ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শহরের বাইরের তারুণ্যের সফলতার জয়গান

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

শহরের বাইরের তারুণ্যের সফলতার জয়গান

হিমেল হক, মূলত প্রচ্ছদ নিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি পত্রিকায় গল্প-উপন্যাসের ইলাস্ট্রেশন, লেটারিং-লোগো, টি-শার্ট ডিজাইন, নাটকের টাইটেল লোগো করে থাকেন। পাশপাশি দুটো ফন্টের কাজ শেষ করেছেন, ইচ্ছা আছে দ্রুত রিলিজ দেয়ার। তবে কাজে প্রচ্ছদ আর লেটারিংকে প্রাধান্য দেন বলেই ফোনালাপে জানালেন। এবারের ডি-প্রজন্মে ঢাকার বাইরে থেকে কাজ করা তরুণদের সফলতার গল্প থাকছে, উদাহরণ এই হিমেল হকই। সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার নামী-দামী প্রচ্ছদকারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই তরুণ যা করেছেন শুনলে ধাক্কাই খেতে হয়। কাজ শুরু করেছেন কবে, কীভাবে, কোন প্রেক্ষাপটে- এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বভাবজাত হাসিতেই বললেন, ‘কাজ শুরু বলতে আসলে ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা থেকে। আমি চাইতাম এমন কিছু কাজ যেখানে কনসেপ্ট নিয়ে খেলা যায়। সে রকম একটা ভাবনা নিয়ে শুরু করেছিলাম। তখন আসলে ওভাবে ডিজাইনের কিছুই বুঝতাম না, নতুন মাত্র কম্পিউটার কিনেছি। ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় হয়নি। বিভিন্ন সোর্স থেকে শেখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আক্ষেপ হলো, আমরা যারা ঢাকার বাইরে থেকে ক্রিয়েটিভ কোন কাজ করি তাদের পথ দেখানোর মতো কেউ নেই, নিজে নিজে পথ তৈরি করে আসতে হয়।’ এতক্ষণে শুনলাম আক্ষেপের কথা, জানলাম ঢাকার বাইরে থেকে কাজের অসুবিধাগুলো। হিমেল হক জানালেন আরও তথ্য ‘আমি ছোটবেলা থেকে প্রচুর বইয়ের মধ্যে বড় হয়েছি। নতুন বই কিনলে পাতা উল্টায়ে দেখতাম প্রচ্ছদ কার করা, মূলত সেখান থেকেই ভাল লাগাটা শুরু। কিন্তু তখন প্রচ্ছদ জিনিসটা কি সেটা ডিপলি জানতাম না! এমন সময় বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ডের প্রচ্ছদ চেয়ে বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে, ওদের সঙ্গে কথা বললে ওরা আমাকে কোনরকম অভিজ্ঞতা ছাড়াই সুযোগ দেয়। এটা হয়ত ২০১৫ বইমেলার আগে। তখন থেকেই মূলত প্রচ্ছদ করছি। এখন পর্যন্ত প্রচ্ছদ করেছি চারশ’র কাছাকাছি। সেগুলোর মধ্যে নির্মলেন্দু গুণ, সাজিয়া সুলতানা পুতুল, কাদের পলাশ, চন্দন আনোয়ার, মাসুদুল হক অন্যতম।’ হিমেল হকের রয়েছে একটি এডফার্মও, সেটার গল্পও শুনলাম তার মুখে। ‘প্রচ্ছদে আসার আগে থেকে আমার এডফার্ম ‘কালারস্’। একদম খেয়ালের বশে শুরু, তখন অবশ্য সবার মাঝে অনলাইন থেকে ডিজাইন করে নেয়ার ধারণাটা সেভাবে তৈরি হয়নি। তাই প্রথমে আমাদের কাজ পেতে সময় লেগেছ। ধীরে ধীরে মানুষের ধারণাটা বদলেছে, আমরাও চেষ্টা করেছি নতুন নতুন কনসেপ্টে কাজ করার। এখন আমরা কালারস্ থেকে প্রিন্ট মিডিয়ার বিজ্ঞাপন, টি-শাট, ওয়েবসাইট, লোগো করে থাকি।’ হিমেল হক কাজে আনন্দ পান প্রচ্ছদ তৈরি করে। প্রচ্ছদ আমার প্রথম পছন্দদের জায়গা আর এটাই আমাকে এখানে এনেছে। প্রচ্ছদের সফলতার কথায় যেমন তিনি সন্তুষ্ট তেমন ‘ঢাকার বাইরে কোথা থেকে কাজ করেন আর কেমন সাড়া প্রশ্নের উত্তর ‘আমি কিংবা আমার ফার্মের পুরো কাজটাই অনলাইনকেন্দ্রিক। ঢাকার বাইরে বসে শুধু ডিজাইন বা অন্য যে কোন ক্রিয়েটিভ কাজ করতে গেলে প্রচুর স্ট্রাগলের ব্যাপার। সমন্বয়ের অভাবে ঢাকার বাইরের অনেক ভাল ভাল ডিজাইনার হতাশ হচ্ছে।’ যে কোন কাজ নিজে উপভোগ না করতে পারলে সেটা কখনও মানসম্মত জায়গায় পৌঁছাবে না। ডিজাইনটা তিনি উপভোগ করেন যার কারণে ঢাকার বাইরে বসে অনেক সমস্যা পাস কাটিয়েও এই জায়গায় দাঁড়াতে পেরেছেন বলে ধারণা হলো। বদলে যাবার গল্পগুলো বুঝি এ রকমই হয়... ডি-প্রজন্ম ডেস্ক
×