ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

ঈদের পর রবিবার এই কলাম লেখার দিন পর্যন্ত ঢাকা তার নিজস্ব ছন্দে ফেরেনি। শুক্র-শনির সঙ্গে রবিবার জন্মাষ্টমীর ছুটি পড়ে যাওয়ায় ঢাকার আলস্য কাটেনি। মহানগরীতে এমনিতেই সঙ্কট রয়েছে গণপরিবহনের। তারপরও সেগুলোর সিট তেমন ফাঁকা থাকতে দেখা যায় না। হাতিরঝিলের চক্রাকার গণপরিবহনের কথা অবশ্য আলাদা। কিছুক্ষণ পরপরই গাড়ি চলে আসে। এই বাসগুলোয় আসন ফাঁকা থাকতেই পারে ঈদের ১০ দিন পরও। কিন্তু মীরপুর বা উত্তরা থেকে যেসব বাস নগরীর দক্ষিণ দিকে চলাচল করে, সেগুলোও ভুগছে যাত্রীখরায়। এতে ধারণা করা যায় নগরবাসীর একটি বড় অংশ রবিবার জন্মাষ্টমীর ছুটিতে এবারের ঈদের ছুটির প্রান্তসীমা ধরে নিয়ে বেশ টানা একটা ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা আগেভাগেই নিয়ে রেখেছিল। অন্যদিকে ঢাকার আবহাওয়ায় শরতের সৌরভ ঠিক এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে রয়েছে ভাদ্রের অভদ্র গরম এবং অতর্কিতে হানা দেয়ার মতো ভাদরবাদর, মানে ভাদ্রবর্ষণ। তাই অসহনীয় গরমের পাশে হঠাৎ করে কিছুটা সময়ের জন্য বিশেষ করে সন্ধ্যায় ও ভোরে মনোরম হয়ে উঠছে আবহাওয়া। যা হোক, এই শহরে এখন কোন একটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন না পেয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত ও প্রধান একটি সড়কে দলে দলে বসে পড়তে পারে। সেজন্য শহরের শুধু ওই এলাকাই নয়, কয়েকটি এলাকার লোকজনের ভোগান্তি শুরু হয়ে যায়। সেদিন উত্তরায় যেমন হলো। এক গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় বসে পড়ল। হাজার হাজার শ্রমিক উত্তরা জসিমউদদীন রোড থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ জানায়। এ সময় আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্ত পর্যন্ত এবং জসিমউদদীন রোড থেকে বনানী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠান চালিয়ে মুনাফা তোলেন মালিকপক্ষ, অথচ কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদানের বেলায় যত অনিয়ম। তার জের কেন টানতে যাবে পাবলিক। এটা তো ওই প্রতিষ্ঠানের মামলা। বরং সরকারের পক্ষ থেকে এসব অনিয়মের জন্য মালিকের বিরুদ্ধে জরুরী এ্যাকশন নেয়াই সঙ্গত। তাহলে আর কাজে বেরুনো হাজার হাজার মানুষের অনির্ধারিত ভোগান্তি পোহাতে হবে না। নগরীর বাসযোগ্যতা ফেরাতে ঢাকার জীবন নিয়ে নানা সময় নানা ধরনের আলোচনা হয়ে থাকে, গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা নানা মত দেন। এমনি একটি আয়োজনে নগরীর বসবাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। এজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়েরও তাগিদ দেন তারা। বিশ্ব পানি সপ্তাহ উপলক্ষে ‘ওয়াটার, ইকোসিস্টেম এ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা আরও বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে মানুষের জীবনমান ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। এমনকি দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক উন্নয়নও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীর মতো সারা বাংলাদেশের মানুষ ও প্রাণিকুলের বসবাস ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। একে বাসযোগ্য করতে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেমকে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করার সময় এসেছে। এজন্য পানি ও স্যানিটেশন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, সচেতনতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগ জরুরী বলে তারা উল্লেখ করেন। কথা হলো ঢাকাকে বাঁচাতে আমরা কথা বলে আসছি নিত্যদিন। সেজন্য জোরেশোরে কাজ শুরু করা চাই। জনসংখ্যা ও যানবাহনের চাপে ও ভারে ভারাক্রান্ত ঢাকাকে বাঁচাতে এই মহাচাপ ও মহাভার কী কী উপায়ে কমানো যায় সেটিও বর্তমানের বড় ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া খাল-জলাশয়-লেক ভরাট করে যে পরিবেশ বিপর্যয়ের সূচনা করা হয়েছে তা থেকে রেহাই পাওয়ার পরিকল্পনাটিও বড় ব্যাপার। অনিয়মের স্থাপনা রাজধানীতে উন্নয়ন স্থাপনা গড়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। রাজউক তার দেখভাল করে। এখন অনিয়মের পাহাড় গড়ে উঠলে একদিনে সেটি ভাঙা অসম্ভব। সন্দেহ হয় এক যুগেও তা সম্ভব কিনা। আবাসিক এলাকায় যেসব স্পট, ভবন, ফ্ল্যাট ইত্যাদিতে অননুমোদিত/অবৈধভাবে গেস্টহাউজ, রেস্টুরেন্ট, হোটেলসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং ফুটপাথে অবৈধ র‌্যাম্প নির্মিত হয়েছে সেসব অননুমোদিত স্থাপনা/ব্যবহার বন্ধ করতে রাজউক অভিযান পরিচালনা করেছে গত সপ্তাহে। পুরান ঢাকার স্বামীবাগ ও ওয়ারী এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানে স্বামীবাগের মনির হোসেন লেনে নির্মাণরত ১০ তলা একটি ভবনের চারদিকে নির্দিষ্ট আবশ্যিক উন্মুক্ত জায়গা (সেটব্যাক) না রেখে ভবন বর্ধিত করে নির্মাণের কারণে মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বর্ধিত ভবনের কিছু অংশ ভেঙ্গে বাকি অংশ ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের জন্য মুচলেকা নেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অন্য একটি ভবনের কার পার্কিংয়ের স্থলে ইট, বালু, সিমেন্টের ব্যবসা পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে আগামী সাত দিনের মধ্যে অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য মুচলেকা নেয়া হয়। এছাড়া আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণে কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শোরুম সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়। বলাবাহুল্য গোটা ঢাকার অতি ক্ষুদ্র একটি এলাকার চিত্র এটি। প্রতিটি আবাসিক এলাকাতেই রয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ছোট হোক কিংবা বড়। এ হলো রীতিমতো ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার দশা। উচ্চবিদ্যাপীঠে ভর্তির স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখনও দেশের মানুষের কাছে সমীহজাগানিয়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক উচ্চবিদ্যাপীঠ। সারাদেশ থেকেই শিক্ষার্থীরা ঢাকায় আসে শিক্ষার্জনের জন্য। তাদের একটি বড় অংশ চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। একটি আসনের জন্য যদি ৩৮ জন ভর্তি প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তাহলে সোজা হিসাবে এমনটাই দাঁড়ায় যে ৩৭ জনেরই স্বপ্নভঙ্গ হবে। খবরের কাগজে সেদিন পড়লামÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছে ৩৮ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভর্তির আবেদন করেছে ‘ঘ’ ইউনিটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণীতে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ৫টি ইউনিটের মোট ৭ হাজার ১২৮টি আসনের বিপরীতে ২ লাখ ৭২ হাজার ৫১২ জন ভর্তিপ্রার্থী অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেছে। এ তো জানা কথাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ নামমাত্র, এমনকি আবাসিক হলে থাকা খাওয়ার ব্যয়ও বেশ কম। ঢাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য বিকল্প প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোয় পড়ার খরচ আকাশছোঁয়া। আবাসিক সুবিধাপ্রাপ্তিও অনুপস্থিত, অথবা অতি সীমিত। তাই সেখানে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের ভর্তি প্রায় অসম্ভব। প্রত্যেক বছরই এইচএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় সন্তানকে কোথায় ভর্তি করাবে। একদিকে ৩৭ জনের স্বপ্নভঙ্গ, অপরদিকে মাত্র একজনের স্বপ্নপূরণ। কী সাংঘাতিক মন খারাপ করে দেয়া অবস্থা! একযোগে তিন মঞ্চে নাটক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচায় অবস্থিত শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়েছিলাম। দেখি একযোগে তিন মঞ্চে নাটক প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রত্যেকটি মিলনায়তনই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের নাম শুনে আসছি সেই কত বছর আগে থেকে। এখনও নাটকটি মাঝে মধ্যে প্রদর্শিত হয়। ঢুকে পড়লাম টিকেট কেটে। দর্শক সংখ্যা ভালই। নাটক শুরুর আগে কবি ও নাট্যকার শুভাশিস সিনহার আহ্বানের কথাটি মনে পড়ল। তিনি ফেসবুকে পোস্ট লিখেছেন বেশ হৃদয়কাড়া। তুলে দিচ্ছি: ‘মঞ্চনাটকের শিল্পীরা একটু বেশি কষ্ট করেন। মঞ্চে অভিনয় করতে অন্যসব মিডিয়ামের চেয়ে একটু বেশি শ্রম, ধ্যান, মেধা খরচ করতে হয়। টিভিনাটক আর সিনেমার অভিনয়শিল্পীরাও তা দেন, তবে তাদের কাজটি রেকর্ডেড হয়ে যায়, স্থায়ী হয়, এরপর তা সময় থেকে সময়ে দর্শকের কাছে পৌঁছায়, অথচ মঞ্চনাটকের অভিনয়শিল্পীর জন্য একটা প্রযোজনা নিয়ে দুরূহতম জার্নি তো করতে হয়ই, তাকে এরপর প্রতিটি প্রদর্শনীতেই সেই জার্নির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অথচ একদিন কালান্তরে সে পঠিত ইতিহাস মাত্র। কত শক্তিমান মঞ্চাভিনেতা আজ এক একটা নামমাত্র। মঞ্চে এখনও এদেশে যে-মানের অভিনেতা-অভিনেত্রী পারফর্ম করেন, তা অবিশ্বাস্য। বিনাপয়সায় কাজটা করে যাচ্ছেন তারা! একদিন অনাগত কালে তারাও এক একটা নামমাত্র হয়ে থাকবেন, সেই সময়ের কেউ তাদের কোন অভিনয় দেখতে পাবেন না, শিল্পমাধ্যমটির এই নির্মম সত্য মেনে নিয়েও! মঞ্চের জন্য আপনি কিছু করেন না করেন, অন্তত তাদের নাটক দেখেন। প্রতিটি শো’তে হলভর্তি দর্শক দেখতে পাওয়াটাই তাদের আনন্দ। মঞ্চনাটক আপনাকে এই বিচ্ছিন্নতার কালে কিছুক্ষণের জন্য হলেও যৌথতার আনন্দ দেবে, নিজের খুব কাছে, একই তলে, সজীব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার চমকে চলমান শিল্প উপভোগ করবেন। ঘরে বসে সুইচ টিপে সব দেখার সুখের পাশাপাশি একটু কষ্ট ও সময় ব্যয় করে মানুষেরই কিছু কাণ্ডকারখানা কাছ থেকে দেখার রোমাঞ্চও অনুভব করুন। আপনার জীবনে এই মিডিয়াম স্বতন্ত্র জায়গা নেবে নিশ্চিত।’ সত্যিই তো। শুভাশিসের প্রতিটি কথার সত্যতা অনুভব করলাম মাসুম রেজা রচিত ও নির্দেশিত ‘নিত্যপুরাণ’ দেখতে গিয়ে। এই নাটক সম্পর্কে আমার কথা থাক, নাট্যশিল্পী ও বিশিষ্ট আবৃত্তিকার জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় কী লিখেছেন সেটি বরং পাঠ করা যাক। তিনি লিখেছেন: ‘শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’-এর ৭৫তম মঞ্চায়ন দেখতে যাব; একটু চাপা উত্তেজনা তো থাকবেই। মাসুম রেজা রচিত এ নাটকটি ১৮ বছর আগে প্রথম দেখি। তবে এবারের বাড়তি আগ্রহ এই কারণে, দ্রৌপদীর ভূমিকায় এ যাবত করা চারজন অভিনেত্রী একই মঞ্চে অভিনয় করবেন। মহাভারত, রামায়ণ- এ দুটি মহাকাব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানব সভ্যতার ওপর সর্বাধিক প্রভাব ফেলেছে এবং রচিত হয়েছে আর্যদের দ্বারা। উত্তর ভারতে বিজয়ী ক্লান্ত আর্যগণ বিন্ধ্যাচল অতিক্রম না করে উত্তরেই তাদের সা¤্রাজ্য সংহত করার চেষ্টা করে। তারই আখ্যান নিয়ে রচিত মহাভারত। ভূমিপুত্র দ্রাবিড়রা দক্ষিণে সরে যায়। কিন্তু দ্রাবিড়রা সভ্যতা ও ধাতব অস্ত্রের ব্যবহারে আর্যদের চেয়ে তখনও এগিয়ে। সুতরাং মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এই হীনম্মন্যতা থেকে মুক্তির চেষ্টা মহাভারতে বার বার করা হয়েছে বিভিন্ন আখ্যান বিধৃত করে। দ্রাবিড়দের রণকৌশলকে অবদমন করতে গিয়ে মাঝেমাঝে শুভঙ্করের ফাঁকিতে পড়েছেন মহাকবি কৃষ্ণপায়ন বেদব্যাস। এই সর্বপ্রভাবশালী মহা আখ্যানকে নিখুঁতভাবে ব্যবচ্ছেদ করে ভূমিপুত্র মহাবীর একলব্যের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মাসুম রেজা। একলব্যের বীরত্ব-সততা-নীতিবোধ, যুধিষ্ঠিরের নীতিহীন কৌশলগত সত্যবাদিতা, অর্জুনের মিথ্যা আত্মম্ভরিতা-নারীপ্রীতি, নকুল-সহদেবের ফাঁপা বাগাড়ম্বর, দ্রৌপদীর অতৃপ্তি-মনোবেদনা, সর্বোপরি দ্রোণাচার্যের রাজতোষণ-ধূর্ততার মুখোশ একে একে উন্মোচন করেছেন অসাধারণ যুক্তিজালে বেঁধে।’ রবীন্দ্র একাডেমীর রবীন্দ্রস্মরণ বাইশে শ্রাবণ চলে গেছে তাতে কি। রবীন্দ্রনাথকে স্মরণের জন্য যে কোনদিনই বেছে নেয়া যায়। তাছাড়া ঢাকায় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ভাল হলের কিছুটা অভাবও রয়েছে। পঁচিশে বৈশাখ বা বাইশে শ্রাবণে যেসব সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে চান তাদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। অথচ সবার ভেন্যু পাওয়া অসম্ভব একটি ব্যাপার। যা হোক, গত শনিবার জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে রবীন্দ্র একাডেমী একটি পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠান নিবেদন করল। রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা পরিবেশনের পাশাপাশি কবিগুরুর সৃষ্টির নানা দিক নিয়ে কথামালা গাঁথাÑ সব মিলিয়ে উপভোগ্য এবং শিক্ষণীয় অনুষ্ঠান। কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন ছিলেন প্রধান অতিথি, সভাপ্রধান আজিজুর রহমান আজিজ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বুলবুল মহলানবীশ, ফারুক মাহমুদ, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। সংগীত পরিবেশন করেন ঝর্না রহমান, গোলাম হায়দার, শাহরিয়া পিউ, অপর্ণা খানসহ বেশ ক’জন শিল্পী। আবৃত্তিতে রূপা চক্রবর্তী। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ [email protected]
×