ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ চারে

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ চারে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একেই বলে কপালগুণ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে সেটা শোধ করা, অন্তিম মুহূর্তে প্রতিপক্ষের আরেকটি গোল নসাৎ হওয়াতে নিশ্চিত হারের হাত থেকে রেহাই পাওয়া ... নিজেদের ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতেই পারে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। বন্দরনগরীর এই ফুটবল দলটি তৃতীয় দল হিসেবে ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ’ ফুটবল আসরের সেমিফাইনালে নাম লেখাল। শুক্রবার চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘বি’ গ্রুপের প্রথম খেলায় চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড ২-২ গোলে ড্র করে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের সঙ্গে। খেলার প্রথমার্ধে গত আসরের শিরোপাধারী আবাহনী পিছিয়ে ছিল ১-২ গোলে। ম্যাচসেরার পুরস্কার ৫০০ ডলার লাভ করেন মানাংয়ের ফরোয়ার্ড ওলাদিপো। ৩ খেলায় আবাহনীর সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ৩-১ গোলে আফগানিস্তানের শাহিন আসমায়িকে হারায় এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা মোহামেডানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে মানাংয়ের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ঢাকা মোহামেডানকে ২-০ গোলে হারায় এবং দ্বিতীয় ম্যাচে আসমায়ির কাছে ১-৩ গোলে হেরে যায়। শেষ চারে যেতে হলে কমপক্ষে ড্র করলেই চলতো চট্টগ্রাম আবাহনীর। শেষ পর্যন্ত সেটাই করে তারা। তবে অনেক ঘাম ঝরিয়ে এবং ভাগ্যের বদৌলতে। অনেকদিন পর স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসে গাঁটের পয়সা উসুল করেছেন দর্শকরা। দারুণ এক উপভোগ্য-উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ উপভোগ করেছেন তারা। ম্যাচের ৩ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিক দল। সতীর্থর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক হেডে দলকে এগিয়ে নেন মানাং মার্র্সিয়াংদির ওলাদিপো (১-০)। ২২ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে আবাহনীর বক্সে ঢুকে পড়ে বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে পরাস্ত করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আবারও সেই ওলাদিপো (২-০)। জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও হতোদ্যম হয়নি আবাহনী। নিজেদের মাঠে গতিশীল ও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে গোল আদায় করতে সচেষ্ট হয় তারা। ৩২ মিনিটে তাদের প্রথম প্রচেষ্টা সফল হয়। দলীয় অধিনায়ক-এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামের কর্নার বক্সে হেড করতে চেষ্টা করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর একজন ফুটবলার। কিন্তু বল বিপদমুক্ত করেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররা। ফিরতি বলে বক্সের মধ্যে উঁচু ক্রস ফেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়া। সেই বলে লাফিয়ে উঠে দর্শনীয় হেডে মানাংয়ের জালে বল পাঠান ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন নাসির (১-২)। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে আবাহনী। ৬৩ মিনিটে স্বস্তির সমতায় ফেরে তারা। একটি হ্যান্ডবল থেকে পেনাল্টি আদায় করে নেয় তারা। আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসন বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়ে শট নিলে বল লাগে মানাং মার্সিয়াংদির বিরাজ মহারজনের হাতে। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। আর তা থেকে গোল করতে কোন ভুল হয়নি অগাস্টিনের (২-২)। ৬৮ মিনিটে মুফতাল আউয়ালের শট মানাংয়ের ক্রসবারে লেগে ফেরত না আসলে এগিয়ে যেতে পারতো আবাহনী। খেলা শেষ হবার মিনিটখানেক আগে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে ভাগ্যগুণে বেঁচে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। অনিল গুরংয়ের হেড আবাহনীর ক্রসবারে লেগে ফেরত এলে আক্ষেপের অনলে পোড়ে মানাং। ম্যাচের আগে যাকে নিয়ে স্বাগতিক দলের ভয় ছিল, সেই ওলাদিপোই জোড়া গোল করে আতঙ্ক ছড়ান আবাহনী শিবিরে। তাকে রুখতে ব্যর্থ হয় আবাহনীর রক্ষণদুর্গ। সমতায় ফেরার পর দলকে রক্ষণাত্মক ধরনে খেলানোর জন্য চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু দলের ডিফেন্স লাইনে পঞ্চম আরেকজনকে মাঠে নামান। সেই সঙ্গে কাউন্টার এ্যাটাক। শেষ পর্যন্ত তার এই কৌশল কাজে লাগে।
×