ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেজিতে বেড়েছে ৪-৫ টাকা

পাটের বস্তার অজুহাতে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১ মে ২০১৬

পাটের বস্তার অজুহাতে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পাইকারি বাজারে চাল সরবরাহে কোন সঙ্কট না থাকলেও গত এক মাসে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪-৫ টাকা করে। এছাড়া কোন কোন জায়গায় বাজার ও দোকানভেদে চালের দাম এর চেয়েও বেশি নিচ্ছেন দোকানিরা। রাজধানীর বাজারে মিনিকেট চালের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মোট চালের ৬০ ভাগই মিনিকেট। তারপর রয়েছে নাজিরশাইলের অবস্থান। সেটি প্রায় ২০ শতাংশ বাজার দখল করেছে। সপ্তাহ তিনেক আগে ভালমানের মিনিকেট চালের দাম ছিল বস্তাপ্রতি ২১৫০ থেকে ২২০০ টাকা। বর্তমানে তা বস্তাপ্রতি ৫০-১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২৫০-২৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একটু খারাপ মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকায়। দুই মাস আগেও (বছরের শুরুতে) খুচরা বাজারে যে চাল পাওয়া যেত প্রতি কেজি (মিনিকেট) ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা করে, চলতি সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা। খুচরা বাজারে ভালমানের নাজিরশাইল চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৪৮০ থেকে ২৫০০ টাকায়। প্রতি কজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হতো ৫০ টাকায়। বর্তমানে বিআর-২৮ (লতা নামে পরিচিত) ৩৮-৪৫ টাকা, কাটারিভোগ ৬৭-৭০, বাসমতি ৫৮-৬৪, সুগন্ধি চাল ৯০-১০০ টাকা এবং প্যাকেটজাত সুগন্ধি চাল ১০০-১১০ টাকা এবং মোটা চাল ৩০-৩৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছু দোকানে বিআর-২৮ এর দাম ৩৫-৩৬ টাকা ও মোটা চাল ৩০-৩১ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, বাজারে চালের চাহিদা কম থাকলেও মিল মালিকদের দরবৃদ্ধির কারণে দামটা একটু বাড়তি। পাটের বস্তার অজুহাত দেখিয়েও বাড়ানো হয়েছে চালের দাম। তবে বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করায় শীঘ্রই দাম কমতে পারে বলে জানান তারা। চালের দাম বৃদ্ধিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা জড়িত ননÑ এ দাবি করে হাজারীবাগ বাজারের চাল ব্যবসায়ী নয়ন বলেন, রোজা সামনে রেখে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট এক মাসেরও বেশি আগে থেকে পরিকল্পিতভাবে বাজার চড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ রোজা উপলক্ষে দাম বাড়ানো হয়েছেÑ এমনটা যাতে কেউ বলতে না পারেন। চালকল মালিকদের মতে, বাজারে শুধু মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে। কারণ ওই চালের মৌসুম শেষ। বছরে একবার ওই ধান উৎপাদন হয়। বাজারে পুরোপুরিভাবে নতুন ধান আসতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। ওই সময় পর্যন্ত দাম আরও বাড়তে পারে। এছাড়া পাটের বস্তা বাধ্যতামূলক হওয়ায় এমনিতেই প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৭০ টাকা। পাইকারি বাজারে যাই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত এই বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদেরই। জিগাতলার বাসিন্দা আনিসুজ্জামান ভুট্টো জানান, এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম অনেক বেড়েছে। দাম বাড়ার পেছনে পাটের বস্তার অজুহাত দেখাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এতে ৫০ কেজির বস্তায় মাত্র ৭০ টাকা বাড়ার কথা। কিন্তু দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি এর (৭০) দুই থেকে তিন গুণ। তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, চালের বাজারে পাটের বস্তার ব্যবহার অনেক বেড়েছে। রাজধানীর কয়েকটি বাজারের কিছু দোকানে প্লাস্টিকের বস্তা দেখা গেলেও প্রায় ৯০ শতাংশ দোকানেই পাটের তৈরি বস্তায় চাল রাখতে দেখা গেছে।
×