ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

মেহেদির রঙে হাত রাঙানোর পালা

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মেহেদির রঙে হাত রাঙানোর পালা

মেহেদি উপমহাদেশের যে কোন উৎসবে মেয়েদের সাজসজ্জার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। আগে এই উপমহাদেশের দেশগুলোয় মেহেদি গাছ থেকে পেড়ে বেটে দেয়ার প্রচলন ছিল। এখনও সে ধারাটি বর্তমান। তবে তার সঙ্গে আধুনিক মেয়েরা টিউব মেহেদি কিনে বিভিন্ন নকশার মাধ্যমে হাতে ও পায়ে মেহেদি লাগান। ফুল ও লতাপাতার এক মনোরম চিত্র তুলে ধরেন তাদের হাতের পাতায়। যেন এক ক্যানভাস। হয়ে ওঠেন আরও কিছুটা মোহনীয়-রূপসী। ঈদের অপরিহার্য অংশ মেহেদি। তরুণীদের হাতে মেহেদির নকশা থাকবে না তাই কী হয়! ঈদের দিন সাজের সঙ্গে হাতের মেহেদির নকশা যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। মেহেদি লাগানোর প্রচলন অনেক আগে থেকেই রয়েছে। ঈদের একদিন আগে হাতে মেহেদি লাগালে মেহেদির রংও থাকে টাটকা। এক সময় গৃহিণীরা পুরো নখে মেহেদি লাগাতেন। সময়ের হাওয়া বদলে এখন অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে। এখন পুরো নখে মেহেদি না লাগিয়ে আঙ্গুলের পাশ দিয়ে মেহেদির নকশা করাই হালের ফ্যাশন। আর নখে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিল রেখে নেলপলিশ দিলে আরও ভাল মানাবে। মেনিকিউর করে আঙ্গুলের ডগায় মেহেদির বিভিন্ন আলপনা করতে পারেন। এতে একটু নতুনত্ব আসবে। মেহেদির লাল রং ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়, পূর্ণতা দেয় ঈদ সাজে। ছোট থেকে বড় সব বয়সের মেয়েদের কাছে কদর রয়েছেন নতুন পোশাকের সঙ্গে হাতে নকশা করা মেহেদি ছোঁয়ার। এক সময় বাটা মেহেদি দিয়ে গোলসহ নানা রকম স্থানীয় নকশায় হাত রাঙাত তরুণীরা। এখন বাজারে টিউব মেহেদি পাওয়া যায়। সহজেই আপনি মেহেদি রঙে হাত রাঙাতে পারেন নানা বৈচিত্র্যময় নকশায়। মেহেদির রং হাতে অনেক দিন পর্যন্ত থাকে। তাই মেহেদির নকশা হতে হবে আকর্ষণীয়। বাড়িতে মেহেদি লাগাতে নকশার সুবিধার জন্য প্রত্যেক টিউবের সঙ্গে ছোট নকশা বই থাকে। সেখানে নানা ধরনের নকশা পাবেন। চাইলে পার্লারে গিয়ে হাতে মেহেদি লাগাতে পারেন। কম সময়ে দারুণ নকশা ফুটে উঠবে আপনার হাতে। ঈদে দুই ধরনের নকশার চলই বেশি। ছোট ছোট অঙ্কনে হাল্কা নকশা চলবে। হাতের এক কোণ থেকে শুরু করে নকশা করতে পারেন আঙ্গুল পর্যন্ত। কেননা হাল্কা নকশা সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। ছোটদের জন্য হাল্কা নকশা বেশ মানানসই। চাইলে আপনি দুই হাত ভরে ঘন নকশায় হাত রাঙাতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিন ধরনের অঙ্কন রয়েছে। ময়ূর, কলকা এবং ফুলেল নকশা। ঘন নকশার সঙ্গে নখের চারপাশে গোল নকশায় মেহেদি লাগাতে পারেন। ঘন নকশা বদলে আপনি ছোট ছোট অঙ্কনে, একই প্যাটার্নে পুরো হাতে মেহেদি লাগাতে পারেন। মাঝারি ধরনের এই নকশা বেশ মানাবে নতুন পোশাকের সঙ্গে। অনেকে নখে গাঢ় রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে,নেইল পলিশের রং যেন মেহেদির নকশাকে ছাপিয়ে না যায়। হাতের পাশাপাশি অনেকে পায়ে মেহেদি লাগাতে পছন্দ করেন। লতা, ফুল এবং অর্ধবৃত্তাকার নকশায় পা রাঙাতে পারেন। মেহেদির রং আরও বেশি লাল করার জন্য মেহেদি ওঠানোর পর ব্যবহার করতে পারেন চিনি ও লেবুর রস। চিনি ও লেবুর রস এক সঙ্গে মিশিয়ে হাতে পায়ে মেখে শুকিয়ে নিতে হবে। রং যেন দ্রুত চলে না যায় কিংবা হাল্কা না হয়, সে জন্য ঈদের আগে পরে কয়েকদিন সাবান এবং পানি কম ব্যবহার করতে হবে। অনেকের এ্যালার্জির সমস্যা থাকে। বাজারের মেহেদি লাগালে হাতে নানা সমস্যা দেখা দেয় ইদানীং। তাই সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের হাতে মেহেদি লাগাতে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। বাজারের বিভিন্ন ধরনের মেহেদি বিক্রি হয়। যেসব মেহেদি আপনার হাতে সমস্যা তৈরি করে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন। ভাল মানের টিউবি মেহেদি ব্যবহার করুন। ঈদের আনন্দে মেহেদির আল্পনার রঙে রাঙিয়ে তুলুন আপনার হাত। মডেল : স্পর্সিয়া ছবি : আরিফ আহমেদ
×