ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাসুদ মুস্তাফিজ

বিশ্বায়নে বাংলা নববর্ষ ও গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ

প্রকাশিত: ০৪:০১, ১৪ এপ্রিল ২০১৬

বিশ্বায়নে বাংলা নববর্ষ ও গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ

মানুষের আত্মপরিচয়ের বিধৃত রূপই হচ্ছে সংস্কৃতি। এ পরিচয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত তার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জীবনযাত্রা। বিরূপ প্রকৃতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, সেই প্রকৃতিকে জয় করে প্রতিনিয়ত তার জীবনোপায়কে সহজ ও সুন্দর করার সাধনাই নিশ্চয়ই মানব জীবনের লক্ষ্য। জীবনের এই প্রয়াস, জীবনকে সহজ ও সুন্দর করার জন্য বিরূপ পরিপার্শ্বের বিরুদ্ধে মানুষের এই সংগ্রাম- এরই নাম সংস্কৃতি। যে কারণে সংস্কৃতির অর্থ দাঁড়ায় সুন্দরভাবে, বিচিত্রভাবে বাঁচা। সংগ্রাম আর সংস্কৃতি অভিন্ন বলেই বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদী দৃষ্টিতে সংস্কৃতির অবয়বে তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে- ১. জীবন সংগ্রামের বাস্তব উপকরণ, ২. সমাজ যাত্রার বাস্তবব্যবস্থা ও ৩. মানবসম্পদ তৃতীয়ভাবে অর্থাৎ মানবসম্পদ স্বরূপ আচার ব্যবহার, ধ্যান-ধারণা, সাহিত্য, সংগীত, কলা ও ঐতিহ্যের লালন প্রচলিত অর্থে সংস্কৃতি। বিশ্বায়নের প্রভাবে আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য কী বিপন্ন- এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। বিশ্বায়ন পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে গতিময় করেছে। এই অভিযোগ অমূলক নয়। আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ কোন কিছুই বিশ্বায়নের প্রভাবমুক্ত নয়। এই সবকিছুই সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক অচ্ছেদ্য। তাই আমাদের সংস্কৃতিও বিশ্বায়নে প্রভাবিত। নদীপাড়ের যেদিক সহজ, সেদিকে জলস্রোতের ভার বেশি। সেদিকেই নদী ভেঙে ভেঙে বাঁক নিতে থাকে। আমাদের সাংস্কৃতিক গতিপথের অভিমুখও বাঁক নিচ্ছে পরিপার্শ্বের প্রভাবে। লক্ষণীয় যে, বাঙালীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কখনও ভেঙ্গে পড়ার নয় বরং প্রতিনিয়ত গড়ে ওঠার। সংস্কৃতির কোন ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। এই চলমানতা থাকবেই। আমরা কী গ্রহণ করব, কী বর্জন করব কিংবা কী প্রদান করব, তা অনেকাংশে নির্ভর করে আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের ভিত্তির ওপরে। প্রাচ্য ও প্রাতীচ্যের সুষম মিলন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন- ‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিয়ে যাবে না ফিরে।’ সংস্কৃতি এখন পণ্য ভোগবাদের শিকার। পণ্যায়নের আগ্রাসন থেকে মুক্ত নয় খোদ বাঙলা নববর্ষও। বছরে এক দিন পান্তা-ইলিশের আস্বাদনের মধ্যেই অনেকের নববর্ষপ্রীতি সীমাবদ্ধ। লোকায়ত গ্রামীণ সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে শহুরে নাগরিক সংস্কৃতির মধ্যে বাঙলা নববর্ষকে আটকে রেখে নববর্ষের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। একদিকে সীমাহীন ভোগবাদ অন্যদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন জঙ্গীবাদ- এ দুই-ই বাঙালী সংস্কৃতির খাঁটিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও আমরা আশাবাদের বিভিন্ন শক্তির পূর্বাভাস পাই আজকের বাঙলা নববর্ষে অফুরন্ত প্রাণ-প্রাচুর্যের সমাবেশে। দেশে বিভিন্ন উৎসব মেলা সংখ্যার জরিপে দেখা যায় আমাদের দেশে সর্বমোট ১০০৫টি মেলা হয়। এর মধ্যে জেলা হিসেবে ১৪১টি এবং তার পরে বৈশাখ মাসে ২০০টির স্থান। তবে কি বাঙালী জীবনে প্রকৃতির এই প্রচ- বেগের কালবৈশাখীর তীব্র দাবদাহ চৈত্র মধুমাস শেষে এই তাণ্ডবলীলা কখনও ধ্বংসের নয়, তাহলে চারিদিকের এই রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় তা-বের মাঝে কোন উজ্জ্বল প্রাণবন্ত উৎসবের প্রতীক হয়ে পরিপূর্ণ একটি সত্তাকে আগামীতে উদ্ভাসিত হয়ে দেখা দেবে এবং আমরা প্রচ-ভাবে আশাবাদী এই সময়ে কালবৈশাখী, চৈত্র সংক্রান্তি আর প্রাণস্পর্শী পহেলা বৈশাখ সেই রূপেই প্রাকৃতিক শক্তিতে আবির্ভূত হবে? আমাদের জীবনে যেমন করে সবাইকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদ দিবস একটি স্বকীয় ও অবিচ্ছেদ্য বেগবান দেশপ্রেমকে, ভাষাকে ও ঐতিহ্যকে উজ্জীবিত করে তেমনি সার্বিকভাবে পহেলা বৈশাখও এই একই অনুভবকে আরও প্রতিবছর পুনরুজ্জীবিত করে এবং হয়ত গভীরভাবে খুঁজলে এই উৎসব পালন বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি প্রচ্ছন্ন ভর্ৎসনাও দেয় বলে মনে হয়। শুধু নববর্ষ এলেই আমাদের মধ্যে প্রগাঢ় ভাবনার উদয় হয় আর ভাবতে শুরু করি- বাঙালীর নববর্ষ আসলে বাঙালীর চৌকাঠে কতটা আপন হয়ে আসে। মানে, কতটা তা উৎসবের, কতটা তা উদযাপনের, আর কতটাই বা তার চর্চার। নববর্ষ উদযাপনের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয় রমনার বটমূলে, ছায়ানটের উদ্যোগে। এই বটমূলের অনুষ্ঠানেই ভয়ানকভাবে মৌলবাদীরা হামলা চালিয়েছিল। বাংলাদেশে বহু সংগঠন প্রতিষ্ঠান এর উদ্যোগে এখন নববর্ষ উদ্যাপন হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে। যদি মনে করি ভয়াবহ মৌলবাদের হামলা শুধু ছায়ানটের নয় বাঙলা সংস্কৃতির এবং বাঙালীর ওপর। আমরা জানি ব্যক্তি চিন্তার ধারায় সিক্ত হবার মতো একটি জায়গা থাকতে হবে। তা না থাকলেই বিপদ। কেননা মৌলবাদের চাষ হয় প্রথমে ব্যক্তির মধ্যে, ব্যক্তি থেকে একটি সংগঠনের মাধ্যমে তা ছড়ায় বিষবাষ্পের মতো সমস্ত সমাজে। সুতরাং আলোকিত যে দর্শন, যে দর্শন আমার চেতনার তারও চর্চা হতে হবে ব্যক্তির মননে। পরে তা সংগঠনের হাতে ধরল কি ধরল না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং ব্যক্তি সেই চর্চাটা প্রতিদিন করছে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়। নববর্ষ কিংবা আমাদের জাতীয় উৎসবগুলো যে দর্শন, তা নিয়ে আলোচনা করে না। আমাদের সংগঠনগুলো ব্যস্ত থাকে মেলার পসরত সাজাতে আর বাহারি পোশাকের নজর আকর্ষণের। কারণ ওতো সময় নেই তাদের, আর তাদের থাকে নানা কর্মসূচী। কিন্তু ব্যক্তি এখানে গভীরে প্রবেশ করতে পারে। তার পক্ষেই সম্ভব এর মাধ্যমে একটি চেতনাগত পরিবর্তন আনার, প্রথমে নিজের এবং পরে অন্যের। সংগঠনকে নানা হিসাব কষতে হয় ব্যক্তির হিসাব কষতে হয় না। যেমন ধরা যাক, রমনার বটমূলের বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের কেন স্মরণ করা হয় না, তার একটি ব্যাখ্যা হয়ত ছায়ানট দিতে পারবে কিন্তু সে ব্যাখ্যাটা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা আমাদের কাছে, এমন কী ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত অনেকরই। কিন্তু আমরা মনে করি এই দিনটিকে তাদের স্মরণ করতে হবে- মৌলবাদকে মনে করে দিতে হবে- তোমরা যে হিংস্রতা আমি তা মনে রেখেছি, আমি তার জবাব দেবার জন্যই এসেছি রমনার বটমূলে। প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হবে মৌলবাদের দর্শনের সঙ্গে। প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হবে চেতনা আর চিন্তার ক্ষুরধারা দিয়ে। যতক্ষণ না তা না হবে ততক্ষণ কেউ না কেউ লিখবে- আমাদের মেমোরিটা আসলে গোল্ডফিস মেমোরি! বাঙলা নববর্ষই হচ্ছে বাঙালীর জাতীয় উৎসব। পুরানো এবং নতুন বছরের নতুন ঋণের সঞ্জীবনির আবির্ভাবের দিন নববর্ষের প্রথম দিনটি। নতুন বছরের প্রথম দিনটি, বাঙালী তথা পৃথিবীর মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য এক সময় রোমান ক্যাথলিকরা ‘কানিভ্যাল’ পালন করত। এখন বিশ্বের অনেক জায়গায় এ উৎযাপন লক্ষ্য করা যায়। মনে রাখতে হবে বাঙালী ‘কানিভ্যাল’ নেই কিন্তু পহেলা বৈশাখ আছে। এর উল্লেখযোগ্যতা এখানেই যে, পৃথিবীর আর কোন জাতির পহেলা বৈশাখ নেই, আছে বাঙালীর স্বকীয় সংস্কৃতি সমৃদ্ধ ঐতিহ্যে লালিত জাতীয় উৎসব বাঙালীর গর্ব বাঙলা নববর্ষ। বৈশাখকে তাৎপর্যময় করে তোলবার অনেক উপায় হতে পারে এই সাংস্কৃতিক আয়োজনের সঙ্গে ইতিহাসবোধ যুক্ত করা। বৈশাখ নিছক কোন আনুষ্ঠানিকতা নয়, তার অতিরেক তাৎপর্য এখানে নিহিত, সেই প্রমাণ আমরা পাই নববর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিক দিকের ক্রমপ্রসারে। এর বিস্তৃতি প্রমাণ করে যে, সমাজের অভ্যন্তরে নিজস্বতা ও সাংস্কৃতিক সত্তা খুঁজে ফেরা ও তা প্রকাশের তাগিদ প্রবলভাবে বিদ্যমান রয়েছে। এই তাগিদকে গভীরতা যোগাতে প্রয়োজন বহুমুখী সৃজনী কর্মকা-। এর একটি দিক হতে পারে বৈশাখ উৎসবকে ঘিরে আঞ্চলিক ইতিহাস অনুসন্ধান ও পর্যালোচনার বিবিধ কর্মকা- সূচনা করা। গ্রাম ও নগর সংস্কৃতির ইতিবাচক যোগসূত্র ঘোটাতে হবে বৈশাখী উৎসবকে ঘিরে। আমরা নিজেদের যত নিবিড়ভাবে চিনতে ও জানতে পারব, আত্মসত্তা উপলব্ধি তত বাড়বে এবং ততই আমরা আবিষ্কার করব নিজেদের ভেতরকার শক্তি। বর্ষবরণের বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় চমক হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষোদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারে প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘জাগ্রত করো, উদ্যত করো, নির্ভয় করো হে’ প্রতি বছর এক একটি বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে নানা মূর্তি ও মুখোশ নিয়ে শুরু হয় শোভাযাত্রা। মূলত মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালীর মঙ্গল সাধনার অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে পহেলা বৈশাখ। যা অসুস্থ নাগরিক জীবনে এ শোভাযাত্রা মানুষকে কৌতূহলোদ্দীপক করে, অন্তত সামান্য হলেও আচমকা আন্দোলিত করে। পরিশেষে এ কথাই বলা চলে বাঙালীর উৎসবে সর্বজনীনতার ছোঁয়া কেবল, কাল, সীমানা অতিক্রম করে সভ্যতা, সংস্কৃতি কিংবা ধর্মীয় চেতনার বিস্তার লাভের মধ্যে সংহত হয়ে নেই। শত শত বছর ধরে তার রাষ্ট্রীয় এবং অর্থনৈতিক জীবনের ওপরে সর্ব ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মের শ্রোত সবেগে প্রবাহিত হয়েছিল বলেই বাঙালীর জীবনের স্তরে স্তরে সর্বজনীনতার স্পর্শ লেগে আছে। আদি অস্ট্রেলিয়ানদের কৃষি সভ্যতার মন্থর জীবনে বাঙালার বিভিন্ন আদিতম কৌম সমাজ, জৈন, বৌদ্ধ, ব্রাহ্মণ, বৈষ্ণধর্মের তরঙ্গ অভিঘাতের সঙ্গে বিদেশী ধর্ম ( ইসলাম, খৃস্ট ও সৌরধর্ম), সংস্কার ও সংস্কৃতির বিবর্তন কেবল বাঙালীর বাইরে জীবনেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেনি। বাঙালীর মননের গভীরে প্রবেশ করে তার চেতনায় ফেলেছিল সর্বজনীনতার ছোঁয়া। সে জন্যই বাঙালীর আধ্যাত্মিক সাধনার ক্ষেত্র, তার বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীর নানা সামাজিক উৎসবে মধ্যে বৈচিত্র্যের এমন ছড়াছড়ি। শাক্ত, শৈব, জৈন, নাথ, বৌদ্ধ, বৈষ্ণব, ইসলাম, সৌর (ইরান থেকে আগত ধর্ম), আউলÑবাউল, সুফি নানা ধর্ম মতে সাধনার অবারিত দুয়ার উদারভাবে খোলা। আর এই অবারিত খোলা দুয়ার দিয়ে বিচিত্র সংস্কার, সংস্কৃতির পথে বাঙালীর মননে শুরু হয়েছিল গণতান্ত্রিক চেতনার অনুপ্রবেশ। আর এটাই মূলত তার ধর্মীয় আর বস্তুতান্ত্রিক সামাজিক উৎসবেও ছড়িয়ে দিয়েছে অপ্রতিরোধ্য সর্বজনীনতা। সেখানে তার মন, মনন, দেহ সবই সর্বজনীনতার অপরিহার্য সূত্রে গাঁথা। বাঙালীর উৎসবগুলো কী এবং কোথায় এবং কীভাবে তাদের উৎসবে সর্বজনীনতা প্রকাশিত হয় সে সম্পর্কে আলোচনা খুব বেশি প্রয়োজন মনে করছি না তবে জিজ্ঞাসাটা প্রাসঙ্গিক বলে মনে করি। বাঙালীর জন্মরহস্যের বৈচিত্র্যের মতো তার ভাষা ও ক্রমবিবর্তিত সাংস্কৃতিক ইতিহাসেও বিবিধ বিচিত্রতা। বিজ্ঞানসম্মত ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, বাঙালীর সহস্র বছরের বাস্তব সভ্যতার আর মানসিক সংস্কৃতির মূলে আর্য-অনার্য সামাজির সংস্কৃতির সঙ্গে বৈদিক ধর্ম এবং তার হোমযজ্ঞাদি অনুষ্ঠানের যেমন প্রভাব, তেমনি বাংলার আদিমতম বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকাচার ও লোকধর্মের প্রভাবও বিস্তীর্ণ। এই লোকজ অনুষ্ঠান আমাদের মূল শেকড়ের সন্ধান দিয়ে যায়, সেখানে রয়েছে আমাদের আসল পরিচয়। দেশ ও জাতি গড়তে এই পরিচয়ই নবজাগরণে উদ্বুদ্ধ করে সমৃদ্ধি বাতাবরণ করতে পারবে বলেই আশা করা যায়। সুতরাং লোকজ অনুষ্ঠানকে লালন-পালন করতে হবে প্রাণের ছোঁয়ায় এবং মিলন মেলার আপন রুরে গেঁথে দিতে হবে হৃদয়ের একান্ত স্পন্দনে। এই প্রত্যাশা সকলের জন্য শুভ দিনের সূচনা করবে আর সরিয়ে দেবে সকল গ্লানি ব্যার্থতা, শুরু হবে দিনবদলের পালা। আমরা আরও বিশ্বাস করি পহেলা বৈশাখের মঙ্গলশোভাযাত্রা ও রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠানসহ দেশের সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে উচ্চারিত হবে বাঙালী জাতিসত্তার বিকাশ এবং অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ।
×