ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভিমত ॥ নিজে নিয়ম মানুন অন্যকে শেখান

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৮ মে ২০১৮

অভিমত ॥ নিজে নিয়ম মানুন অন্যকে শেখান

আজকাল রাস্তায় নামলেই দেখা যায় অনিয়মের কারখানা। প্রতিটি জায়গায় অনিয়ম। অনিয়ম মানুষে-মানুষে। অনিয়ম যন্ত্রে। দুর্ঘটনার খবরও আজকাল যেন মানুষের সয়ে গেছে। প্রতিদিনই যে কাজ হয় তা না সয়ে কোন উপায় আছে! দুর্ঘটনা ঘটে- গাড়ি চালকেরা দোষ দেয় পথচারীর আর পথচারী কিংবা যাত্রীরা দোষারোপ করে গাড়ির চালককে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয় বরং সমগ্র দেশেই দুর্ঘটনার চিত্র ভয়াবহ। রাস্তা পারাপারে যেমন সাধারণ মানুষ মানে না কোন নিয়ম। গাড়ি চালকরাও তেমনি পাল্লা দিয়ে মানে না কোন সিগন্যাল বা আইন। ট্রাফিক পুলিশের হাত আর তাদের ব্যবহৃত লাঠিই যেন গাড়ি চালকের নিয়মের শেষ ভরসা। আর স্বাধীন দেশের মানুষ আমরা কিসের আন্ডারপাস, ওভারপাস, জেব্রাক্রসিং ব্যবহার! একটু সুযোগ পেলেই রাস্তা পাড়াপাড়ে দে দৌড়। ব্যস্ত রাস্তার মোড়েও যেন আমাদের একটু দাঁড়ানোর সময় নেই। কেননা, এখানে আজকাল হিসেব উল্টে যাচ্ছে। বিষয়টি এমন যে, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি নয়, বরং জীবনের চেয়ে সময়ের মূল্যই বেশি। নিশ্চয়ই আপনার ইন্স্যুরেন্স করা আছে, মানে জীবন বীমা। অথবা আপনার জীবনের থেকেও সময় দামী। সেক্ষেত্রে সময় বাঁচাতে জীবন গেলেও ক্ষতি কি! পুরনো প্রবাদ আবার মনে পরে যায়- ‘ছেলে মরেছে মরেছে, তার চোখ তো বেঁচেছে’। অর্থাৎ, অসাবধানতায় আপনার জীবন গেলেও ক্ষতি নেই, যদি তাতে আপনার লাভ হয়। আরে মানুষ, আপনিই যদি না থাকেন তাহলে কোথায় সময়, কোথায় জীবন! সব ওপারে। একটু ভেবে দেখুন। অথবা, একটুখানি দাঁড়িয়ে দৃশ্যটা দেখুন। সে দৃশ্য আপনার চোখে পড়বেই। হঠাৎ করেই ব্যস্ত সড়কে কানে মোবাইল ফোন নিয়ে পাড় হচ্ছেন অনেক আবালবৃদ্ধ মানুষ। অসতর্ক পাড়াপাড়, ফলাফল দুর্ঘটনা। কারণ, আপনার হাতে সময় নেই। ফেরার অনেক তাড়া। কেউ হয়তো আপনারই অপেক্ষায় বসে আছে। ব্যস্ত রাস্তা, ব্যস্ত আপনি, ব্যস্ত ড্রাইভার! যার ফলাফল অতি ভয়াবহ এবং যাকে আমরা দুর্ঘটনা হিসেবেই চিনি। অথচ, আপনি একটু সচেতন হলেই এই করুণ ফল থেকে নিস্তার পেতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তার প্রথমেই থাকছে নিয়ম মানা। আপনি নিশ্চয়ই প্রতিদিন খাবার খান, গোসল করেন, বিশ্রাম নেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এর সবই আপনি নিয়ম করেই করেন। অথচ রাস্তার মোড়টি যখন পাড় হবেন, তখন আর কোন নিয়মের বালাই নেই। একটু দাঁড়ান, ঠা-া মাথায় ভাবুন, নিয়ম মানুন, ডানে-বামে দেখে এরপর রাস্তা পাড় হোন। স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ আপনি, তাই নিজে নিয়ম মানুন এবং অন্যকে উৎসাহ দিন। এতে দুর্ঘটনা যেমন হ্রাস পাবে কমবে অপমৃত্যু, তেমনি দেশটিও ধীরে ধীরে নিয়মনীতির দ্বারা পরিচালিত হলে উপকৃত হবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। লেখক : সাংবাদিক [email protected]
×