ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওটিসিতে ক্রেতার অভাব ॥ শেয়ার বিক্রির আদেশ বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৬ মে ২০১৭

ওটিসিতে ক্রেতার অভাব ॥ শেয়ার বিক্রির আদেশ বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিয়মিত বাজারের বাইরে অভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি মার্কেটে ৬৬টি কোম্পানি নিবন্ধিত রয়েছে পুঁজিবাজারে। প্রতিদিনই এ মার্কেটে কিছু বিনিয়োগকারীর আগাগোনা দেখা যায়। তবে এদের বেশিরভাগ বিক্রেতা। কালেভদ্রে ক্রেতার দেখা মিললেও তারা শেয়ার কিনতে চান নামমাত্র দরে। ফলে মার্কেটটিতে সব সময়ই ক্রেতার আকাল লেগেই থাকে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ মার্কেটে বছরের সব সময়ই ৪ থেকে ৫ লাখ শেয়ারের বিক্রির আদেশ থাকে। ক্রেতা না থাকায় ক্রমেই ভারি হচ্ছে বিক্রির আদেশ। শেষ হচ্ছে না ভোগান্তি। সম্প্রতি ডিএসই থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওটিসিতে থাকা ৩৬ কোম্পানির শেয়ার বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। তিন ডজন কোম্পানির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬০টি। নির্ভরশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ওটিসিতে সেল অর্ডারের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। এর কারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে খবর রয়েছে এ মার্কেট থেকে কিছু কোম্পানি মূল মার্কেটে ফিরবে। এ খবর কাজে লাগিয়ে ভুক্তভোগীরা কম দরে হলেও শেয়ার বিক্রি করে মার্কেট থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাচ্ছেন। তবে বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না অন্য বিনিয়োগকারীরা। তাদের যুক্তি এ মার্কেটের উন্নয়ন হবে অনেক দিন আগে থেকেই এমন খবর শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি চোখে পড়েনি। ফলে তারা এ মার্কেটে পুঁজি আটকে রাখতে চান না। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, আমি বহুবার বলেছি যে এ মার্কেটের শেয়ার নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ, এখানে তাদের অনেক পুঁজি আটকে রয়েছে। তিনি বলেন, কিভাবে এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিযোগকারীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা যায় সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি। আশা করছি খুব শীঘ্র এর একটি সহজ উপায় খুঁজে পাব। প্রাপ্ত তথ্যমতে, এ মার্কেটে এখন সবচেয়ে বেশি সেল অর্ডার জমে রয়েছে এপেক্স উইভিংয়ের। এ প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের ১ লাখ ৬০ হাজার শেয়ার বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। পরে অবস্থানে রয়েছে মুন্ন ফ্রেবিক্সের। এ প্রতিষ্ঠানের বিক্রির আদেশে জমে থাকা শেয়ার সংখ্যা প্রায় ৯৫ হাজার। এছাড়া মর্ডান সিমেন্টের সেল অর্ডার রয়েছে ৬০ হাজার শেয়ারের। একইভাবে ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েসের প্রায় ২৪ হাজার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩ হাজার ২০০, বাংলাদেশ জিপারের প্রায় ৭ হাজার ও ঢাকা ফিসারিজের সাড়ে তিন হাজারের বেশি শেয়ার বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব শেয়ারের বেশিরভাগেরই কাঙ্খিত দরে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সীমাহীন অনিয়মের মধ্যে রয়েছেÑ ঠিকমতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করা, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, পূর্ব নির্ধারিত ফেস ভ্যালু অভিন্ন (১০ টাকা) না করা, বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়া এবং কোম্পানির ঠিকানা এবং কর্তৃপক্ষের উধাও হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এসব কারণে এ মার্কেটের কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেন হয় না। ২০০৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ওটিসি চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত লেনদেন হয়নি এমন কোম্পানির সংখ্যা এখনও ১২টি।
×