বছর দুয়েক আগে ‘জিন ড্রাইভ’-এর মতো বৈপ্লবিক প্রযুক্তি বিজ্ঞানীরা আয়ত্ত করেন। এর প্রয়োগে
তাত্ত্বিকভাবে প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য বদলে দেয়া বা একটি সম্পূর্ণ প্রজাতির চরিত্র পাল্টে দেয়া সম্ভব। বিষয়টি একই সঙ্গে বিজ্ঞানী মহলে আশা ও আশঙ্কার জন্ম দেয়। ক্ষতিকর প্রাণীর উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে এমন একটি কৌশল উদ্ভাবনের স্বপ্ন বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই দেখে আসছিলেন।
বিভিন্ন কারণে জিন ড্রাইভ বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল। যেমন ম্যালেরিয়া বাহিত মশার কারণে প্রতিবছর আফ্রিকার দেশগুলোতে ৩ লাখের বেশি মানুষ যায়। ইঁদুরের পেটে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ ফসল চলে যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে প্রতিবেশগত ভারসাম্য। এসব দিক বিবেচনা করে ক্ষতিকর প্রাণী বা পতঙ্গের বন্য বৈশিষ্ট্য বদলের উপযোগী জিন উদ্ভাবনের কথা চিন্তা করেন। কোন কোন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এর ফলে পরিবেশের অকল্পনীয় ক্ষতি হতে পারে। এ বিষয়ে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মার্কিন ফেডারেল সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের আবেদন করা হয়েছে। তবে জিন ড্রাইভ সমর্থক গবেষকদের প্রতি এখনও পর্যন্ত সরকারী আনুকূল্য রয়েছে। বুধবার এ ব্যাপারে ফেডারেল শীর্ষ নীতি নির্ধারণী গ্রুপ ন্যাশনাল এ্যাকাডেমিস অব সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড মেডিসিন ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ ও প্রাণী দমনের ক্ষেত্রে জিন ড্রাইভ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ অনুমোদন করেছে। গ্রুপের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, যদিও এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে তবে ‘সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে’ এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। অনেক বিজ্ঞানীই হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, প্রযুক্তিটি প্রয়োগে সামান্যতম ভুলও পরিবেশের বিরাট ক্ষতি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ভা-ারবিল্ট ইউনিভির্সিটির মেডিক্যাল এথিসিস্ট এলিজাবেথ হেইটম্যান বলেন, ‘জিন ড্রাইভ একটি চমৎকার ধারণা, এ নিয়ে সতর্কতার অগ্রসর হতে হবে। এর ফলে মানুষ ও পরিবেশের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা জরুরী।’
প্রাণী ও উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য সুবিধাজনকভাবে বদলে নেয়া নতুন কিছু নয়, যুগ যুগ ধরেই মানুষ সেটি করে আসছে। সরল পদ্ধতিতে পোষা প্রাণী, ফার্মের পশু ও শস্যে বাহ্যিক চরিত্র পাল্টানো হচ্ছে। এরপর এলো জিন এডিটিং পদ্ধতি। এক্ষেত্রে কোন কোন জিনের আংশিক পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ এলো জিন ড্রাইভ। এর মাধ্যমে পুরো একটি প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বদলে যেতে পারে। Ñইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: