ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আদালতের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৫ আগস্ট ২০১৭

আদালতের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত এখনও শেষ হয়নি। অশুভ শক্তি এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আর এখন সেটা আদালতের মাধ্যমে হচ্ছে। গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দিয়ে জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। দেশের জনগণ যখন এটার সমালোচনা করছে, তখন বিএনপি ও কিছু কুশীলব তা ঐতিহাসিক বলছেন, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, যারা বিচারপতিদের কথা বলছেন, তারা কোন অধিকারে বলছেন? বিএনপিসহ কিছু ব্যক্তি বিচারালয়ের মুখপাত্রের দায়িত্ব নিয়েছেন। এটা নিয়ে জনগণের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। কারা বিচারপতিদের মুখপাত্র? বিচারপতিদের মুখপাত্র বিএনপি? নাকি বিএনপির মুখপাত্র বিচারপতি? কারণ দু’পক্ষের কথাবার্তা ও চিন্তাভাবনা প্রায় একই রকম শোনা যাচ্ছে। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, আন্দোলন করতে না পেরে আদালতের ওপর ভর করে সরকার পতন ঘটাবেন, অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় আনবেন-এ ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। এ চক্রান্ত নস্যাত করে দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের লাখো নেতাকর্মী প্রস্তুত। যে কোন অপশক্তিকে প্রতিহত করা হবে। প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে সরকার চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করে আসছে বর্তমান সরকারবিরোধী দল বিএনপির নেতারা। এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় হানিফ বলেন, ‘আমরা তো পদত্যাগের দাবি করি নাই। আমরা তো বলি নাই, পদত্যাগ করতে হবে। আমরা রায়ের পর্যবেক্ষণের কথা বলেছি। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে প্রধান বিচারপতি সংসদ সদস্যদের নিয়ে যে কটাক্ষ করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যে ঝড় তুলেছেন তাতে তার শপথ ভঙ্গ হয়েছে। কারণ সেটা তো সংবিধানের মীমাংসিত বিষয়।’ আদালতের রায় নিয়ে তারা কোন কথা বলেননি দাবি করে হানিফ বলেন, ‘এর বিরুদ্ধে আমরা কোন কথা বলব না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে পুনর্বিবেচনার আবেদন করব। কিন্তু রায়ের পর্যবেক্ষণের নামে যেসব অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা কথা বলেছি এবং আগামীতেও বলব। কারণ এগুলোর সঙ্গে স্বাধীনতার ইতিহাস জড়িত, দেশের মানুষের মূল্যবোধ জড়িয়ে আছে।’ হানিফ বলেন, বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমান সবাই মিলে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তৎকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার ইঙ্গিত ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। খালেদা জিয়ার এর দায় এড়াতে পারেন না। আপনাকে এ জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। এখন এ নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। যখন যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিচার চলছিল, সেই সময় তার পরিবারের সদস্যরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন আইন কোথায় ছিল? তখন কেন আপনারা বলেননি, প্রধান বিচারপতি একটি বিচারাধীন মামলার আসামির পরিবারের সঙ্গে দেখা দিয়ে তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। তখনই তো তিনি শপথ ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হতেন। তখন কেন আপনারা কথা বলেননি।’ ‘জয় বাংলা সেøাগান দিলেই আওয়ামী লীগের কাছে প্রিয় হয়ে যায়’ মর্মে সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের বক্ত্যবের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সেøাগান ছিল জয় বাংলা, এটা আওয়ামী লীগের নয়। এটা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেøাগান। এ সেøøাগানে উজ্জীবিত হয়েই হানাদার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি। যারা পাকিস্তানী চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী তাদের কাছে এ সেøøাগান গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, এটা তাদের কাছে ভীতিকর। জিয়াউর রহমান পাকিস্তানী চেতনায় বিশ্বাসী বলেই বাংলাদেশ জিন্দাবাদ সেøাগান দেয়া শুরু করে। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যেÑ রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ডাঃ কামরুল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×