ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রংপুরে বোন হত্যার দায়ে ভাইসহ পাঁচ জনের ফাঁসি

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থী সুপন হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১০ মার্চ ২০১৬

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থী সুপন হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চারটি হত্যা মামলার পৃথক রায়ে বুধবার সংশ্লিষ্ট আদালত ১৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থী সুপন হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, রংপুরে বোন হত্যার দায়ে ভাইসহ ৫ জনের ফাঁসি এবং নাটোরে শিশু হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড এবং গাজীপুরে হত্যা মামলায় অপর এক আসামিরকে ফাঁসির দ- দেয়া হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। জানা গেছে, চট্টগ্রামে হিমেল দাশ সুপন (১৬) নামে এক পরীক্ষার্থীকে হত্যার দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। বুধবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সেলিম মিয়া এ রায় দেন। একই রায়ে আদালত আসামিদের যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে দ- দিয়েছে। দ-প্রাপ্ত ছয় আসামি হলো হিমেলের দূর সম্পর্কের চাচা সুনীল দাশ, মাহমুদুল ইসলাম ও তার ভাই নজরুল ইসলাম ওরফে লাল মিয়া, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মোঃ হোসেন ওরফে সাগর এবং মোঃ সেলিম। এদের মধ্যে সুনীল দাশ, মাহমুদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম এবং মিজানুর রহমান কারাগারে অন্তরীণ। বাকি দুইজন পলাতক। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি এ্যাডভোকেট এমএ নাসের জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ৮ মে এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণার চারদিন আগে নিখোঁজ হয় চট্টগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিমেল দাশ সুপন। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মাহমুদুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই নজরুল ইসলামের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে গিয়ে অপহৃত হয় হিমেল। ১৩ মে হিমেলের মা পাপিয়া সেন বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে যা মামলায় রূপান্তর হয়। ১৪ মে বান্দরবানের দুর্গম নাগাঝিরি পাহাড় থেকে নগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশ হিমেলের লাশ উদ্ধার করে। রংপুর ॥ বোনকে হত্যার দায়ে ভাইসহ প্রতিবেশী ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে স্থানীয় একটি আদালত। বুধবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের-২ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন। জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার পাহাড় কুমার পুকুর এলাকার আব্দুল মজিদের ভাতিজি নাসিমা বেগমের স্বামী গোলাপ মিয়া খুন হয় ২০০৬ সালের শুরুর দিকে। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিল একই এলাকার মমিনুল ইসলাম (৩৫), আরিফুল ইসলাম (৩০), এমদাদুল হক (১৮) ও আনোয়ারুল ইসলাম। ওই মামলাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যেতে আসামিরা একই এলাকার আব্দুল মজিদের সঙ্গে দু’লাখ টাকায় চুক্তি করে তার ছোট বোন ভিক্ষুক আনজিরা বেগমকে (৩০) হত্যা করে। আসামিদের পরিকল্পনা ছিল আনজিরাকে খুন করে খুনের দায় গোলাপ মিয়া হত্যা মামলার বাদীর ওপর চাপিয়ে দেয়া। এই পরিকল্পনা নিয়ে ২০০৬ সালের ৯ মার্চ রাতে আব্দুল মজিদ তার ছোট বোন আনজিরাকে বাসা থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। পরদিন সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে এ ঘটনায় আনজিরার আরেক বড় ভাই আব্দুল বাকী বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে তারা আব্দুল মজিদকে গ্রেফতার করে এবং আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে সে তাদের সেই পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে। নাটোর ॥ লালপুরে শিশু মোসাদ্দিকা খাতুন মুক্তি (৬) হত্যার দায়ে সাহারুল ইসলাম নামে একজনের মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। বুধবার বেলা দেড়টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ আদেশ দেন। ২০০৭ সালের ৬ নবেম্বর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মুকরুম আলীর মেয়ে মোসাদ্দিকা খাতুন মুক্তিকে পুকুর থেকে শালুক উঠিয়ে দেয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় একই গ্রামের আক্কেল আলীর ছেলে সাহারুল। পরে মুক্তির কানে থাকা স্বর্ণের দুল কেড়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে লাশ ঘরের ভিতর গর্ত করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। মুক্তির বাবা মুকরুম আলী বাদী হয়ে তিনজনের নামে লালপুর থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে, সাহারুলের পিতা আক্কেল আলী এবং মা পারুল বেগম। তবে সাহারুলের পিতা মৃত্যুবরণ করায় এ মামলা থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়। গাজীপুর ॥ টঙ্গীর নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার রায়ে এক জনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতুদ- কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। দ-প্রাপ্ত আসামি হলো টঙ্গীর পাগাড় ঝিনু মার্কেট এলাকার মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে রমজান ওরফে মকবুল কসাই। রায় ঘোষণাকালে আসামি রমজান আদালতে উপস্থিত ছিল। গত ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নুরুল ইসলাম টঙ্গীর ঝিনু মার্কেট এলাকায় কাঁচাবাজার করতে গেলে মকবুল কসাই পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নুরুল ইসলামকে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের ছেলে নুরুল আলম বাদী হয়ে রমজান আলীর বিরুদ্ধে টঙ্গী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
×