ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হজযাত্রীদের জন্য শুভ কামনা

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৭ আগস্ট ২০১৭

হজযাত্রীদের জন্য শুভ কামনা

হজ ধনী ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহ তায়ালা ফরজ করে দিয়েছেন। এবং এটা জীবনে একবার আদায় করা ফরজ। আদায় না করলে গুনাহগার হতে হবে। প্রতিটি মুসলমানের আশা থাকে জীবনে একবার হলেও পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফ করার মাধ্যমে মাসুম বাচ্চার ন্যায় নিজেকে পাপমুক্ত করা। এটা ধর্মভীরু সকল মুসলমানের মনের কথা। এ বিষয়ে নবী করিম (সা) এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি হজ পালন করল এমন অবস্থায় যে, কোন প্রকার কাম- প্রবৃত্তি চর্চা বা গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকেনি, সে এমনভাবে হজ শেষে ফিরে আসবে যেমন নবজাতক শিশু মায়ের পেট থেকে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়। (বোখারি ১৪৪৯)। তাই এটা ধনী হোক আর গরিব হোক সবাই আদায় করার ইচ্ছে পোষণ করে। যদিও তা গরিরের জন্য নয়। কারণ এটা শারীরিক এবং অর্থিক ইবাদত। যা গরিবের জন্য শরীরিকভাবে সম্ভব হলেও অর্থিকভাবে সম্ভব নয়। তাই আল্লাহ তায়ালা ধনীদের জন্য হজ ফরজ করে দিয়েছেন। আর বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে হজ পালন করতে যে সব মানুষ যায় তাদের দেখা যায় অধিকাংশ বৃদ্ধ। কারণ আমাদের দেশে রেওয়াজ রয়েছে হজে যেতে হবে চাকরি শেষ করে ছেলেমেয়ে বিয়ে দিয়ে তারপর। যখন কোন কিছুর পিছু টান থাকবে না। আসলে বিষয়টা কিন্তু এরকম নয়। বিষয়টা হলো যখন ফরজ হবে কেবল তখনই তা পালন করতে হবে। তবে তা জীবনে একবার ফরজ। যাদের ওপর ফরজ হয়েছে তাদের একার আদায় করলেই হবে। আর আমাদের দেশের যারা চাকরিজীবী রয়েছেন তারা অধিকাংশই চাকরি জীবন শেষে পেনশনের টাকা দিয়ে হজে যাবেন বলে নিয়ত করে থাকেন। যার জন্য অনেকে ফান্ডও তৈরি করেন। কিন্তু অনেকের শত ইচ্ছা থাকার পরও ব্যস্ততার কারণে সময়মতো আদায় করতে পারেন না। আর এই ব্যস্ততা মানুষের জীবনকে ক্লান্তিলগ্নে পৌঁছে দেয়। এবং আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে যেতে হয়। যার জন্য তাদের গুনাহের কাতারে নাম লিখাতে হয়। যা আমাদের কারও করা উচিত নয়। আর হজ পালন করার জন্য হয় এজেন্সি না হয় সরকারীভাবে ব্যবস্থা করতে হয়। আর এখানেই শুরু হয় শত বিড়ম্বনা। এ যেন প্রতি বছরই অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বছর তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। কিছু ক্ষেত্রে বিষয়গুলো যেন বিগত বছর থেকে আরও বেশি পীড়া দিচ্ছে। কেননা এখনও এয়ারপোর্টে আটকে আছে শত শত যাত্রী। সময় মতো ভিসা পাচ্ছে না। যাত্রী কম হওয়ায় সময় মতো যেতে পারছে না কোন ফ্লাইট। বার বার সিডিউল বাতিল করতে হচ্ছে। এরকম হাজারও বিড়ম্বনা, যার শেষ নেই। কথা রয়েছে এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী যাবে এক লাখ ২২ হাজার ১৯৮জন। এখনও পর্যন্ত সেখানে গিয়ে পৌঁছেছে ৫৮ হাজার ১৮৮ জন। প্রশ্ন হলো কেন এমন বিড়ম্বনা কারা এর জন্য দায়ী ধর্ম মন্ত্রণালয় নাকি হজ এজেন্সি? যদিও উভয়ে নিজের অবস্থান থেকে একে অপরকে কাদাছোড়াছুড়ি করছে। এই বেহাল অবস্থার দায় কেউ কারো কাঁধে নিতে চাচ্ছে না। মনে রাখা দরকার এখন দোষারোপ করার সময় নেই। কারণ ২৭ তারিখের মধ্যে সবাইকে পৌঁছাতে হবে। তাই দোষী যেই হোক না কেন মানুষের সারা জীবনের ইচ্ছাটা যেন তাদের ভুলের কারণে নষ্ট না হয়ে যায়। এখনও সময় রয়েছে যেন এর ভিতরে সব সমাধান করা হয়। সে দিকে সংশ্লিষ্ট মহলের আন্তরিক দৃষ্টি কামনা করছি। হজযাত্রীদের যাত্রা শুভ হোক। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে
×