ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

চারুকলায় ‘জার্নি বাই রিক্সা’ শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

চারুকলায় ‘জার্নি বাই রিক্সা’ শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যালারিতে প্রবেশ করেই চোখে পড়বে একটি রিক্সার পেছনের অবয়ব। সেখানে কাঠের ওপর খোদাই করে আঁকা হয়েছে মুখোমুখি দুটি কবুতর। তার নিচে মানুষের চোখ। তারও নিচে রয়েছে একটি পদ্মফুলের চিত্র। দেয়ালের গা ঘেঁষে শোভা পাচ্ছে কাঠের ওপর খোদাইকৃত পদ্মফুলের ওপর পৃথিবীর ছবি, পাশে দুটি ময়ূর। একইপাশে রয়েছে দুটি মোরগের ছবি। যার নিচে লেখা রয়েছে মা পরিবহন। কোন ছবিতে আপনার সন্তানকে স্কুলে পাঠান, আবার কোনটাতে কাঠ খোদাইয়ে লেখা হয়েছে মায়ের দোয়া। রিক্সার পেছন ও সামনের দিকের এসব ছবি কোন এক সময় সাড়া জাগিয়েছিল। বাংলাদেশের নগরচিত্রের ঐতিহ্যবাহী এসব চিত্র কাঠ খোদাই করে তৈরি করেছেন এ প্রজন্মের শিল্পী এ বি এম রোকন উজ জামান সোহেল। এসব ছবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার জয়নুল গ্যালারি ১এ ‘জার্নি বাই রিক্সা’ শীর্ষক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়েছে বুধবার। এদিন বিকেলে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কারুশিল্প বিভাগের চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন মিল্টন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অঙ্কন চিত্রায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পী এবিএম রোকন উজ জামান সোহেল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, শিল্পী এ বি এম রোকন উজ জামান সোহেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের কারুশিল্প বিভাগ থেকে এম এফ এ পাস করার পর এখন নিজস্ব শৈলীতে শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেছে। বাংলাদেশের নগরচিত্রের ঐতিহ্যবাহী এক বিশেষ ধারা রিক্সা চিত্র অনুষঙ্গ তার শিল্পকর্মে প্রকাশ পেয়েছে। তরুণ-উদীয়মান এ শিল্পী কাঠ খোদাই করে তার ওপর উজ্জ্বল রং ব্যবহার এবং সে সঙ্গে রিক্সার কিছু যন্ত্রাংশ সংযোজন করে রিক্সাচিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছে ভিন্ন এক আঙ্গিকে। তার এই শিল্প প্রয়াস নিশ্চয়ই শিল্পানুরাগীদের কাছে বিশেষভাবে মূল্যায়ন হবে। বাংলাদেশের কাঠ ও দারুশিল্পের ভিত্তিভূমি গ্রামীণ সমাজ, যা থেকে গড়ে উঠেছে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। প্রদর্শনীতে প্রতিদিনের দেখা নগরকেন্দ্রিক রিক্সাচিত্র থেকে নানারকম অবয়ব নিয়েছে। কাঠ খোদাই করে কোন অবয়ব বিমূর্ত, কোনটা স্পষ্ট, কোনটা পরিচিত স্থাপনা ইত্যাদি সোহেলের কাছে উপলক্ষ মাত্র। এগুলো তার বিষয় নয়। বিষয়টা হচ্ছে নিজস্ব অনুভূতির প্রকাশ। আর তাই তো কখনও সমাজ সচেতনতার সেøাগান, সোহেল আর্ট বা নিজেকে সোহেল মিস্ত্রিরূপে পরিচিতি ঘটায় দক্ষতার মধ্য দিয়ে। কারুময় কাজে দক্ষতার মধ্যে যে অপার সৌন্দর্যভাবনা আছে, তার কাজ দেখে তা বোঝা যায়। সে দারুশিল্পকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছে নতুন মাত্রায়। অর্থাৎ নতুন বৈচিত্র্য ও রূপময় মাধুর্য, ফর্ম, রঙের স্পর্শে ও আধুনিকতায়। প্রদর্শনী চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীর জন্য খোলা থাকবে। ঊনসত্তরের শহীদদের স্মরণ ॥ গান আর কথামালায় ঊনসত্তরের শহীদদের স্মরণ করা হয় আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট অজয় দাসগুপ্ত। অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি করেন মহিউদ্দিন শামীম। দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেয় স্বরচিত্র আবৃত্তি চর্চা ও বিকাশ কেন্দ্র। এবং গণসঙ্গীত পরিবেশন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
×