ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়ার মাজারে যাবেন

খালেদা বিএনপির ৭ নবেম্বর কর্মসূচী

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৭ নভেম্বর ২০১৬

খালেদা বিএনপির ৭ নবেম্বর কর্মসূচী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতি বছরের মতো এবারও বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে আজ ৭ নবেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করবে। এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া শেরেবাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড়া দেশব্যাপী বিএনপির সব ইউনিট দিবসটি উপলক্ষে কর্মসূচী পালন করবে। আর অনুমতি পেলে ৮ নবেম্বর মঙ্গলবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। এদিকে প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার কারণে ৭ নবেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচীতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তবে তিনি ৮ নবেম্বর মঙ্গলবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রিজভী অভিযোগ করেন ৭ নবেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ৮ নবেম্বরের সমাবেশের কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে সরকার ন্যক্কারজনক খেলায় মেতে উঠেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুলিশ প্রশাসন যে অজুহাত উত্থাপন করে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি সেটি কারও জানতে বাকি নেই। তারপরও পুলিশের বক্তব্য মেনে নিয়ে আমরা নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এটি নিয়েও পুলিশ প্রশাসনের বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা দেশবাসীকে হতবাক করেছে। রিজভী বলেন, ৮ নবেম্বর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ সফল করতে বিএনপি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন পুরোদমে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আমরা এখনও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি স্বার্থান্ধতা, ঔদ্ধত্য ও অহিঞ্চুতার ছায়াকে প্রলম্বিত না করে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথচলা এগিয়ে নিতে ৮ নবেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে সমাবেশ করার অনুমতি পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বাধ্যবাধকতা থাকবে, মতান্তর, মনান্তর থাকবে, কূটনীতিও থাকতে পারে, কিন্তু তাই বলে শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারকে দমন করলে সেটি কখনোই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সমাজভূমি নির্মাণ করবে না। রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার নিষ্ঠুর যন্ত্রে পরিণত করতে গিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি এখন অলক্ষ্য কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে নিক্ষেপিত হয়েছে। তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠীর হাতিয়ারে পরিণত না হয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে র‌্যাব-পুলিশ ও জনপ্রশাসনের কাজ করা উচিত। বিরোধী দলের প্রতি সরকারের অনড়তা, একগুঁয়েমি ও বৈরিতা সমর্থনকারী অনুগত বাহিনী হিসেবে পরিচিতি লাভ করা থেকে তাদের বেরিয়ে আসা উচিত। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছি সেটা মিডিয়ার সামনেও দেখিয়েছি। তবে পুলিশের বিভ্রান্তিমূলক কথা জনগণকে হতবাক করেছে। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে বিএনপি ৭ নবেম্বর উপলক্ষে কর্মসূচী পালন করছে। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার কারণে সরকার এবারই প্রথম বাধা দিচ্ছে। এখন তো কোন আন্দোলন সংগ্রাম নেই তারপরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে গ্রেফতারের উদ্দেশ্য আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। বিএনপিকে সমাবেশ করতে দিনÑ দুদু ॥ সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন ৮ নবেম্বর বিএনপিকে সমাবেশ করতে দিন। সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে সকল দরজা ও জানালা খুলে দিন। এতে আপনাদের ও দেশের মঙ্গল হবে। তিনি বলেন, এবার আন্দোলন নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা হবে। রবিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জিয়া শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে দুদু বলেন, আপনি বাকশাল না কি আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেন? আওয়ামী লীগকে পছন্দ করলে ৭ নবেম্বরকে মানতে হবে। আর যদি বাকশালে বিশ্বাসী হন তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিন। দেশে মতপ্রকাশ ও সভা-সমাবেশ করার স্বাধীনতা নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যখনই বিএনপি সভা-সমাবেশ করতে চায় তখনই সরকার বাধা দেয়। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
×