ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গদখালীতে নন্দিনী ফুল বামনত্বে ভুগছে

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ৪ মার্চ ২০১৭

গদখালীতে নন্দিনী ফুল বামনত্বে ভুগছে

সাজেদ রহমান, যশোর অফিস ॥ ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোর ঝিকরগাছার গদখালীর ফুলরাজ্যে নতুন অতিথি ‘নন্দিনী’ ফুলগাছ বামনত্বে ভুগছে। ‘রোপণের নব্বই দিনের মধ্যে ফুল আসবে এবং এই ফুল থেকে লাভ হবে প্রচুর’ শুনে যেসব চাষীরা চাষে মনোযোগী হয়েছিলেন, আজ তারা হতাশ। তাই চুপসে গেছে ‘নন্দিনী’র আশার ফানুস। আর চারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বলছে, ভুল আবহাওয়ায় চারা রোপণ করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় পাঁচ মাস আগে গদখালীর পানিসারায় অভিষেক ঘটেছিল নন্দিনীর। সে সময় চারা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এগ্রোব্যাক জানায় ‘রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল ফুটবে। তখন এই গাছের দৈর্ঘ্য হবে দেড় ফুটের কাছাকাছি। অন্যান্য যে কোন ফুলের থেকে এই ফুলচাষে লাভ হবে অনেক বেশি। নন্দিনী ফুল দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় রফতানিখাতে অন্যান্য সুবিধাও রয়েছে।’ ফলে উৎসাহী হন চাষীরা। নন্দিনীর চাষী পানিসারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন জানান, ‘প্রথম কিস্তিতে সাড়ে চারশ’টি করে ফুলের চারা দেয়া হয়। বিভিন্ন কারণে তা মারা যায়। পরে ২শ’ থেকে আড়াইশ’টি চারা পান তিনি। কিন্তু সেগুলোও টেকেনি। পরে এগ্রোব্যাক থেকে দেড়শ’টির মতো চারা দেয়া হয়।’ সরেজমিনে দেখা যায়, আট দশটি বাদে সবগুলোর বৃদ্ধি নেই বললেই চলে। মাঠে বেডের সর্বোচ্চ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত চারটি চারাকে আড়াই ইঞ্চির মতো দেখা গেছে। অপর চাষী শাহজাহান, রেজার বেডের অবস্থাও প্রায় একই। ইসমাইল হোসেনের বেডের চারাগুলোর অবস্থা একটু ভাল হলেও বৃদ্ধি তিন-চার ইঞ্চির উপরে না। এলাকার পুরনো চাষী মনোয়ারা বেগম রাজশাহীর এগ্রোব্যাকে একটি গাছে নন্দিনীকে ফুটতে দেখেছেন। তিনি জানান, দেড় ফুটের মতো লম্বা ওই গাছে নন্দিনীকে গোলাপের মতো দেখাচ্ছিল। এই ফুলের চাষ করা গেলে অনেক লাভ হতো। কিন্তু তার ছেলে শাহজাহানের বেডে নন্দিনীর অবস্থা দেখে হতাশ তিনি। নব্বই দিনের মধ্যে যে ফুল পাওয়ার কথা, দেড়শ দিন কেটে গেলেও ফুলের কোন নামগন্ধ নেই বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। এগ্রোব্যাকের মতিউর রহমান জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। নন্দিনীকে জাপান থেকে আমদানির পর উপযোগী আবহাওয়া যাচাই-বাছাই চলছিল। সম্প্রতি এক গবেষণায় তারা প্রায় নিশ্চিত হয়েছেন, বেড়ে ওঠার জন্য যে আবহাওয়া দরকার ছিল, তার বিপরীতে পড়ায় যশোরে নন্দিনীর চারাগুলো রোসেট বা বামনত্বে ভুগছে।’ তিনি আরও জানান, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপযোগিতা খুঁজে দেখা হচ্ছে। যশোরে শীতকালে চাষ করা হয়েছিল, কিন্তু রাজশাহীতে গরমের সময় চাষ করা হয়েছে। এতে সুফল পাওয়া গেছে। সেখানে নন্দিনীর চারায় ‘পাওয়ার’ আসতে শুরু করেছে। যশোরেও গবেষণা অব্যাহত থাকবে। সুফল পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন।
×