ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধার এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গাইবান্ধার এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাঁওতালদের ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় অবিলম্বে গাইবান্ধার এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগুন দেয়ার সময় ওই দিন (চাদগাড়ী) এলাকায় যে সকল পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরও প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল চালক হত্যা মামলার আসামি সারোয়ার কামাল লিটনের মৃত্যুদ- বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিম্ন আদালত থেকে দ- পাওয়া অপর আসামি জাহাঙ্গীর আলমের যাবজ্জীবন দ-ও বহাল রেখেছেন আদালত। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছেন। গাইবান্ধার এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল ইসলামকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্রসচিবকে। আর স্বরাষ্ট্র সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, আইজিপি ও রংপুর পুলিশের ডিআইজিকে বাকি পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলো কিনা- সে বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজিকে। মঙ্গলবার হাকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ শহিদুল্লাহ গত ২৯ জানুয়ারি সুপ্রীমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার ৬৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে বলা হয়, ‘সাঁওতালদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগানোর ঘটনার জন্য স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি এবং ওই ঘটনার সময়ে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খরা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য দায়ী। এই আগুন লাগানোর ঘটনার সঙ্গে দুইজন পুলিশ সদস্য ও একজন ডিবি সদস্য সক্রিয়ভাবে জড়িত।’ আরও কিছু পুলিশ সদস্য ওই সময় কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন; তারা আগুন লাগানোয় সক্রিয় অংশগ্রহণ না করলেও তা নেভানোর চেষ্টা করেননি বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। যারা আগুন দিচ্ছিলেন, তাদের মাথায় হেলমেট থাকায় এবং অনেক দূর থেকে ঘটনাটি ভিডিও করায় ওই পুলিশ সদস্যদের চেহারা শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। তাছাড়া মুখ্য বিচারিক হাকিম সেদিন সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের তালিকা চাইলেও পুলিশ সুপার দিতে পারেননি। সাঁওতালদের ঘরে পুলিশের আগুন দেয়ার একটি ভিডিও নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হলে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর এই তদন্তের আদেশ দেয়। উচ্ছেদ অভিযানে ঘরবাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় কারা জড়িত এবং সেখানে পুলিশের কোন সদস্য জড়িত কিনা- তা তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে। মৃত্যুদ- বহাল ॥ ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল চালক হত্যা মামলার আসামি সারোয়ার কামাল লিটনের মৃত্যুদ- বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিম্ন আদালত থেকে দ- পাওয়া অপর আসামি জাহাঙ্গীর আলমের যাবজ্জীবন দ-ও বহাল রেখেছেন আদালত। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমদ। ২০১০ সালের ২৩ মার্চ ময়মনসিংহের ফুলপুরের মোটরসাইকেল চালক আরিফ রব্বানী ফরাজীকে যাত্রী বেশে খুন করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সিদ্দিকুর রহমান ফুলপুর থানায় সারোয়ার কামাল লিটন ও জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামি সারোয়ার কামাল লিটনকে ফাঁসি ও জাহাঙ্গীর আলমকে যাবজ্জীবন দ- দেন। পরে ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছায়। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন আসামিরা।
×