ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

ব্যস্ত জীবনে মাত্র ৫ মিনিট! এই সহজ অভ্যাসগুলোই বাঁচাতে পারে জীবন

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ২ জুলাই ২০২৫

ব্যস্ত জীবনে মাত্র ৫ মিনিট! এই সহজ অভ্যাসগুলোই বাঁচাতে পারে জীবন

ছবি: সংগৃহীত

হার্টের সুস্থতা কেবল কঠোর ডায়েট বা ভারী ব্যায়ামের উপর নির্ভর করে—এই ধারণাটি অনেকের মনে গেঁথে আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিকিৎসক ড. নিকোলাস এনওয়াবুয়েজে, যিনি অনলাইনে “দ্য ফিটেস্ট ডক” নামে পরিচিত, বলছেন: প্রতিদিনের মাত্র ৫ মিনিটের কিছু ছোট অভ্যাস আমাদের হৃদযন্ত্রকে রক্ষা করতে এবং লক্ষ লক্ষ প্রাণ বাঁচাতে পারে।

তিনি এমন ৫টি সহজ অভ্যাসের কথা জানিয়েছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে:

১. প্রতিটি খাবারের পর ৫ মিনিট হেঁটে নিন
খাওয়ার পর বিশ্রাম নেওয়া স্বাভাবিক হলেও স্থিরভাবে বসে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট-সমৃদ্ধ খাবারের পর। ড. নিকোলাস বলেন, প্রতিবার খাবারের পর ৫ থেকে ১০ মিনিট হাঁটলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ও দেহে প্রদাহ কমে যায়—দুটোই নীরব হৃদরোগ সৃষ্টিকারী। মাত্র ২ থেকে ৫ মিনিট হেঁটে নিলেও রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক—যা দীর্ঘমেয়াদী হৃদরোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে।

২. সকালে সূর্যের আলো গায়ে লাগান
সকালের সূর্যালোক কেবল ভিটামিন ডি-র উৎস নয়, এটি শরীরের ঘুম-জাগরণ চক্র (circadian rhythm) নিয়ন্ত্রণে রাখে। ড. নিকোলাসের মতে, ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই সূর্যের আলোয় শরীরকে উন্মুক্ত করলে ঘুমচক্র স্বাভাবিক হয়, যা উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক চাপ হ্রাস করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঘুমচক্রের গোলমাল হৃদরোগের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। সকালবেলা সূর্যালোকের সংস্পর্শ রাতে ভালো ঘুমে সহায়তা করে, যার ফলে হৃদযন্ত্র বিশ্রাম পায়।

৩. খাবার গরম বা সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিক বাদ দিন
গরম খাবার প্লাস্টিকে রাখলে BPA ও phthalates-এর মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক বের হয়, যা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং হার্টের জন্য ক্ষতিকর। ড. নিকোলাস পরামর্শ দেন, প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করতে। এমনকি “মাইক্রোওয়েভ-সেফ” লেখা প্লাস্টিকেও রাসায়নিক মিশে যেতে পারে খাবারের সঙ্গে। BPA রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং ধীরে ধীরে ধমনিকে শক্ত করে তোলে—যা হৃদরোগের গোপন কারণ।

৪. প্রেরণার পেছনে না ছুটে অভ্যাস গড়ুন
স্বাস্থ্য শুধু বড় সিদ্ধান্তে নয়, ছোট অভ্যাসেই তৈরি হয়। ড. নিকোলাস বলেন, “ফোনে কথা বলার সময় দাঁড়িয়ে থাকা, সিঁড়ি ব্যবহার করা, সপ্তাহে একদিন খাবার প্রস্তুত করা—এই ছোট ছোট কাজই দীর্ঘমেয়াদে হার্টকে সুরক্ষা দেয়।” প্রতিদিনের “মাইক্রো-হ্যাবিট” দীর্ঘস্থায়ী ফল আনে।

৫. একটানা বসে না থেকে মাঝে মাঝে নড়াচড়া করুন
দীর্ঘ সময় বসে থাকাও হৃদরোগের স্বাধীন ঝুঁকি হিসেবে কাজ করে—even যদি আপনি দিনে একবার ব্যায়াম করেন। প্রতি ৩০ মিনিটে ২–৩ মিনিট হালকা চলাফেরা (যেমন পানি খাওয়া, স্ট্রেচিং, হেঁটে আসা) করলে রক্ত চলাচল সচল থাকে, ইনসুলিন প্রতিরোধ কমে, এবং রক্ত জমাট বাধার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি বসে থাকা ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৩৪% বেশি—যদি তারা নিয়মিত ব্যায়ামও করেন।

নোভা

×