ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশ ও গাছ খুঁটি হিসেবে ব্যবহার

নীলফামারীতে বিদ্যুতস্পৃষ্টে পাঁচ বছরে মারা গেছে ৮৯ কৃষক

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নীলফামারীতে বিদ্যুতস্পৃষ্টে পাঁচ বছরে মারা গেছে ৮৯ কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ সেচ নির্ভর বোরো আবাদের মৌসুম এলেই নীলফামারীতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মৃত্যুর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ উঠেছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উচ্চ ক্ষমতাস¤পন্ন বিদ্যুত লাইন এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে নড়বড়ে বাঁশ ও গাছকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। চলতি সময়েও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে কৃষক। তবে বিগত ৫ বছরে পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, জেলায় বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে ৮৯ কৃষক। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ১৫জন, ২০১৪ সালে ১৭জন, ২০১৫ সালে ১৯জন, ২০১৬ সালে ১৮জন ও ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০জন। তবে এলাকাবাসীর দাবি, মৃত্যুর সংখ্যা দেড় শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। কারণ বাকি ৬১জনের মৃত্যুর ঘটনা মীমাংসা করে দাফন করা হয়। যা পুলিশের খাতায় নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ ফসলি মাঠে বিশেষ করে সেচ নির্ভর বোরো আবাদে বিদ্যুত চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের সুখধন গ্রামে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রায় এক কিলোমিটার বাঁশ ও গাছকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে বিদ্যুত লাইন টেনে সংযোগ দেয়া হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি সংযোগের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে অবৈধভাবে। সরেজমিনে গেলে গ্রামের বুলবুল আলী জানান আমরা ১২টি সংযোগের জন্য ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। সুরেশ নামের অপর কৃষক বলেন, ৩০০ পরিবারের জন্য চার হাজার করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। চাহিদামতো টাকা না দিলে তারা বিদ্যুত সংযোগ দেয় না। এখন পাকা খুঁটির জন্য এক লাখ করে টাকা চেয়েছে বিদ্যুতের লোকজন। এ দিকে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের সুটিপাড়া গ্রামে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে মাটি ছুঁইছুঁই করে বিদ্যুতের তার ঝুলছে। ওই গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, পিডিবির বিদ্যুতের লাইনের বেহাল দশা। এসব দেখার কেউ নেই। নিয়ম থাক আর না থাক, তারা টাকা পাইলেই সংযোগ দিচ্ছেন। নাগালে থাকা ঝুলন্ত তারে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। নীলফামারীতে পিডিবির বিদ্যুত বিতরণ ও বিক্রয় সেবা পরিচালনা করছে নেসকো লিমিটেড।
×