ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খুঁটিতেই পাঁচ বছর ॥ বাকি কাজ শেষ কবে?

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৬ অক্টোবর ২০১৭

খুঁটিতেই পাঁচ বছর ॥ বাকি কাজ শেষ কবে?

নিজস্ব সংবাদদাদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ৫ অক্টোবর ॥ উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের খুরুশিয়া দ্বারিকোপ উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুল যাতায়াতে দুর্ভোগের অন্ত নেই। পূর্ব খুরুশিয়া গ্রামের দুইটি স্কুলের প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন দীর্ঘ কয়েকমাইল হেঁটে খুরুশিয়া খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। হাঁটু সমান কাদা ও কোমর সমান পানিতে খাল পার হতে গিয়ে তাদের বইখাতা ও কাপড়-ছোপড় ভিজে যায়। এছাড়াও বৃষ্টি হলে পাহাড়ী ঢল উপেক্ষা করে খাল পার হতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়তে হয় তাদের। এভাবে খুরুশিয়া খালের ওপর একটি ব্রিজের অভাবে দিনের পর দিন জীবন ঝুঁকিতে স্কুলে যাতায়াত করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থী ছাড়াও পাশাপাশি ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার জনসাধারণ। ২০১৩ সালে ব্রিজ নির্মাণে বরাদ্দ এলেও খুঁটি স্থাপনের পর তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিদিনকার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে খুরুশিয়া খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। জানা যায়, উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের মূল রাজারহাট থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে পূর্ব খুরুশিয়া, পশ্চিম খুরুশিয়া ও দ্বারিকোপ ওয়ার্ড। এই ৩ ওয়ার্ডে ফকিরাটিলা, ঘোচাক গ্রাম, মাইজপাড়া, গাইনি বাড়ি, গীতাপাড়া, বড়জুম, খালিপাড়, ছিপছড়ি, কমলাছড়িসহ ১০ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামগুলোর মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে খুরুশিয়া খাল। বৃহৎ এই জনসাধারণের জন্য রয়েছে খালের পশ্চিম পাড়ে খুরুশিয়া-দ্বারিকোপ উচ্চ বিদ্যালয় এবং তার সংলগ্ন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। খালের পূর্ব পাশের গ্রামের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন খুরুশিয়া খালে হাঁটু সমান কাদা ও কোমর সমান পানিতে ভিজে পার হয়। ভাঙ্গা কাঁচা সড়কে দীর্ঘ পথ হেঁটে খাল পার হয়ে আবারও এক কিলোমিটার হেঁটে শিক্ষা অর্জন করার মানসিকতা ও শক্তি দুটাই লোপ পেয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। বছরের ১ মাস শুকনো থাকলেও ১১ মাস কোমর সমান পানি থাকে এই খালে। বর্ষা মৌসুমে খালের পানিতে সৃষ্টি হয় পাহাড়ী ঢলের তীব্র স্রোত। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় এই খাল পার হয়ে প্রতিদিন এই ১০ গ্রামের ৩৫ হাজার জনসাধারণকে যেতে হয় তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে। খালের উপর একটি ব্রিজ বদলে দিতে পারে গ্রামের সার্বিক চিত্র। খুরুশিয়া দ্বারিকোপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইদ্রিছ জানান, ‘খুরুশিয়া খালের পূর্ব পাশে বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর ওপারের প্রায় ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা শিক্ষায় আরও পিছিয়ে পড়ে।’ সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল জলিল জানান, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হয়ে তাদের গন্তেব্যে যাওয়া আসা করে। এই সমস্যা উত্তোরণে খালটির ওপর ২০১৩ সালে একটি ব্রিজ নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়। এই লক্ষ্যে পাইলিং করে ৭টি স্থানে ৬টি করে ৪২টি খুঁটি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু আর বাস্তবায়িত হয়নি।’
×