব রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব করার মতো ইতিহাস রয়েছে, আর সে ইতিহাস গড়েছেন শিক্ষার্থীরাই। তাই পরাস্ত নয়, জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য আত্মশক্তির জাগরণ ঘটাতে তরুণ শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে সমাজের দায়িত্বশীল সংগঠনকেও। আপন মানুষের সান্নিধ্য পারে আত্মহত্যা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। ২৫ নবেম্বর ২০১৮ [email protected]
×