ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৩১ মে ২০১৭

বরিশালে ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ চিহ্নিত ভূমিদস্যুর হাত থেকে পৈত্রিক সম্পত্তি ও সরকারী খাল রক্ষা করতে গিয়ে এবার চাঁদাবাজি মামলার আসামি হয়েছেন নিরীহ গ্রামবাসী। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ভুমিদস্যু আলম হাওলাদারের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছেন। ঘটনাটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পার্শ¦বর্তী গৌরনদী উপজেলার বেজগাতি এলাকার। সরেজমিনে ওই এলাকার খোকন সরদার, মিজু মৃধা, নুরু সরদার, শিরিয়া বেগমসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, বার্থী এলাকার মৃত আমরি হাওলাদারের পুত্র আলম হাওলাদার ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই এলাকার নিরীহ গ্রামবাসীর সহায় সম্পত্তি ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে জবর-দখল করে নেয়। বেজগাতি গ্রামের অসুস্থ সেকেন্দার সরদারের স্ত্রী শিরিয়া বেগম বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আমার শ্বশুরের রেখে যাওয়া সহায়-সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আলম হাওলাদারের। সে তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমার স্বামী, দেবর, ভাশুরকে অমানুষিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক আমাদের সহায়-সম্পত্তি দখল করে নেয়। একই এলাকার ছত্তার হাওলাদারের পুত্র শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক হওয়ার অপরাধে আলম তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমাদের বাড়িছাড়া করে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সহায়-সম্পত্তি দখল করে নেয়। একইভাবে ওই এলাকার জব্বার হাওলাদার, বাদশা সরদার, কামাল সরদারসহ প্রায় ১৫টি পরিবার ভূমিদস্যু আলম হাওলাদারের রোষানলে পরে সহায়-সম্পত্তি হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন। সূত্রমতে, বেজগাতি এলাকার সুইস হাসপাতালের সামনে বাদশা সরদারের ১০ শতক জমি আলম হাওলাদার ভুয়া কাগজ বানিয়ে হাসপাতালের মালিক আবুল কালাম আজাদের কাছে আত্মগোপনে বিক্রি করে। ওই জমিসহ পার্শ¦বর্তী সরকারী খালের একটি অংশ দখল করে গত শনিবার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে নির্মাণকাজ স্থগিত করতে বাধ্য হয়। স্থানীয়রা জানান, ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালে সময় ওই এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী লুুদু সরদারকে প্রকাশ্য পিটিয়ে হত্যা করে আলম হাওলাদার। স্থানীয় বাদশা সরদার অভিযোগ করেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আলম হাওলাদার তার বাবার রেখে যাওয়া সহায়-সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। পূর্বের দখল টিকিয়ে রাখতে অতিসম্প্রতি আলম হাওলাদার আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আলম হাওলাদার একজন হাইব্রিড নেতা। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে। এখন আবার সে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই পুনরায় আওয়ামী লীগ পরিবারসহ এলাকার নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু করেছে। এ ব্যাপারে আলম হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, আমার বাপ, দাদা থেকে এসব জমি আমি ভোগ করে আসছি। এর কিছুক্ষণ পর আবার বলেন, আমমোক্তারনামা (পাওয়ার অব এ্যাটর্নি) সূত্রে আমি এসব জমির মালিক হয়েছি। তবে তিনি জমির কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
×