ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশ পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বড় হতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৮ মার্চ ২০১৭

দেশ পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বড় হতে হবে

নীতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ থেকে ॥ বাংলাদেশের সকল শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এই মাটিতেই ঘুমিয়ে আছেন। এই মাটির সন্তানদের তাঁর আদর্শ নিয়েই বড় হতে হবে। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশ পরিচালনার জন্য আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৭ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শিশু সমাবেশে বক্তৃতাদানকালে তিনি এসব কথা বলেন এবং দেশের সকল শিশুর জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করেন। তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন জাতি। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা আত্মপরিচয় পেয়েছি। একটি ভূখ- পেয়েছি। একটি পতাকা পেয়েছি। নিজেরা মর্যাদা পেয়েছি। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে একটা উন্নত জীবন গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি। আজকে আমরা নিজেদের একটা স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচয় দিতে পারি, কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন, আন্দোলন করেছেন, দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তারই চিন্তা চেতনার ফসলই হচ্ছে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পথশিশু বলে কোন শিশু থাকবে না। টোকাই বলে কিছু থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে চাই। আমরা সে ব্যবস্থাই করে দিচ্ছি, যেন একটা শিশুও স্কুলের বাইরে না থাকে। প্রত্যেকটা শিশু লেখাপড়া শিখবে এবং লেখাপড়া শিক্ষার মধ্য দিয়ে তারা যাতে কাজ করে খেতে পারে সেজন্য তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজের সুযোগও আমরা করে দিতে চাই। ইতোমধ্যে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কেউ যেন ভিক্ষাবৃত্তি জড়িয়ে না পড়ে। আমরা শিশু পাচার ও শিশু নির্যাতন বন্ধে বিশেষভাবে আইন করে দিচ্ছি এবং স্কুলে বাচ্চাদের আগ্রহ বাড়াতে স্কুল ফিডিং কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে দিচ্ছি। তিনি বলেন, আজকের দিনের শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যত। এরাই হবে বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার ছেলেমেয়ে, এরাই হবে এ দেশের সম্পদ। সেভাবেই আমরা আমাদের শিশুদের গড়ে তুলতে চাই। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। প্রাক-প্রাইমারি শিক্ষাসহ প্রত্যন্ত ও পাহাড়ী অঞ্চলে আমরা আনন্দ স্কুল করে দিয়েছি। যাতে বাবা-মাকে বোঝা টানতে না হয়, সেজন্য বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। সে সঙ্গে বৃত্তি দিচ্ছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩০ লাখ শিশুদের বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছি, যাতে তাদের পড়াশুনার বিঘœ না ঘটে। মায়ের হাসি নামে একটি প্রকল্প করেছি। সব টাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা পৌঁছে দিচ্ছি মায়ের হাতে। যে মা স্কুলে বাচ্চা পাঠাবে, সে মাও একটা ভাতা পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি, যখন একটি শিশু বাবা-মা’র হাত ধরে স্কুলে যায়, আমাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি- বাবার হাত ধরে স্কুলে যেতে। কারণ, জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবার সঙ্গে দেখা করতে হলে যেতে হতো কারাগারে। তার দোষ ছিল একটাই- তিনি এ বাংলাদেশের যারা দরিদ্র মানুষ, ক্ষুধার্ত মানুষ, দুঃখী মানুষ, যাদের পেটে ভাত নেই, পড়নে জীর্ণ কাপড়, যাদের একটু থাকার মতো বাসস্থান নেই, যারা যুগে যুগে মার যায়- রোগে একফোঁটা ওষুধ পায় না, সেই বঞ্চিত শোষিত মানুষগুলোর কথা যখন উনি বল তো, তখনই তাঁকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হতো। কিন্তু তিনি কখনও দমে যাননি। এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে তাঁর জন্ম, এ মাটিতে খেলাধুলা করে, পাশের বাঘিয়ার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। তিনি গ্রাম বাংলার মানুষকে চিনতেন, জানতেন। অত্যন্ত কাছে থেকে তিনি দেখেছেন তাদের সমস্যা। যে কারণে তিনি সবসময় নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন একটি আদর্শ নিয়ে। সে আদর্শই হলো, জনগণের সেবা করা, জনগণের কল্যাণে কাজ করা। তাই ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের জন্য কাজ করতেন। ‘বঙ্গবন্ধু’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিশুদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে এত স্কুল ছিল না, মানুষের বাড়িতে থেকে পড়তে হতো। মেয়েদের পড়ার সুযোগ খুবই সীমিত ছিল। ছেলেরা আরেকজনের বাড়িতে থেকে কাছের স্কুলে পড়ত। বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলে পড়তেন তখনই তিনি এক শিক্ষকের সহযোগিতায় গড়ে ওঠা একটি সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে ধান ও অন্যান্য জিনিস, টাকা-পয়সা যোগাড় করে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের বই কিনে দিতেন এবং তাদের পড়াশুনায় সাহায্য করতেন। সেই সময়ে রাস্তাঘাটহীন দূর-দূরান্ত থেকে যারা আসত, তাদের তিনি নিজের ছাতা, গায়ের কাপড়-চোপড় দিয়ে দিতেন। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী-বন্ধুদের বাড়িতে ডেকে এনে নিজের খাবার ভাগাভাগি করে খেতেন। এভাবে সেই ছোট্টবেলা থেকেই তিনি দেশ সেবার হাতেখড়ি নেন এবং মানুষের মাঝে প্রস্ফুটিত হচ্ছিলেন। আমার দাদা-দাদীও এসব বিষয়ে তাকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন। যার ফলে তার মনটা হয়েছিল অনেক উদার, অনেক বড় এবং দেশের প্রতি অনেক দায়িত্ববান। এভাবেই তিনি বড় হয়েছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, দরিদ্র মানুষের প্রতি ভালবাসা ও সহানুভূতি দিয়েই তিনি বড় হয়েছেন। তিনি শুধু আমাদের স্বাধীনতাই অর্জন করে দেননি; একটি স্বাধীন দেশকে কিভাবে গড়ে তুলবেন, স্বাধীন জাতির মানুষগুলো কিভাবে মানুষের মতো মানুষ হবে- সেই কাজগুলোও তিনি করে দিয়ে গেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন এবং আমাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন, অবৈতনিক করে দিয়েছেন, মেয়েদের শিক্ষা মাধ্যমিক পর্যন্ত অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশে যখন টাকা-পয়সা ও খাবারের অভাব, তখন শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তিনি ২৬ হাজার ১শ’ ৯৬টি স্কুল জাতীয়করণ করে দেন। সকল শিক্ষকদের সরকারী চাকরি দিয়ে দেন যেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েরা যেতে পারে। তিনি শিশুদের অত্যন্ত ভালবাসতেন। তার সেই ভালবাসার বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যায় না। শিশুদের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে শিশু আইন করে দিয়ে যান। আমরা আজকে যা করছি, তার প্রতিটি পদক্ষেপই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া শিক্ষার আলোকেই করছি। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের পর আর কোন সরকার জাতীয়করণ করেনি, শুধুই আমরা তথা আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। আমরা ৩৬ হাজারেরও বেশি স্কুল জাতীয়করণ করে দিয়েছি। অভিভাবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন কোন খাদ্যের অভাব নেই। আমরা শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমিয়েছি। এখন প্রায় শতভাগ শিশুরা প্রাইমারি স্কুলে যাচ্ছে। শিশুদের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে স্কুলের প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলা, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা টুর্র্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন দেশীয় খেলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে বিপথে না যায় সেজন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিষয়াবলী আরও সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যাতে মাদকাসক্তে বা জঙ্গী পথে বা কোনভাবে বিপথে না যায় সেজন্য অভিভাবক ও শিক্ষক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য ও মসজিদের ইমামগণসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের সজাগ দৃষ্টি ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান। সমাবেশে উপস্থিত ছোট্ট ছোট্ট সোনামণি ও শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সব সময় মনে রাখতে হবে- আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক, আমরা একটি মহান মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। পাশাপাশি হতদরিদ্র, গরিব বা প্রতিবন্ধীকে কখনও অবহেলা করবে না। তাদের সব সময় আপন করে নিতে হবে। তাকে সহানুভূতি দেখাতে হবে, তাদের পাশে থাকবে। শিক্ষকদের মান্য করতে হবে, পিতামাতা ও অভিভাবকদের কথা শুনতে হবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যেন ধর্মান্ধতা না আসে। ইসলাম ধর্ম অত্যন্ত পবিত্র ও শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে কেউ কাউকে খুন করার অধিকার দেয়নি। প্রত্যেকটি ধর্মেরই মর্মবাণী শান্তির বাণী প্রচার করে। ধর্মে সবসময়ই শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যরে কথা বলা আছে, সেটা সকলকে মান্য করে চলতে হবে। ১৫ আগস্টে বাবা-মা ও ছোট্ট রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের হারানোর কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই না, কোন ছেলেমেয়ে এভাবে একদিনে তার পিতা-মাতা ভাইদের হারায়। বিদেশে ছিলাম বলে আমরা দু’বোন বেঁচে আছি। আজকে জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই, আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা তার সন্তান হিসেবে গর্বিত। কারণ তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে গভীরভাবে ভালবাসতেন এবং এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে তিনি নিজের জীবন দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এ দিনটিকেই আমরা জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছি। এজন্যই টুঙ্গিপাড়ার এ অনুষ্ঠানে আমরা সমবেত হয়েছি। আমরা চাই, এ দেশ এমনভাবে গড়ে উঠবে, যে দেশের স্বপ্ন আমার পিতা দেখেছিলেন। আর এ দেশের ছেলেমেয়েরা সুন্দরভাবে বাঁচবে। উন্নত জীবন পাবে- যেটা জাতির পিতা সমসময়ই চেয়েছিলেন। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষকে গড়ে তুলতে, দেশকে উন্নত করতে এবং সমৃদ্ধশালী করতে।’ এর আগে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে জাতির পিতার সমাধিবেদীতে ফুল দিয়ে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় সশস্ত্রবাহিনীর নেতৃত্বে তিনবাহিনীর একটি চৌকষ দল তাদেরকে অনার গার্ড প্রদর্শন করে। এরপর রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য বহিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, এমপি, নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, শেখ হেলাল উদ্দিন, এমপি, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উম্মে রাজিয়া কাজল, এমপি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, এফবিসিআই পরিচালক শেখ ফজলে ফাহিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম ও বাবুল আক্তার বাবলাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, পুলিশের আইজি শহিদুল হক ও র‌্যাব-মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ বহু সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, প্রাক্তন সভাপতি রাজা মিয়া বাটু, সহ-সভাপতি রুহুল আমীন শেখ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, গোপালগঞ্জ পৌর-মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দীন পান্না, এস এম আক্কাস, কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, সাধারণ-সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান হাওলাদার, পৌর-মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলাম, টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, পৌর-মেয়র শেখ আহমদ হোসেন মির্জা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আকরামুজ্জামান আকরাম, জেলা যুবলীগ সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আযম, সাধারণ-সম্পাদক এম বি সাইফ (বি মোল্লা), জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অন্য নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ দলীয় বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদীতে ফুল দিয়ে তাদের নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে রাষ্ট্রপতিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিদায় জানিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতি ও নামাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান করেন। বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় আয়োজিত জাতীয় শিশু সমাবেশে। এর আগেই সেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শে জীবন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঢল নামে শিশু-কিশোর ও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু-সমাবেশে সভাপতিত্ব করে ছোট্ট শিশু প্রতিনিধি উমা বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু প্রতিনিধি ফাইয়াদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার। শিশু-সমাবেশে বক্তব্য দান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন। এছাড়া টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার ১শ দুস্থ মহিলাদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন। এরপর তিনি সেখানে স্মারক ডাক-টিকেট অবমুক্ত করেন। এ সময় সেখানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার ম-ল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী মাজার কমপ্লেক্সে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন এবং মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
×