ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালে বিলে হাউড়ি দিতে হাটে দেয়া হয় ঢোল

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

খালে বিলে হাউড়ি দিতে হাটে দেয়া হয় ঢোল

চৈত্র-বৈশাখের তীব্র খরায় উত্তরের নওগাঁ জেলার নদীনালা, খালবিল শুকিয়ে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। যে নদীর বুকে কি চৈত্র কি আষাঢ় বর্ষা ও শুকনো সব মৌসুমেই ছিল পানির ছলাৎ ছলাৎ, সে সময় এ নদীর বুকে চলেছে লঞ্চ, স্টিমার ও বড় বড় পাল তোলা কোষা নৌকা। এছাড়া হাজার হাজার মণ কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহার হয়েছে নদীর পানি। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই খরস্রোতা নদী এখন শুকিয়ে খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। এক সময় এই নদী আর খালবিলে মিলেছে নানা জাতের দেশী মাছ। কৈ, শৌল, মাগুর, শিং, বোয়াল, টেংরা, পুঁটি, আজলা (ভেদা), শ্যারন, রুই, কাতল, ফলি, বাইন, গুচি, টাকিসহ নানা প্রজাতির মাছ। নদীনালা, খালবিল, পুকুর-ডোবায় শুধু মাছ আর মাছ। কিন্তু এসব দেশী মাছের স্বাদ তেমন আর মেলে না এখন। নদীনালা, খালবিলে শুধু পানির অভাবে এসব দেশী মাছের আবাস বিলুপ্ত প্রায়। এক সময় যেখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সবাই মাছ শিকারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এখন সেখানে শিশু-কিশোররা ক্রিকেট খেলছে। কোথাওবা নদীর বুকে নৌকার পরিবর্তে চলছে গরুগাড়ি। আবার কোথাও গৃহবধূরা ধান শুকাচ্ছে নদীর বুকে। এখন চৈত্র মাস না আসতেই শুকিয়ে যায় নদী। এ জন্য এখন কোথাও খেলার মাঠ, কোথাও ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে নদীনালা, খালবিল। নওগাঁ শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে তুলশীগঙ্গা নদী। বর্ষার খরস্রোতা নদীতে চলেছে মালবাহী নৌকা। চৈত্র-বৈশাখে নদীর পানি কমে যেত। আর সে সময় এলাকার মানুষ দলবদ্ধ হয়ে পলোই, চাবিজাল, তৌরা জাল, ঠেলাজাল, টেঁটা এমনকি হাত দিয়ে হাতরে মাছ ধরেছে এই নদীতে। একইভাবে হাউড়ি দিয়ে মাছ ধরেছে দীঘলীর বিল, গুটার বিল, মনসুর বিল, বিল আন্দারকোটা, জবই বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে। কবে-কোন বিল বা নদীতে হাউড়ি দিয়ে মাছ ধরা হবে তা আগেই ঢোল-সহরত দেয়া হয়। Ñবিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ থেকে
×