ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে বোরো ধান কাটা শুরু ॥ কাটেনি কৃষকের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ১০ এপ্রিল ২০১৮

শেরপুরে বোরো ধান কাটা শুরু ॥ কাটেনি কৃষকের শঙ্কা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৯ এপ্রিল ॥ অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় আগাম বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে মাড়াইয়ের কাজ। এতে কৃষকদের ক্ষতি পোষানোসহ স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনায় তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে হাসির ঝিলিক। কিন্তু আগাম কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা কাটছে না তাদের। তারা আদৌ স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে বিরাজ করছে শঙ্কা। জানা যায়, গত বছর দু’দফায় অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের কৃষকদের সিংহভাগ বোরো ও আমন ধান। এছাড়া ব্লাস্ট ও নেক ব্লাস্ট রোগেও অনেক ক্ষতি হয়েছিল ফসলের। এতে অর্থনৈতিক মেরুদ- ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি গো-খাদ্যের সঙ্কটে পড়া কৃষকরা এবার বোরো চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে এ বছর বুকভরা আশা নিয়ে বোরো ধানে স্বপ্ন বুনেছেন তবে উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় কৃষকরা শুরু করেছেন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ উপজেলায় গত বছর এপ্রিলে অতিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার কৃষকের ২ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমির বোরো ধান আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ৫ হাজার কৃষকের ১ হাজার ১০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বোরো ও আমন মৌসুমে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৫ কোটি ৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার বোরো মৌসুমে ১৪ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন। উপজেলার বনগাঁও চতল গ্রামের কৃষক সোবাহান আলী বলেন, গেছে (গত) বছর ১০ কাঠা (৫০ শতাংশ) জমি বর্গা নিয়া বোরো আবাদ করছিলাম। সব ধান পানির নিচে তলাইয়ে গেছিল। ইবার আবাদ করছি, ধানের লক্ষণে কয় ফলনও ভাল হবে। কিন্তু কয়দিন আগে যে হিল (শিলা বৃষ্টি) পড়ছে আর রাইত হইলেই আকাশ গড় গড় করে ডাহে (ডাকে)। মনে হয় এবারও গতবারের মতোই হয়। এবারও যদি ধান তুলবার না পাই, তাইলে না খাইয়া থাহন লাগবো।’ সুড়িহারা গ্রামের কৃষক আবু হাশেম বলেন, ‘গত বছর ঝিনাইগাতী কৃষি ব্যাংক থাইক্যা (থেকে) ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়া সাড়ে ৪ একর জমিতে বোরো আবাদ করছিলাম। কিন্তু উজানের ঢলের পানিতে সব ধান নষ্ট হইয়া গেছিল। ’ এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল বলেন, এ উপজেলায় গত ২৯ ও ৩০ মার্চ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে কিছু এলাকায় ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা। তবে পুরোদমে ধান কাটার কাজ শুরু হতে আরও প্রায় ২ সপ্তাহ লাগবে।
×