ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গোমতীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৩০ অক্টোবর ২০১৭

গোমতীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ও দাউদকান্দি, ২৯ অক্টোবর ॥ কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নারান্দিয়া পশ্চিমপাড়ে গোমতী নদী রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। ফলে কয়েক দিনের ব্যবধানে এখানে চিত্র পরিবর্তন হচ্ছে। ভাঙ্গনের ভয়াবহতায় বিভিন্ন বসতবাড়ি ও গাছ-গাছালি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরও অনেক বসতবাড়ি, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ। গোমতীর ভাঙ্গনে একের পর বিলীন হচ্ছে উপজেলার কলাকান্দি, ভিটিকান্দি নারান্দিয়া ও জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতবাড়ি, গাছ-পালা ও রাস্তা-ঘাট। বিগত মৌসুমগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন স্থানে ইটের ব্লক, বালির বস্তা ফেলা ও ডুবন্ত বাঁশ নির্মাণ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। স্থানীয়ভাবে লোকজনও বাঁশের বেড়া ও নানা কিছু ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে ভাঙ্গন থামছে না। এদিকে আকস্মিক এ ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। দক্ষিণ নারান্দিয়ার পশ্চিমপাড় ছাড়াও আফজালকান্দি, খানেবাড়ী গৌবিন্দপুর, উত্তর ও দক্ষিণ মানিকনগর, ঘোষকান্দি, দাসকান্দি, হরিপুর বাজার, দুলারামপুর, দড়িকান্দি, নারায়ণপুর, হাইধরকান্দি, আসমানিয়া, নারান্দিয়া পূর্বপাড়, রসুলপুর, জিয়ারকান্দি, শোলাকান্দি ও লালপুর গ্রামের সংলগ্ন অংশেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙ্গন রোধে ন্যূনতম কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার দুঃখ গোমতী নদী; এখন তিতাসের দুঃখে পরিণত হয়েছে। গোমতীর এ ভয়ঙ্কর থাবায় ক্ষতবিক্ষত নদীর পশ্চিমপাড়ের তোফাজ্জল মাস্টার, জোহর আলী, মোকবুল আহমেদ, সাদেক হোসেন, রুহুল আমিন, ফজলু হক, নায়েব আলী সরকার, জাকির হোসেন, আবুল কাশেম, আবুল হাসেম, তোতা মিয়া, বিল্লাল হোসেন, নাছির উদ্দিন, আব্দুল মালেক এবং নদীর পূর্বপাড়ের সিদ্দিকুর রহমান, কবির হোসেনের বাড়িসহ প্রায় ৫০টি পরিবার এবার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। গত তিন বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গোমতী নদীর ভাঙ্গনে উপরে উল্লেখিতগ্রামগুলো ছাড়াও দাসকান্দি বাজার, ভিটিকান্দি ইউনিয়ন অফিস, খেলার মাঠ এবং হরিপুর বাজার বিলীন হয়ে যায়। একাধিক স্থানের বেড়িবাঁধও ভেঙ্গে যায়। সংসদ সদস্য আলহাজ আমির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং উর্ধতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যাদের কোন ভিটেমাটি নেই তাদের খাসজমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, সংসদ সদস্য আমির হোসেন ভূঁইয়া ও স্থানীয় নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন ভাঙ্গনকৃত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতপূর্বক সহযোগিতার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
×