ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দলের প্রতি শুভকামনা বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডারের, চালিয়ে যাবেন ক্লাব ফুটবল

অবসরে শোয়েনস্টেইগার

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩০ জুলাই ২০১৬

অবসরে শোয়েনস্টেইগার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়টা মিশ্রই কাটছে বাস্তিয়েন শোয়েনস্টেইগারের। চলতি মাসেই টেনিস সুন্দরী আনা ইভানোভিচকে বিয়ে করেছেন। তার কিছুদিন আগে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তার দেশ জার্মানি। চোটের কারণে গত কয়েক বছর ধরেই ঠিকমতো খেলতে পারছিলেন না। এসব কারণেই ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন জার্মান অধিনায়ক শোয়েনস্টেইগার। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী শোয়েইনি। অনেকেই বলছেন, বিয়ের পর বউকে বেশি সময় দিতেই অবসর নিলেন জার্মান অধিনায়ক। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন। চোটই তার এ সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করেছে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ফিলিপ লাম অবসর নিলে শোয়েইনিকে ইউরোপের পাওয়ার হাউসদের অধিনায়ক করা হয়। কিন্তু দলনায়ক হওয়ার পর ইনজুরি তার পিছুই ছাড়ছিল না। যে কারণে ইউরোতেও ঠিকমতো মাঠে নামা হয়নি। এসব কারণেই জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তুখোড় এই মিডফিল্ডার। এখন শোয়েনস্টেইগারের প্রধান চ্যালেঞ্জ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজেকে ঠিকমতো মেলে ধরা। কেননা ইতোমধ্যে দলটির কোচ জোশে মরিনহো ইঙ্গিত দিয়েছেন আনফিট ফুটবলারদের তিনি কিছুতেই সুযোগ দেবেন না। যা বয়স হয়েছিল তাতে আরও বেশ কয়েক বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলে যেতে পারতেন শোয়েনস্টেইগার। কিন্তু অনেকটা আচমকাই বিদায় বলে দিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। ২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন শোয়েনস্টেইগার। এ বছর জাতীয় দলের হয়ে ইউরো কাপের শিরোপাটাও জিততে চেয়েছিলেন খুব করে। কিন্তু সেমিফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে জার্মানিকে। অধিনায়ক হিসেবে এই হার কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি শোয়েইনি। তাই শেষ পর্যন্ত বিদায়ই বলে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। নিজের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে শোয়েনস্টেইগার টুইটারে লিখেছেন, ‘জোয়াকিম লো খুব ভালমতোই জানতেন যে, ইউরো কাপের শিরোপাটা আমার কাছে কতটা মূল্যবান ছিল। আমি এটা জিততে চেয়েছিলাম, কারণ ১৯৯৬ সালের পর জার্মানি এই শিরোপা জিততে পারেনি। কিন্তু তেমনটা হয়নি। আর আমাকে এটা মেনে নিতে হবে।’ শোয়েনস্টেইগার আরও বলেন, জাতীয় দল নির্বাচনের সময় আমাকে বিবেচনা না করতে আমি কোচকে জানিয়ে দিয়েছি। কারণ আমি অবসর নিতে চলেছি। আমি আমার ভক্তকুল, দল, জার্মান ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন ও কোচদের ধন্যবাদ জানাই। ১২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে আমি দেশের জন্য খেলার সুযোগ পেয়েছি। এ সময় আমি দারুণ সব মুহূর্ত কাটিয়েছি। জাতীয় দলের হয়ে শোয়েনস্টেইগারের সেরা অর্জন ২০১৪ সালে ব্রাজিলের মারাকানায় বিশ্বাকপ ট্রফি জয়। শিরোপা জয়ের জন্য আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডের বিপক্ষে যেটুকু সামর্থ্য দেয়া প্রয়োজন তার সবই দিয়েছেন তিনি। যার সফল সমাপ্তি ঘটে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে। এ সময় মারিও গোয়েটজের গোলে চতুর্থবারের মতো শিরোপা জয় করে জার্মানি। ওই স্মৃতি স্মরণ করে শোয়েনস্টেইগার বলেন, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ শিরোপা জয় আমাদের জন্য যেমন আবেগময় তেমনি ছিল ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যেটি আমার ক্যারিয়ারে আর আশা করা যায় না। সুতরাং এখনি শেষ করার সঠিক সময়। দল যেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব অতিক্রম করতে পারে সে জন্য শুভকামনা রইলো। সবশেষে আমি আমার ভক্তকুলকে শুধু এ কথাটিই বলতে চাই, আপনাদের জন্য খেলার সুযোগ পাওয়াটা ছিল আমার কাছে সম্মানের বিষয়। আপনাদের সঙ্গে জয়ের যেসব উৎসব করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেজন্য এবং সবকিছুর জন্যই ধন্যবাদ। ২০০৪ সালের জুনে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক ঘটে শোয়েনস্টেইগারের। এবারের হওয়া ইউরোর সেমিফাইনালে জাতীয় দলের হয়ে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এ মিডফিল্ডার। নিজের ১২০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফান্সের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় শোয়েনস্টেইগারের নেতৃত্বাধীন জার্মানরা। জার্মানির হয়ে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র তিনজন ফুটবলার। এরা হলেনÑ লুকাস পোডলস্কি, মিরোসøাভ ক্লোসা ও লোথার ম্যাথিউস।
×