ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

চলে এলো ডিজিটাল ওয়ালেট আইপে

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

চলে এলো ডিজিটাল ওয়ালেট আইপে

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশেও চালু হয়েছে মোবাইল ওয়ালেটভিত্তিক কেনাকাটার এ্যাপস। ‘আইপে’ নামের এ এ্যাপস ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সেবা ও পণ্য ক্রয় করে বিল পরিশোধ করা যাবে। স্মার্টফোন থেকে ব্যবহারকারীর ইচ্ছেমতো কেনাকাটা, লেনদেনের সব সুবিধা নিয়ে নতুন বছরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে বাংদেশের প্রথম ই-ওয়ালেট সেবা। বুয়েট, ঢাবি, শাবিপ্রবিসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠ নেয়া ৫০ জন ডেভেলপারকে দিয়ে উন্নয়ন করা এ্যাপটি মাধ্যমে বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, রিকোয়েস্ট মানি, ইউটিলিটি বিল এবং ব্যালান্স রিচার্জ করতে টপআপ করা যায়। মোট কথা যে কোনো স্থানে, যে কোন সময় টাকা আদান-প্রদানের নিরাপদ ও সহজ মাধ্যম হচ্ছে আইপে। অনলইন এপিআইয়ের মাধ্যমে লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা যায় বলে ডিজিটাল দস্যুর মোটেই বোকা বানাতে পারবে না আইপে ব্যবহারকারীকে। স্মার্টফোন থেকে গুগল প্লেস্টোরে গিয়ে আইপে এ্যাপ ডাউনলোড করে খুব সহজেই একটি ডিজিটাল ওয়ালেট খোলা যায় আইপেতে। এ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস সমর্থিত স্মার্টফোন ছাড়াও ওমনি চ্যানেল সুবিধা নিয়ে ফিচার ফোন থেকে ব্রাউজারের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় আইপে ওয়ালেট। এ্যাকাউন্ট খুলতে কেবল হিসাব ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, একটি ই-মেইল ও একটি পরিচয়পত্র আপলোড করলেই চলে। আর এ্যাকাউন্ট খুললেই উপহার হিসেবে ওয়ালেটে স্থিতি জমা হয় নগদ ৫০ টাকা। পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহারকারীর ব্যাংক হিসাবও সহজেই সংযুক্ত করা যায় আই পে এ্যাপ এ্যাকাউন্টে। এজন্য ব্যাংকে না গিয়ে এ্যাপের এ্যাড ব্যাংক- এ ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য নিবন্ধন করে আবেদন করলেই সই। সবই হবে এ্যাপের মাধ্যমে। ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তাও থাকছে নিশ্চিত। আইপে জানিয়েছে, ৩ কার্য দিবসে ব্যাংকে না যেয়েই ব্যাংক হিসাব সংযুক্ত করা যায়। দিনে দিনেই স্থিতি স্থানান্তর সুবিধাও রয়েছে এতে। আইপের সঙ্গে আপনার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট এ্যাড করে আইপে ওয়ালেটে টাকা জমা করা যাবে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি ব্যাংকের মাধ্যমেই আইপে লেনদেন সুবিধা চালু হলেও আন্তর্জাতিক লেনদেন শুরুর প্রক্রিয়াও শুরু করতে যাচ্ছে আইপে। খুব শিগগিরই আইপে এ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা পেপ্যালের টাকা আইপেতে স্থানান্তর করতে পারবেন; সেই সঙ্গে পেপ্যাল ভেরিফিকেশন করতে পারবেন। ‘আইপে বাংলাদেশে একটি রিয়েল টাইম অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম। অনলাইন ছাড়াও দোকানে থাকা ছোট একটি স্ক্যান কোড স্ক্যান করে আইপের মাধ্যমে যে কেউ বিল পরিশোধ করতে পারবেন। প্রতিদিনই এই সেবার পরিধি বাড়ছে। সেবাটির মাধ্যমে নগদ অর্থ ছাড়াই যে কোন ধরনের লেনদেন, বিল পরিশোধ, বিভিন্ন ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, কাউকে টাকার অনুরোধ পাঠানো, ইউটিলিটি বিল এবং টপআপ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন ব্যবহারকারীরা। ব্যবহারকারীদের কাছে নিরাপদে যখন-তখন স্থানে টাকা পাঠানোর সহজ মাধ্যম হয়ে উঠছে আইপে। আইপের মাধ্যমে কোন ব্যাংকে টাকা পাঠাতে ১ দশমিক ৫ শতাংশ চার্জ কাটে। এ ছাড়া ‘সেন্ড মানি’ সেবার জন্য কোন চার্জ কাটে না। আইপের মাধ্যমে কোন ব্যাংকে টাকা পাঠাতে ১ দশমিক ৫ শতাংশ চার্জ কাটে। এ ছাড়া ‘সেন্ড মানি’ সেবার জন্য কোন চার্জ কাটে না। আর এটি এমন একটি মাধ্যম যেখানে হ্যাকাররা সহজে হানা দিতে পারে না। আইপের মাধ্যমে গ্রাহকরা যে কোন পণ্য কিনে অনলাইনে বিল পরিশোধ করতে পারবেন। বিল পরিশোধের জন্য এখন থেকে আর নগদ অর্থের প্রয়োজন হবে না। নগদ টাকা ছাড়াই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কেনাকাটা ও অন্যান্য বিল পরিশোধ করা যাবে এই এ্যাপের মাধ্যমে। অল্প দিনের মধ্যেই এই ওয়ালেট থেকে বিদ্যুত, পানির বিলও পরিশোধ করা যাবে। ইতোমধ্যে ফ্রেশ, ল্যাভেন্ডার সুপার স্টোর, লারিভ, এজি ফুড, কিকসা, সিন্দাবাদ অথবা বারকোড, কিভাহান, বিন্নি, ফ্লেভারাজ, দ্য ফুমেজ, ট্রাভেলস অনলাইন, ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট সেন্টার, আরিয়ান হলিডেস, কাবাব প্যালেস, দিলি দরবার, আইকিউ লাইফ স্টাইল, শি এ্যান্ড হি কনসোর্টিয়ামসহ ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠানে মিলছে আইপে সেবা। প্রতিদিনই এ সেবার পরিধি বাড়ছে। সেবাটির মাধ্যমে নগদ অর্থ ছাড়াই যে কোন ধরনের লেনদেন, বিল পরিশোধ, বিভিন্ন ব্যাংক এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, কাউকে টাকার অনুরোধ পাঠানো, ইউটিলিটি বিল এবং টপআপ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন ব্যবহারকারীরা। ব্যবহারকারীদের কাছে নিরাপদে যখন তখন স্থানে টাকা পাঠানোর সহজ মাধ্যম হয়ে উঠছে । ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয় আইপের আত্মপ্রকাশের আয়োজন। প্রথম ২ বছর আইপের এ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের কাজ করেন ডেভেলপাররা। নতুন বছরে আরও চমৎকার কিছু সেবাসহ আত্মপ্রকাশ করব দেশজুড়ে। পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে আইপে বাংলাদেশ ব্যাংকের পিএসপি লাইসেন্সপ্রাপ্ত। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করে আইপে। তাই আইপে এ্যাপ লগইন করার সময় আপনাকে পাসওয়ার্ড দিতে হবে। এর পর ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড দিতে হবে এবং প্রতিবার লেনদেনের সময় পিন নম্বর দিতে হবে। ফলে বাংলাদেশে উন্নয়ন করা হলেও আইপে বিশ্বমানের ও নিরাপদ একটি ডিজিটাল ওয়ালেট।
×