ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিয়ানমারে নির্যাতনের বর্ণনায় আবেগাপ্লুত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৪ মে ২০১৮

মিয়ানমারে নির্যাতনের বর্ণনায় আবেগাপ্লুত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ রোহিঙ্গা নারীদের মুখে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর নির্যাতন ও লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবেক বিশ্বসুন্দরী বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। সেসব ঘটনা শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। বুধবার বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা নারীদের কাছে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া মিয়ানমারে সামরিক জান্তা কর্তৃক নির্যাতনের কথা জানতে চাইলে রোহিঙ্গা গৃহবধূ সেতারা জানান, মিয়ানমারে মগরা তাদেরকে সীমাহীন নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের ভয়ে কিশোরী-যুবতীদের ঘর থেকে উঠানে বের হওয়া নিষেধ ছিল। ঘরের ভেতর প্রাকৃতিক কাজ সেরে নিত মেয়েরা। পাহারা দিয়ে মেয়ে মানুষদের রাতের বেলায় টিউবওয়েলে গোসল করানো হতো। মিয়ানমার সেনা সদস্য ও রাখাইনরা চোখের সামনে মা, বোনকে ধর্ষণ করেছে। এ জন্য তারা সপরিবারে এখানে পালিয়ে এসেছে। গত দুদিনের মতো বুধবারও রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে গল্প, হাসি আর খুনসুটিতে মেতে উঠেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াঙ্কা। জামতলী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ইংরেজীতে গণনা শিখিয়েছেন তিনি। কক্সবাজার সফরের তৃতীয় দিন বুধবার সকালে উখিয়ার জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান বলিউড অভিনেত্রী ও ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। সকাল সাড়ে ১০ টায় তাকে নিয়ে সেখানে পৌঁছায় ইউনিসেফের একটি দল। রয়েল টিউলিপ হোটেল থেকে মেরিন ড্রাইভযোগে ইউনিসেফের গাড়িতে করে সকালে জামতলী ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি। সেখানে নির্যাতিত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেন। ক্যাম্প এলাকায় বলিউডের অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে দেখতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ভিড় জমাতে দেখা গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করেন। এরপর বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান সাবেক বিশ্বসুন্দরী। ওখানে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান করে তারপর ফিরে আসেন। তবে মঙ্গলবারের মতো বুধবারও সাংবাদিকের প্রবেশাধিকার দেয়া হয়নি। রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, রাখাইন প্রদেশে টেলিভিশন দেখা নিষেধ থাকলেও উচ্চ শক্তিসম্পন্ন মোবাইল প্রায় রোহিঙ্গার হাতে হাতে। ভিসিডি ও মোবাইল নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখে রোহিঙ্গারা। ভারতীয় নানা ছবিতে ছেয়ে গেছে রাখাইন প্রদেশ। এ কারণে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া রোহিঙ্গাদের খুবই পরিচিত মুখ। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল জানান, বুধবার সকালে প্রথমে উখিয়ার জামতলী ও পরে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন প্রিয়াঙ্কা। বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার পর কক্সবাজার ত্যাগ করবেন বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা। উল্লেখ্য, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া আকাশপথে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর সড়কপথে তিনি ইনানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে বিকেল ৪টার দিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে এবং খোঁজখবর নিতে টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। দ্বিতীয় দিনে টেকনাফ ও তৃতীয় দিনে উখিয়ার জামতলী ও বালুখালী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন প্রিয়াঙ্কা।
×