ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোস্তাফা জব্বার

একুশ শতক ॥ বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তির বিজয়

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ২ জুলাই ২০১৭

একুশ শতক ॥ বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তির বিজয়

২৮ জুন ১৭ বাংলার স্বর্ণকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাজেট আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ১৭-১৮ সালের বাজেট বক্তৃতা। এরপর অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে তার বক্তব্য পেশ করেন। মূলত প্রধানমন্ত্রী বা সংসদ নেতার আলোচনার পর বাজেটের আলাপচারিতার আর কিছুই থাকে না। অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, তার বক্তব্য অনুরোধ নয়, নির্দেশ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর তিনটি বিষয়ের বাইরেও নতুন কিছু বিষয় তালিকায় আনেন। অন্যদিকে আমরা তবুও দেখলাম অর্থ বিল পাস হওয়ার সময় পরোক্ষে বাজেট নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বাজেট পাস হওয়ার সময়ও আরও কিছু আলোচনা হয়েছে। তবে এর পরের কাজটা ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। প্রধানমন্ত্রীর চালের ওপর থেকে কর হ্রাস, আবগারি শুল্কের হার কমানো এবং ভ্যাট আইন বলবত করার সময়সীমা দুই বছর পেছানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে বাজেট নিয়ে সমালোচনা করার আর কোন উপায়ই থাকল না। বস্তুত ধন্যবাদের সঙ্গে বাজেট পাস ও গৃহীত হয়ে ২৯ জুন ১৭ বাজেটোত্তর নৈশভোজও সম্পন্ন হয়েছে। এবারের বাজেট আলোচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল যে, সরকারী দলের কিছু সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীকে কেবল সমালোচনাই করেননি, ব্যক্তিগত আক্রমণও করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, আপনি কথা বলবেন না। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু কেবল অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ নয়, অপরাধমূলক মামলাও করতে বলেছেন। আশির উর্ধ বয়সের একজন মানুষকে এভাবে আক্রমণ করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগেরও কিছু সংসদ সদস্য পরোক্ষে এক ধরনের অতিরিক্ত ও অপ্রিয় এবং অসংসদীয় শব্দ প্রয়োগ করেছেন। জিয়াউদ্দিন বাবলুর সমালোচনাকে সেভাবে না দেখলেও শেখ সেলিম একেবারে কোন ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়া তার দলের সবচেয়ে সিনিয়র সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর সমালোচনা যেভাবে করেন সেটি পর্যালোচনার দাবি রাখে। আমি আশা করি সেটি দলীয় পর্যায়েই আলোচিত হবে। অন্যদিকে মাহবুবুল আলম হানিফও যখন অর্থমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন তখন তাকে একেবারেই সাধারণ ঘটনা বলে মনে করা যায় না। তবে স্বস্তির বিষয় হলো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সিনিয়র অংশটি অর্থমন্ত্রীর পক্ষে যথাযথ অবস্থান নিয়েছেন। আমি ঠিক জানি না কেন সমালোচকরা এটি ভুলে গেলেন যে, অর্থমন্ত্রী সরকারের পক্ষে বাজেট পেশ করেছেন। তার বাজেট প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছেন। তিনি স্বেচ্ছাচারীভাবে বাজেট পেশ করেননি। সেটি তিনি করতেও পারেন না। যে ভ্যাট নিয়ে এত সমালোচনা সেটিও সরকারেরই ইচ্ছা। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ভ্যাট আইনটি এই সংসদেই ২০১২ সালে সংসদ সদস্যদের দ্বারা পাস করানো হয়েছে। তখন কেউ তেমন কোন উচ্চবাচ্য করেননি। যে আবগারি শুল্ক নিয়ে সংসদ ও ফেসবুকসহ সকল মিডিয়া উতলা হলো সেটিও সরকারেরই ইচ্ছায় বাজেটে ঢুকেছে। এটিও বোধ হয় আমাদের বোঝা দরকার যে, একজন অর্থমন্ত্রীকে কেবল তখনই সফল বলা হয় যখন তিনি দেশের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে পারেন। আমার মনে হয় না দেশে এমন কেউ আছেন যিনি ২০০৯ থেকে ১৭ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতির সফলতার কথা স্বীকার করবেন না। তেমন একজন অর্থমন্ত্রীকে আক্রমণ করাটা মোটেই সুস্থির বুদ্ধির কাজ নয়। এমনকি বাজেটের মূল স্পিরিট না বুঝে কেবল একটি-দুটি বিষয় নিয়ে চিৎকার করাটাও বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক নয়। তবে সমালোচনার মুখে ছিপি এঁটে প্রধানমন্ত্রী বাজেটকে জনবান্ধব করেছেন সেটিও আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। বাজেট আলোচনা করতে গিয়ে সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী যে ভয়ঙ্কর অবস্থান নিয়েছেন সেটি শঙ্কার বিষয়। তিনি লেখাপড়ার উন্নতির কথা বলতে গিয়ে রাত এগারোটার পর থেকে ফেসবুক, হোয়াটস এ্যাপ ও ভাইবার নিষিদ্ধ করার দাবি করেন। তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে চীনের কথাও তুলে ধরেন। কিন্তু তিনি জানেন না যে, চীনারা ফেসবুক নয়, নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। আমি ভেবে পাই না রওশন এরশাদের মতো এমন একজন বিরোধীদলীয় নেত্রী দেশটার ডিজিটাল রূপান্তরের কোন ধারণা কেন ধারণ করেন না। শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে ইন্টারনেট দেয়া দরকার সেখানে তিনি মূর্খ মানুষের মতো ছেলেমেয়েদের হাত থেকে ইন্টারনেট কেড়ে নেয়ার দাবি তুললেন। যতদিন এই বেগমরা নীতিনির্ধারক থাকবেন ততদিন আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত অন্ধকার। আমি অবাক হইনি যখন জেলা প্রশাসকরা এমন একটি দাবি তুলেছিলেন। তিনি তখন দেখেননি যে, পুরো দেশ সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ : আসুন দেখি এবার ডিজিটাল বাংলাদেশের বাজেট বরাদ্দ কেমন অবস্থায় রয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, অর্থ বাজেটে যা মোট বাজেটের ২.৪৪ শতাংশ ছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে বিদায়ী অর্থবছরে বাড়তি দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ পেয়েছিল এ খাতটি। ২০১৭-১৮ সালে আগের বছরের ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ ১১ হাজার কোটি টাকায় উঠেছে। বাজেটের আকার বাড়ার সঙ্গে তুলনা করলে এই অঙ্কটি আরও বড় হতে পারত। অন্যদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের জন্য ৬২২ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এই খাতে বিদায়ী বছরে আইসিটি ডিভিশনের জন্য এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২১০ কোটি টাকা। এই বছর তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এবার বরাদ্দ ৩৯৭৪ কোটি টাকা। এটি উল্লেখ না করলেও চলে যে, এই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ এই খাতে আর কখনও হওয়ার প্রশ্নই নেই। ভাবা যায়, ’৭২-৭৩ সালের বাজেট চার লক্ষাধিক কোটি টাকায় আর ২০০৯-১০ সালের তথ্যপ্রযুক্তির ১৭৪ কোটি টাকা ৩৯৭৪ কোটি টাকায় উঠে যেতে পারে। স্মরণ করতে পারি যে, বাজেট পেশ করার আগে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের বাজেটের কিছু আকাক্সক্ষার কথা তুলে ধরেছিলাম। একটি ব্যতিক্রমের কথা বলতেই হবে যে, আমাদের এই প্রচেষ্টায় সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিল তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের। প্রসঙ্গত, আমি এই বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক এবং এলআইসিটির শামির কথা অবশ্যই এখানে উল্লেখ করতে চাই। আমদানিকারক থেকে উৎপাদক : ২০১৭-১৮ সালের বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কম্পিউটারের যন্ত্রপাতির শুল্ক ও ভ্যাট কাঠামোতে পরিবর্তন। এই বাজেটে ডিজিটাল যন্ত্র যেমন ল্যাপটপ, ট্যাব ও স্মার্টফোন সংযোজন এবং উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে মাত্র এক শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এটি দেশের ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। আমরা এখন আশা করতেই পারি যে, দেশে স্মার্টফোন, ট্যাব এবং ল্যাপটপ সংযোজিত হবে বা এমনকি উৎপাদনও হবে। গত ৬ আগস্ট ২০১৫ অনুষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন ও রফতানির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটি এখন বাস্তবে রূপায়িত হওয়ার সময় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা পূরণে সরকারী প্রতিষ্ঠান টেসিস এখন দেশের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদকে পরিণত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুসারে আমি এই সংস্থার দায়িত্বে থাকলে অন্তত এই কাজটি এবার করতে পারতাম। এবার এই সুযোগ দেয়ার ফলে সামনের বাজেটের আগেই আমরা দেশে কয়েকটি দেশীয় ব্র্যান্ডের ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন ও সংযোজন হতে দেখার পাশাপাশি বিদেশী ডিজিটাল যন্ত্র নির্মাতাদের এ দেশে কারখানা স্থাপনে উৎসাহিত হতে দেখব। এজন্য হাইটেক পার্কের সুবিধার ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারা যুক্ত করা যেতে পারে। বর্তমানে হাইটেক পার্কগুলোর সুবিধা হচ্ছে কেবল রফতানির জন্য। ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই সুবিধাকে দেশীয় বাজারের জন্যও সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। মনে রাখা দরকার যে, দেশীয় বাজারে ডিজিটাল ডিভাইস বাজারজাতকরণ বস্তুত আমদানি বিকল্প এবং এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রাও বাঁচবে। এবারের বাজেটে শুল্ক হ্রাসের ক্ষেত্রে কিছু সফটওয়্যারের দামও কমানো হয়েছে। কিন্তু একটি মজার বিষয় হলো, সিডিতে সফটওয়্যার আনলে সেই সুবিধা পাওয়া যাবে, অথচ অনলাইনে আনা হলে সেই সুবিধা পাওয়া যাবে না এমন একটি বিধান এখনও বিরাজিত আছে। বড় অদ্ভুত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এমন মানসিকতা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সিডি আর অনলাইন যে এক সেই ব্যাপারটি অবশ্যই বুঝতে হবে। ২০২৪ পর্যন্ত আয়কর অব্যাহতি : আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি যে, সরকার আমাদের সফটওয়্যার ও সেবা খাতকে ২০২৪ পর্যন্ত আয়কর অব্যাহতি দিয়ে রেখেছে। এবারের বাজেটে সেটি অব্যাহত রয়েছে। তবে বাজেটের আগে আমরা এই অব্যাহতির ক্ষেত্রে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব পেশ করেছিলাম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সেসব প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল। আমরা আইটি এনেবল সেবার পরিধিটাকে সম্প্রসারিত করার যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম সেটি যদি বাস্তবায়ন হয় তবে আমাদের এই খাতের অগ্রগতি আরও দ্রুত হবে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই অব্যাহতি পাওয়ার জন্য প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহের যে যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া ছিল সেটি নাকি তুলে নেয়া হয়েছে। এর ফলে আমাদের জীবনযাপন আরও সহজ হবে। খুচরা ভ্যাট : বাজেট পেশ করার পরও আমাদের মাঝে এই ভয়টি ছিল যে, ভ্যাট আইন ১২ বাস্তবায়নের সময় কম্পিউটারের ওপর খুচরা ভ্যাট থাকবে কিনা। নানা কাগজপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করে আমরা খুচরা পর্যায়ে আমদানিকৃত পণ্যের ভ্যাট অব্যাহতির খবরটি জানতে পারি। কিন্তু যন্ত্রাংশ আমদানি বা উৎপাদন করার পর সেটি খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করার সময় তাতে ভ্যাট আরোপ করা হবে কিনা সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। এর মাঝে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসআরও ১৩৬-এর সঙ্গে ১৩১কে যুক্ত না করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, আইসিটি ডিভিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে এই বিষয়ে সুফল পেলাম। বাজেট সমাপনী ভাষণে অর্থমন্ত্রী ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রদান করেন। ইন্টারনেটের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক রয়েই গেল : বিদ্যমান শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাটের চাপে দেশে ইন্টারনেটের কানেকশনের সংখ্যা বাড়লেও প্রকৃত ব্যবহার বাড়েনি। ইন্টারনেট মানে এখন ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটস এ্যাপ ও ইমো। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। ইন্টারনেটের বাড়তি মূল্য ও গতিহীনতা এর অন্যতম কারণ। ফলে এবারও আমরা ইন্টারনেটকে শুল্ক ও ভ্যাটমুক্ত করার দািব জানিয়েছিলাম। এই দাবিটি আমাদের অনেক পুরনো। আমার কেন জানি মনে হয় রাজস্ব আহরণ করার সহজ উপায় হিসেবে এনবিআর টেলিকমকে কোন ছাড় দিতে আগ্রহী নয় এবং তারা ইন্টারনেট সভ্যতার মূল বিষয়টিই উপলব্ধি করতে চায় না। আমি নিজে মনে করি ইন্টারনেটের প্রতি এই অবিচার করাটা ডিজিটাল বাংলাদেশবান্ধব নয়। ভয়েস কলের জন্য যাই থাকুক ইন্টারনেট বা ডাটাসেবাকে ভয়েস কলের চাইতে আলাদা করতে হবে। ইন্টারনেটের সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়াও ইন্টারনেটের কিছু যন্ত্রপাতি যেমন মডেম, রাউটার ইত্যাটির শুল্ক কাঠামো আমাদের ইন্টারনেট প্রসারের অনুকূল নয়। আমি আশা করব অর্থমন্ত্রী বিষয়টি আবারও ভাববেন। অন্যদিকে ই-কমার্সের ওপর কর্পোরেট ট্যাক্স, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ওপর দ্বৈত কর ইত্যাদিও বিবেচনা করতে হবে। রফতানি প্রণোদনা : আমরা দাবি করে আসছিলাম যে, কম্পিউটারের সফটওয়্যার সেবা এবং যন্ত্রপাতি রফতানির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নগদ সহায়তা প্রদান করা হোক। ১৯ অক্টোবর ১৬ ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি সেই দাবি জানাই। গত ১৫ জুন ১৭ অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিষয়ক সভায় আমার সেই দাবি মেনে নেয়া হয়। ১৭-১৮ অর্থবছরে এই খাতে শতকরা ১০ ভাগ রফতানি সহায়তা দেয়া হবে বলে আমরা রফতানিতে বড় ধরনের সফলতা প্রত্যাশা করতে পারি। সার্বিকভাবে চলতি বছরের বাজেট তথ্যপ্রযুক্তির জন্য একটি সুসময়ের দিকনির্দেশনা দিয়েছে। একদিকে এই বাজেট দেশের সফটওয়্যার ও সেবা খাতকে সুরক্ষা দেবে, অন্যদিকে এই বাজেট দেশে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের জন্য সহায়ক হবে। সর্বোপরি এই বাজেট তথ্যপ্রযুক্তি রফতানির জন্য নগদ প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে রফতানির জন্যও একটি নবদিগন্তের সূচনা করবে। ঢাকা, ৩০ জুন, ১৭ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণা ও কর্মসূচীর প্রণেতা ॥ ই-মেইল : [email protected], ওয়েবপেজ : www.bijoyekushe.net
×