ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এক পরিবারের ৪ জনের শরীরে অসংখ্য টিউমার

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ২৮ জুলাই ২০১৭

এক পরিবারের ৪ জনের শরীরে অসংখ্য টিউমার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে ॥ দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে চরম কষ্টে পড়েছেন ব্যবসায়ী যতীন্দ্রনাথ পাল। সন্তানদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে দিতে পারেননি। প্রতিবেশীদের কাছে তারা এখন ঘৃণার পাত্র। তিনি ছাড়া পরিবারের সকল সদস্য এখন সারা শরীরে বহন করছে গুটি গুটি টিউমার। ডাক্তাররা এটিকে নিউরোফাইব্রমা বলে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাভাবে সন্তানদের চিকিৎসা করতে না পেরে এই পরিবারটি এখন একপ্রকার একঘরে হয়ে গেছে। জানা যায়, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা চত্বরের বাজার সংলগ্ন যতীন্দ্রনাথের খুপড়ি ঘর। ছোট্ট মুদি দোকানের পিছনেই তার সংসার। প্রায় ৫ দশক আগে বিয়ে করেন ফুলু রানী পালকে। বিয়ের সময় তার স্ত্রীর শরীরে কোন টিউমার না থাকলেও তিন সন্তান জন্মের পর প্রথমে ফুলু রানী তারপর একেএকে ছেলে বাবুলাল পাল, মেয়ে পার্বতীরানী পাল ও অঞ্জনা রানী পালের শরীরে টিউমার দেখা দেয়। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত এই রোগ দেখা না দিলেও ছেলে অষ্টম শ্রেণীতে আর মেয়ে দুটি ৭ম শ্রেণীতে পড়ার সময় শরীরে টিউমার দেখা যায়। অর্থাভাবে ভাল ডাক্তার দেখাতে না পারলেও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়েছেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। যতীন্দ্রনাথ পাল জানান, লোকজন আমাদের এখন ঘৃণার চোখে দেখে। আমরা কারও কাছে যেতে পারি না। যেন বড় কোন পাপ করেছি। বড় ছেলের বয়স ৫০ আর মেয়ে দুটির বয়স ৪০-৪৫ হলেও তাদের বিয়ে দিতে পারলাম না। সামান্য আয়ে খেয়ে না খেয়ে আছি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবর রহমান জানান, সরকারীভাবে পরিবারটিকে দ্রুত আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবীর জানান, দ্রুত তাদের নামের তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে। সিভিল সার্জন ডাঃ আমিনুল ইসলাম জানান, রৌমারীতে একই পরিবারের কয়েকজন সদস্যের শরীরে অসংখ্য টিউমার দেখা দিয়েছে। এই রোগটিকে নিউরোফাইব্রমা বলে। মানুষ দীর্ঘদিন শরীরে বহন করলেও কোন সমস্য হয় না। তবে যদি ব্যথা হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব।
×