ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ঘণ্টায় ১৫ বার বমি! বিরল রোগে হতে পারে এমনটা

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ২ জুলাই ২০২৫

ঘণ্টায় ১৫ বার বমি! বিরল রোগে হতে পারে এমনটা

একটু বমি হলেই শরীর কাহিল হয়ে যায় অনেকের। মাথা ঘোরে, খাবার খেতে ইচ্ছে করে না, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কল্পনা করুন, কেউ যদি প্রতি ঘণ্টায় ১৫ বার বমি করেন, তাহলে কী ভয়ংকর অবস্থা হতে পারে! এমনই এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এক তরুণী শারিসে জেরোনিয়ান, যিনি ভুগছেন এক বিরল রোগে- সাইক্লিক ভমিটিং সিনড্রোম (CVS)।

শারিসে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তিনি জানান, “একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শরীরে এমন বমি শুরু হয়, যা সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও ফিরে আসে। সবচেয়ে খারাপ সময়টা হয় যখন ঘণ্টায় ১৫ বার পর্যন্ত বমি শুরু হয়।”

সাইক্লিক ভমিটিং সিনড্রোম (CVS) এমন একটি বিরল শারীরিক অবস্থা, যেখানে রোগী বেশ কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত বারবার বমি করতে থাকেন, কিন্তু তার মাঝে শরীর আবার স্বাভাবিক থাকে।

চিকিৎসকদের মতে, এই রোগটি আন্ত্রিক ও স্নায়ুতন্ত্রের বোঝাপড়ার ঘাটতি থেকে হয়। এটি পৃথিবীর প্রায় ২ শতাংশ মানুষের মধ্যে দেখা যেতে পারে এবং মূলত নারীরা বেশি আক্রান্ত হন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, যাদের মাইগ্রেন আছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।

রোগ বেড়ে যায় যেসব পরিস্থিতিতে:

  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা

  • ঋতুচক্র শুরু হওয়ার আগে

  • দীর্ঘ পথযাত্রা বা মোশন সিকনেস

  • অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম

শারিসে জানান, মানসিক কষ্ট বা দুশ্চিন্তা বাড়লে, কিংবা ঋতুচক্র শুরুর আগেই তাঁর এই রোগ তীব্র হয়ে ওঠে। তার ফলস্বরূপ, ওজন কমে যায়, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও ঘিরে ধরে।

তাঁর ভাষায়, “সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, বমির সময় এমনকি মৃত্যু কামনাও করি। কিন্তু সেই সময়টাতেও থামে না বমি!”

চিকিৎসকরা প্রথমে রোগটি ধরতে পারেননি। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০২৩ সালে CVS রোগ শনাক্ত হয়। তারপর থেকেই চিকিৎসা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ বুঝতে পারলে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে রোগের তীব্রতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

বাংলাদেশে CVS রোগ এখনো খুব পরিচিত না হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, মাইগ্রেন বা হরমোনাল সমস্যায় ভোগা নারীদের মধ্যে রোগটি দেখা দিতে পারে। যেকোনো ব্যতিক্রমধর্মী বমির সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।

মিমিয়া

×