ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানদের জয়ে সিলেট পর্বের সমাপ্তি

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আফগানদের জয়ে সিলেট পর্বের সমাপ্তি

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ আইসিসি অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের খেলায় আফগানদের জয়ের মাধ্যমে সিলেট পর্বের সমাপ্তি ঘটল। ‘বি’ গ্রুপের সিলেটের দুটি ভেন্যু সিলেট জেলা স্টেডিয়াম ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোট ৫ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি থেকে সিলেট পর্বেও সূচনা হয়। সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের নিয়ম রক্ষার ম্যাচে কানাডাকে ১৫৫ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি কানাডা। মাত্র ১৪৭ রানে অলআউট হয় তারা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল সিলেটের আকাশ। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে থেকেই স্টেডিয়ামে জ্বলে উঠে কৃত্রিম আলো। মাঠে চারপাশ যখন কৃত্রিম আলোয় আলোকিত তখন দলকে অন্ধকারে ডুবালেন কানাডার দলপতি আবরাশ খান। শীতের কনকনে ঠা-া পরিবেশে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তার সিদ্ধান্ত যে বিরাট বড় ভুল ছিল তার প্রমাণ করতে দলের ১৩ রান তুলতেই অধিনায়ককে ৩ ‘শূন্য’ রানের ইনিংস উপহার দেন দলের তিন ব্যাটসম্যান সিভিয়া, টাপলু ও গিলি। আফগান বোলারদের ইনসুইং ও আউটসুইংয়ে তখন দিশেহারা কানাডীয়া ব্যাটসম্যানেরা। ১৯ বলে ১৩ রান করে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে তুলতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়েন আদিত্ত। তাকে ফিরান শামসুর রহমান। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৬২ রান যোগ করেন অধিনায়ক আবরাশ খান ও আর্সলান খান। দলীয় ৯৩ রানে আর্সলান খান ৩৮ রান করে রাশিদের বলে ওয়াহিদ উল্লাহ হাতে ক্যাচ দিলে দলের হয়ে সর্ব্বোচ রানের জুটিটি ভাঙ্গে। শেষ দিকে হার্স টাকের ১৩ রান ও রামদাথ ২০ রানে করলেও দলের সংগ্রহ বড় করতে পারেননি। ১৪৭ রানে থামে কানাডার ইনিংস। আফগানদের হয়ে মুসলিম মুসা ৩১ রানে ৩, শামসুর রহমান ২১ রানে ৩, রাশিদ খান ২০ রানে ২ ও তারিক ১২ রানে ১টি উইকেট লাভ করেন। ১৪৮ রানের ছোট্ট জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ঝড়ো সূচনা করে আফগানদের দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৬.২ অভারে ৪৬ রান সংগ্রহ করে তারা। ২৪ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ের মারের সাহায্যে ২৯ রান করে করিম জান্নাত সারোক প্যাটেলের বলে রামদাথের শিকার হন। আফগানদের রানের চাকায় লাগাম ধরাতে পারেনি কানাডার বোলারেরা। স্কোর বোর্ডে ১০ ওভারে ৬৫ রান জমা হয় তাদের। তবে দলীয় ৬৯ রানে সারোক প্যাটেলের দ্বিতীয় শিকার হন অপর ওপেনার ইসানুল্লাহ (৩১)। তারিক স্থানিকজাই ক্রিজে নেমে রানের চাকাকে আরও বাড়িয়ে নেন। ১৫.২ অভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে আফগানরা। তারিক মাত্র ৪৫ মিনিটে ৩৯ বলে ৯ চার ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তবে ফিফটি পূর্ণ করে আর মাত্র ৬ রান যোগ করে মিরাজ প্যাটেলের বলে সাজঘরে ফিরেন। শেষ দিকে ইকরাম ফাইজির ১১ রান ও মালাকজাইয়ের ১৪ রানের ওপর ভর করে ৪ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। কানাডার হয়ে সারোক প্যাটেলে ১৭ রানে ৩, মিরাজ প্যাটেল ৩১ রানে ২ ও রামদাথ ২৬ রানে ১ উইকেট লাভ করেন । উল্লেখ্য, নিজেদের প্রথম ম্যাচে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা কাছে ১৯৬ রানের বিশাল হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় কানাডার। ম্যাচে বলার মতো কোন প্রতিরোধ গড়তে পারেনি তারা। বোলাররা রান দিয়েছেন ইচ্ছে মতো। শ্রীলঙ্কার দেয়া ৩১৫ রানের পাহাড়সম রানের চাপায় পিষ্ট হয় কানাডা। দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের হার কানাডার কাপপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত করে। অন্যদিকে, কানাডার মতো একই চিত্র আফগানদের। প্রথম ম্যাচে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯৮ রানে ৪ উইকেট থেকে ১২৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা তাদের। দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ১৮৪ রানে অলআউট করেও ৩৩ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় আফগানদের। এই হার তাদের ‘বি’ গ্রুপ থেকে বিদায় নিশ্চিত করে।
×