ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশনের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন

মিয়ানমারের প্রতি সুষমা স্বরাজ ॥ রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমারের প্রতি সুষমা স্বরাজ ॥ রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে হবে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দেয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এদিকে রোহিঙ্গা সঙ্কটে ভারতের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, রাখাইনে স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মিয়ানমারকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। রবিবার বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ পরামর্শক কমিশনের বৈঠক শেষে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকায় আসার পর রবিবার উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ কমিশনের বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জ্বালানি ক্রয় বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন সুষমা স্বরাজ। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও সৌজন্য বৈঠক করেছেন। রবিবার বিকেলে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ পরিদর্শক কমিশনের বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আর বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুষমা স্বরাজ বলেন, আমরা চাই রোহিঙ্গারা নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক। তবে সেখানে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। রাখাইনে অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। এই অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতও সহায়তা দিতে আগ্রহী। এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন দেখতে চায় ভারত। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের চ্যালেঞ্জগুলো একই। সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা ও উগ্রবাদ দুই দেশেরই সমান চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির সঙ্গে আমরাও একমত হয়েছি। এএইচ মাহমুদ আলী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে ভারত যেন মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে সেজন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি বলেন, ভারত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে, সেজন্য তাদের প্রতি আমরা বিশেষ কৃতজ্ঞ। মাহমুদ আলী বলেন, ভারতের বিপক্ষে সন্ত্রাসী কাজে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। বৈঠকে সুষমা স্বরাজকে মাহমুদ আলী স্মরণ করিয়ে দেন, ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার আমলেই তিস্তা চুক্তি হবে বলে কথা দিয়েছিলেন। কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দুইদিনের সফরে রবিবার দুপুরে ঢাকায় আসেন। কুর্মিটোলায় বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে তার বিশেষ বিমান অবতরণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী তাকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যৌথ কমিশনের বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহ, আন্তঃযোগাযোগ, সীমান্ত হাট, আঞ্চলিক যোগাযোগ, পর্যটন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আলোচনায় তোলা হয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের আরও জোরালো সমর্থন চায় বাংলাদেশ। বৈঠকে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর পারস্পরিক সফরে নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে পর্যালোচনা করে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমিশন। আজ সোমবার সকালে ভারতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ১৫ প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। ভারতীয় হাইকমিশনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন তিনি। সুষমা স্বরাজ সোমবার সকালে ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সারি ভবন উদ্বোধন করবেন। সে সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীও উপস্থিত থাকবেন। দুপুরে তিনি ঢাকা ছাড়ছেন। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের কোন শীর্ষ মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলেন। এর আগে ৩ অক্টোবর আসেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ পরামর্শক কমিশনের সভা একটি নিয়মিত বৈঠক। এতে দুই দেশের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। তবে এ বৈঠকে চলমান বিষয়াবলী প্রাধান্য পেয়েছে। সে কারণেই এবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এটি এখন বাংলাদেশের একটি জাতীয় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ সঙ্কট সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে ভারতেরও উদ্বেগ রয়েছে। রবিবারের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ রোহিঙ্গা নিয়ে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। ২০১৫ সালের জুনে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফররের এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যেসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়েছে, তার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। একই সঙ্গে সহযোগিতার নতুন নতুন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন তারা। দুটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই ॥ কমিশনের বৈঠক শেষে উভয় দেশের মধ্যে দুটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ও ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। বৈঠক শেষে ইন্টারন্যাশনাল সোলার এ্যালাইন্সের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি বিষয়ক একটি দলিল হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত রবিবার সন্ধ্যায় যান গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন সুষমা স্বরাজ। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সাংবাদিকদের বলেন, “মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে। ইহসানুল করিম বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের আশ্রয় দেয়ার প্রশংসা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা নাম উচ্চারণ না করে শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার কথা বলেন সুষমা। তিনি সন্ত্রাসীদের শাস্তির কথাও বলেন । তিনি বলেন, বিশাল সংখ্যার এই শরণার্থী বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কত দিন এই ভার বহন করবে। এর একটা স্থায়ী সমাধান হতে হবে।’ সুষমা স্বরাজ শেখ হাসিনাকে বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সূচিকে গত সেপ্টেম্বর তার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির কথাও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। ইহসানুল করিম বলেন,নরেন্দ্র মোদি সুচিকে বলেছেন,আপনার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ভাল, এটা নষ্ট করবেন না। বৈঠকে শেখ হাসিনা শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো সুষমার কাছে তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের ১৬ কোটি মানুষের অন্নের সংস্থান যেহেতু করতে পারছে, এই শরণার্থীদের খাদ্যের ব্যবস্থাও করতে পারবে। মানবিক কারণে মিয়ানমারের এই নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তা এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট পরবর্তী নিজের এবং ছোট বোন শেখ রেহানার ভারতে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নেয়ার কথাও স্মরণ করেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্কর এবং ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। গণভবনের অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক একটি সার্ভিস রিভলবার শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন সুষমা স্বরাজ। বৈঠকের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর ব্যবহৃত কিছু সমরাস্ত্র প্রদানের অনুষ্ঠান হয়। বাংলাদেশকে শুভেচ্ছার স্মারক হিসেবে তখন ব্যবহৃত এমআই হেলিকপ্টার, দুটি ট্যাঙ্ক, ২৫ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়েছে ভারত। গণভবনের অনুষ্ঠানে একটি সার্ভিস রিভলবার শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন সুষমা স্বরাজ। আনুষ্ঠানিক সৌজন্য সাক্ষাতের পর শেখ হাসিনা ও সুষমা স্বরাজ একান্তে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। ভোট নিয়ে ‘সমস্যা’ সুষমাকে বললেন খালেদারাতে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত করে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ‘সমস্যাগুলো’ তুলে ধরেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তার বক্তব্য শুনে ভারতের শীর্ষ কূটনীতিক বাংলাদেশে আগামীতে সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশা প্রকাশ করেছেন বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন। সোনারগাঁও হোটেলে রবিবার রাত আটটা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং এ বিষয়ে যেসব সমস্যা রয়েছে তা তুলে ধরেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব সমস্যা শুনেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এখন ‘সহায়ক সরকারের’ অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবি করছে। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে অভিযোগ তাদের। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। আগামী বছরের শেষদিকে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের ভাবনা জানতে সম্প্রতি দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসায় তার সঙ্গে সাক্ষাত করলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ‘একতরফা’ ভোট করে আওয়ামী লীগ পার পাওয়ার জন্য তৎকালীন ভারত সরকারকে দায়ী করে আসছেন বিএনপি নেতারা। খালেদা জিয়ার মুখে ‘সমস্যাগুলো’ শুনে সে সব বিষয়ে সুষমা স্বরাজ কিছু বলেছেন কি না, তা জানাননি মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য’ হবে বলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সোনারগাঁও হোটেলের অষ্টম তলায় এই বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন। ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশে এই বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় উভয় দেশের যে সম্পর্ক তাকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। রাজনৈতিক আলোচনা ছাড়াও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হতে হবে। তাদের সাময়িক আশ্রয় দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নিরাপদ একটা অবস্থা তৈরি করতে হবে। এই ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন এবং বলেছেন, আমরাও এটাই চাই যে, রোহিঙ্গা যারা এখানে (বাংলাদেশ) এসেছে তারা নিরাপদে যাতে দেশে ফিরে যেতে পারে এবং মিয়ানমার সরকারের ওপরে তারা (ভারত) তাদের চাপ অব্যাহত রেখেছেন। গোটা বিশ্বও চাপ অব্যাহত রেখেছে। তারা আশা করে, রোহিঙ্গারা নিরাপদ পরিবেশে দেশে ফিরে যেতে সক্ষম হবে। বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত করেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। সুষমাকে তিস্তার কথা বললেন রওশন তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সহযোগিতা চাইলেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। রাতে সোনারগাঁও হোটেলে গিয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন রওশন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “তিস্তার পানি বণ্টন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চেয়েছি। সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, ভারত এ বিষয়ে আন্তরিক। তিনি এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আধা ঘণ্টার বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। বৈঠকে রওশন এরশাদের সঙ্গে ছিলেন সংসদে বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংসদ নুরে হাসনা লিলি চৌধুরী, ফখরুল ইমাম, এসএম ফয়সল চিশতি ও নুরুল ইসলাম মিলন। ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর দেয়া নৈশভোজে যোগ দেন সুষমা স্বরাজ।
×