ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে অভিনয়ের কথা স্বীকার নেইমারের!

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৩১ জুলাই ২০১৮

বিশ্বকাপে অভিনয়ের কথা স্বীকার নেইমারের!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপ ফুটবলে সফল হতে পারেনি ব্রাজিল। দলটির সেরা তারকা নেইমার প্রত্যাশিত পারফর্মেন্স প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন। যে কারণে তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কমতি ছিল না। বিশেষ করে ফাউলের পর তার অতিরঞ্জিত ডাইভ সারাবিশ্বে হৈচৈ ফেলে। এটাকে সবাই ‘অভিনয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় নেইমারের জনপ্রিয়তায় বেশ ভাটা পড়েছে। তবে বিশ্বকাপের পর অভিনয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন পিএসজি তারকা। কিন্তু এক বিজ্ঞাপনচিত্রে সেলেসাও তারকা জানিয়েছেন, তিনি কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অবশ্য তাকে যেভাবে ফাউল করা হয়েছে সেটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পায়ের চোটের কারণে তিন মাসের বেশি সময় বাইরে থাকার পর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরেন নেইমার। তবে ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে আশানুরূপ খেলতে পারেননি। সম্প্রতি ঘোষণা করা ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ারে’র ১০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও জায়গা হয়নি বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলারের। স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ‘জিলেটে’র জন্য তৈরি করা ৯০ সেকেন্ডের ভিডিওতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন নেইমার। দিয়েছেন ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের এ্যাকাউন্টে দিয়েছেন এবং ব্রাজিলিয়ান টেলিভিশনেও তা প্রচার করা হয়েছে। সেখানে নেইমার বলেন, আপনারা ভাবতে পারেন, আমি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। কখনও কখনও আমি তা করেছি। কিন্তু সত্যটা হলো মাঠে আমি ভুগেছি। আপনাদের কোন ধারণাই নেই, এর বাইরে কিসের মধ্যে দিয়ে গেছি আমি। সাবেক বার্সিলোনা তারকা বলেন, আমি যখন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলে চলে যাই, তার মানে এই নয় যে, আমি শুধু জিততেই পছন্দ করি। কারণ আমি এখনও আপনাদের হতাশ করতে শিখিনি। আত্মবিশ্বাসী নেইমার বলেন, যখন আমাকে অভদ্র মনে হয়, তার কারণ এটা নয় যে, আমি নষ্ট ছেলে। কারণ হলো আমি জানি না কিভাবে হতাশার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। সবার সমালোচনা মেনে নিয়ে নিজেকে নতুন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারও করেছেন। বলেছেন, আপনাদের মনে হতে পারে, আমি খুব বেশি পড়ে যাচ্ছি। তবে বাস্তবতা হলো, আমি ভেঙ্গে খান খান হয়েছি। এটা অপারেশন হওয়া এ্যাঙ্কেল মাড়িয়ে দেয়ার চেয়েও বেশি কষ্টকর। আমি আপনাদের সমালোচনা মেনে নিতে সময় নিয়েছি। সময় নিয়েছি নিজেকে আয়নায় দেখতে এবং নতুন একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে। আমি পড়ে গিয়েছিলাম, তবে তারাই উঠতে পারে, যারা পড়ে যায়। আপনারা আমার দিকে পাথর ছুড়ে মারতে পারেন অথবা সেটা বাইরে ছুড়ে আমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারেন। কেননা যখন আমি উঠে দাঁড়াই, পুরো দেশ আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ায়। কিছুদিন আগে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে নেইমার বলেছিলেন, আমি শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। ওই ঘটনায় (বিশ্বকাপ থেকে বিদায়) আমি সত্যিই বিমর্ষ হয়ে পড়ি। তবে এখন দুঃখ বোধ কাটিয়ে উঠেছি। আমার ছেলে, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সবাই এখানে রয়েছে। তারা কেউ আমাকে মলিন অবস্থায় দেখতে চায় না। রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিতে স্পেনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব গণমাধ্যমের জল্পনা কল্পনা। যে বা যারা এইসব রিপোর্ট লিখেছে আমার মনে হয়েছে তারা মামার কাছে মাসির গল্প বলছে। আমার জীবন সম্পর্কে আমার চেয়ে তারাই বেশি জানে। গত বছর রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিতে বার্সিলোনা থেকে পিএসজিতে যোগ দেয়া এই ব্রাজিলীয় তারকা বলেন, আমি যখন ১৭, ১৮ বছর তখনও শুধু ব্রাজিল দল নয়, ক্লাব ফুটবলেও চাপ নিয়ে খেলেছি। সব সেরা খেলোয়াড়রাই এমন চাপ অনুভব করেন। এমন চাপ মোকাবেলা করার জন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছি।
×