ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুদীপ্ত ধ্রুব

একজন সফল সহ-উদ্যোক্তার গল্প

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৩ জুন ২০১৭

একজন সফল সহ-উদ্যোক্তার গল্প

চাকরি থেকে একজন সফল সহ-উদ্যোক্তা। আম্বারিন রেজা। পড়ালেখার পাঠ শেষ করেন ২০১২ সালে। পড়ালেখার সময়ই বিশ্বের অন্যতম হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান ‘আর্নেস্ট এ্যান্ড ইয়ং’-এ পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সিএ শেষ করে ২০১৩ সালে যোগ দেন এনআরএমএ গ্রুপে। ততদিনে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন। উচ্চতর ডিগ্রী, সঙ্গে ভাল চাকরি। ভালই কাটছিল সময়। এর মধ্যে ২০১২ সালে ছোট ভাইও পড়ালেখার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমায়। কিন্তু না, বেশি দিন এভাবে এগোল না। ২০১৩ সালের এপ্রিলে হঠাৎ করেই বাবা মারা গেল। দেশে এলেন আম্বারিন। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে তখন মাথার ওপর অনেক দায়িত্ব। কী করবেন, কিছুই ঠিক করতে পারছিলেন না। তবে মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, কিছু একটা করতেই হবে। যেভাবেই হোক পরিবারের হাল ধরতে হবে। শুরু হলো জীবিকার সন্ধান করা। ভাগ্য তার সহায় ছিল। ঢুকে গেলেন ‘রকেট ইন্টারনেট’ নামের একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানে। কাজ রকেট ইন্টারনেটের হয়ে ই-কমার্স ব্যবসা চালু করতে হবে দেশে। অদম্য সাহস ছিল বুকে, ছিল পরিবারের সহায়তা। একটু একটু করে এগোতে থাকলেন। আগের থেকেই দেশে ই-কমার্স ব্যবসার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাই চাইলেন ভিন্ন কিছু করতে। প্রতিষ্ঠানটি থেকেও প্রথম পরামর্শ দেয়া হলো ‘লামুডি’র কার্যক্রম শুরু করার। তিনি দেখলেন দেশে আবাসন খাতে নির্ভরযোগ্য কোন তথ্যভা-ার নেই, যার মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে একটি আস্থা রাখার মতো যোগসূত্র তৈরি হতে পারে। সেই অবস্থান থেকে শুরু করলেন তথ্য সংগ্রহ করার। কেউ সাহায্য করল কেউ করল না তারপরেও এগিয়ে গেলেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু করল লামুডি। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তাও বাড়তে লাগল সাইটটির। লামুডি নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি ‘কারমুডি’ নামে গাড়ির বিপণনের একটি আলাদা সাইট নিয়েও কাজ শুরু করেন আম্বারিন রেজা। প্রথমে কারহাটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু হয় কারমুডির। এরপর বিভিন্ন গাড়ির শোরুমে গিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। লামুডি-কারমুডির পরপরই চালু হয় ‘কেইমু’। তবে কেন জানি মনের ভেতর একটি অতৃপ্তি কাজ করছিল। নতুন কিছু করার তাড়নায় চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে রকেট ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানটির নির্ভরতা বেড়ে যায় আম্বারিন ওপর। রকেট ইন্টারনেট থেকে প্রস্তাব করা হয় ‘ফুডপান্ডা’র কার্যক্রম শুরু করার। তবে এবারের প্রস্তাবটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বলা হলো, এবার চাকরিজীবী হিসেবে নয়, সহ-উদ্যোক্তা হিসেবে ফুডপান্ডার সঙ্গে যুক্ত হতে। প্রস্তাবটি বেশ পছন্দ হলো আম্বারিনের। শুরু করে দিলেন পরিকল্পনা কীভাবে এগিয়ে নিবেন প্রতিষ্ঠানটিকে। বর্তমানে ঢাকা শহরের বাইরে চট্টগ্রাম ও সিলেট নগরীতেও এটি এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফুডপান্ডা।
×