ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পাবনায় ১৬ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৫ এপ্রিল ২০১৮

 পাবনায় ১৬ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী  এইচএসসি পরীক্ষা  দিচ্ছেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ৪ এপ্রিল ॥ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও ওরা ১৬ জন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চায়। তাই ওরা সব বাধা পেরিয়ে চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। এসব দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শ্রুতিলেখকের সহায়তায় শহরের শহীদ বুলবুল কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ ও জাগির হোসেন একাডেমি কেন্দ্র থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পাবনা সদর উপজেলার সিংড়া মহল্লার সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘মানব কল্যাণ ট্রাস্ট’ বাসিন্দা নরসিংদী জেলার শিহাবুদ্দিন ভুইয়া, মোঃ আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইল জেলার আবদুল্লাহ আল আমিন, আবুল কালাম আজাদ, গোপালগঞ্জের ইখতেয়ার মৃধা, জামালপুরের গোলাপ মল্লিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শাহাদত হোসেন, পঞ্চগড় জেলার রোকনুজ্জামান, দিনাজপুরের আব্দুল আজিজ, কুড়িগ্রামের ইমরান হোসেন, রাজশাহীর মনিরুজ্জামান, ময়মনসিংহ জেলার মোজাম্মেল, জয়পুরহাটের মোহাম্মদ আলী, বরিশালের হুমায়ুন কবির এবং পাবনার মনিরুল ইসলাম এ ১৬ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখে বলে শ্রুতি লেখকদের শোনান এবং শ্রুতি লেখকরা তা লিখে আবার তাদের পড়ে শোনান। এ কারণে তাদের জন্য তিন ঘণ্টার অতিরিক্ত মাত্র ২৫ মিনিট বেশি সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এ সময় যথেষ্ট নয় বলে তারা দাবি করেছেন। সে আরও জানান, শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখকদের অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন জটিলতা এবং বোর্ডের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালার কারণে পদে পদে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এ জন্য তাদের ৭ জনের এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। পরীক্ষার তিনদিন আগে তারা জানতে পারে বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখকের অনুমোদন দিচ্ছে না। নির্ধারিত একজনের ৫ হাজার টাকা করে ১৬ জন শ্রুতিলেখকের জন্য মোট ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করা থাকলেও নানা রকম তালবাহানা করে বোর্ড। অবশেষে পাবনার জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন এবং পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়সারুর ইসলাম বিষয়টা জানার পরে এ ব্যাপারে বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করেন। এরপর ঐ ৭ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার আগের দিন রাজশাহীতে গিয়ে বিষয়টা সুরাহা করেন। পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের লেখপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতিলেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধর শ্রুতিলেখক সম্মানী তো দূরের কথা লেখাপড়ার করার ন্যূনতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন। তিনি আরও জানান, এই ১৬ পরীক্ষর্থীর মতো আরও ৭২ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন।
×